২০১৫ সালে এখন পর্যন্ত মুক্তি পেয়েছে মোট ৫৮টি ছবি। বছর শেষ হওয়ার আগে আরও তিন-চারটি মুক্তি পাওয়ার কথা। ঢালিউডে মুক্তিপ্রাপ্ত এসব ছবির তারকা ও এগুলোর প্রবণতা, সাফল্য-ব্যর্থতার নিরিখে তৈরি করা হয়েছে কয়েকটি প্রতিবেদন। বাংলানিউজের বিনোদন বিভাগে ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হবে এগুলো। আজ রয়েছে সপ্তম কিস্তি।
মৌসুমী
পুরনো জনপ্রিয় নায়িকাদের মধ্যে মৌসুমী এখনও নিয়মিত কাজ করছেন। তবে সংখ্যায় কম। বেছে বেছে কাজ করার কারণে বছরে একটি বা দুটি ছবি মুক্তি পায় তার। সেই ধারাবাহিকতায় ২০১৫ সালে মৌসুমী অভিনীত মুক্তিপ্রাপ্ত ছবির সংখ্যা একটি। কিন্তু এতে তার উপস্থিতি নায়িকা হিসেবে নয়। অভিনয় করেছেন নায়কের বোনের ‘ছোট্ট’ ও ‘অমিমাংসিত’ এক চরিত্রে। এ কারণে ‘আশিকী’ নামের ছবিটি দেখে মৌসুমীর অনেক ভক্ত বিরক্তি প্রকাশ করেছেন। বিষয়টি নিয়ে তিনি নিজেও এ বছর মৌসুমীকে কয়েকটি নাটক ও টেলিছবিতে পাওয়া গেছে। খবরের শিরোনামে এসেছেন সেগুলোকে ঘিরেই। চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন নতুন ছবিতেও। ব্যস্তও ছিলেন দৃশ্যধারণের কাজে। বছরের শেষ দিকে এসে প্রথমবারের মতো নিজের ছেলের (ফারদিন এহসান স্বাধীন) টেলিছবি ‘ডেস্টিনেশন ২’-এর জন্য ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারজয়ী এই নায়িকা। বছরটি তার জন্য ‘মোটামুটি’ গেলেও, ২০১৬ সালে ‘নায়িকা’ হয়ে রূপালি পর্দায় ফিরবেন মৌসুমী- এমনটাই প্রত্যাশা করছেন তার ভক্ত-অনুরাগীরা।
জান্নাতুল পিয়া
‘চোরাবালি’ ছবি দিয়ে রূপালি পর্দায় বেশ ভালোভাবে ‘এন্ট্রি’ নিয়েছিলেন জান্নাতুল পিয়া। র্যাম্প থেকে সেলুলয়েডে এসে সম্ভাবনাও তৈরি করেছিলেন। এরপর কেটে গেছে অনেকদিন। তার দ্বিতীয় ছবিটি মুক্তি পেলো এ বছর। ‘স্টোরি অব দ্য সামারা’ তেমন জমেনি। ভিনগ্রহের গল্প বলতে চেয়েছিলেন পরিচালক রিকিয়া মাসুদো। ছবিটি আবেদন তৈরি করতে পারেনি। যে কারণে এর শিল্পীরাও আসতে পারেননি আলোচনায়। এটি পিয়ার ছবির সংখ্যা ভারি করা ছাড়া আর কোনো কাজেই আসেনি!
পিয়ার তৃতীয় ছবিটি মুক্তি পেয়েছে ক’দিন আগে। অপূর্বর সঙ্গে ‘গ্যাংস্টার রিটার্নস’ করে আলোচনার টেবিলে ফিরেছেন জনপ্রিয় এই মডেল। সামারার দু:খ কিছুটা হলেও ঘুচেছে গ্যাংস্টারের প্রেমিকার! পিয়ার এ ছবিটি গড়পড়তা ব্যবসা করলেও অনেকের দৃষ্টি কেড়েছে। সব মিলিয়ে ২০১৫ পিয়ার জন্য মন্দ বছর নয় নিশ্চয়ই!
মৌসুমী নাগ
টিভি নাটকের জনপ্রিয় মুখ মৌসুমী নাগের জন্য এ বছরটি উল্লেখযোগ্য। তিনি যে মা হয়েছেন! স্বামী অভিনেতা শোয়েব আর নবজাতককে নিয়ে সুখেই আছেন তিনি। তাদের সন্তানও দেখেছে পৃথিবীর আলো। এরপর মুক্তি পায় তার প্রথম চলচ্চিত্র ‘রানআউট’। ছবিটি নিয়ে ইতিবাচক সমালোচনা হয়েছে বেশি। বছরের উল্লেখযোগ্য ছবির তালিকায় রয়েছে এটি। অন্যদিকে অভিনয়শৈলী দিয়ে মৌসুমী নাগ জয় করেছেন দর্শকহৃদয়। গল্প-নির্মাণ-গান নিয়েও ইতিবাচক ছিলো এটি। বাণিজ্যিক ঘরানার ছবিটির মাধ্যমে নির্মাতাদের মনে নতুন ভাবনা যোগাতে পেরেছেন মৌসুমী- এটাই কম প্রাপ্তি কীসে!
অন্যদিকে আরেকটি সামাজিক মূল্যবোধের গল্পের ছবিতে পাওয়া গেছে আলোচিত এই নায়িকাকে। শাহরিয়ার নাজিম জয়ের ছবি ‘প্রার্থনা’য়ও তিনি হাজির হয়েছেন দারুণ অভিনয়শৈলী নিয়ে। এতে মৌসুমীর ঠোঁটে ‘তোমায় ছাড়া আমি বাঁচবো না’ গানটি প্রশংসিত হয়েছে। সব মিলিয়ে ২০১৫ সাল মৌসুমী নাগের জন্য ছিলো সোনায় সোহাগা।
আলিশা প্রধান
আলিশা প্রধানের বড়পর্দায় ‘পূর্ণাঙ্গ’ অভিষেক হলো প্রয়াত চাষী নজরুল ইসলামের হাত ধরে। এটাই তার সেরা প্রাপ্তি। শাহীন কবির টুটুলের ‘এই তো ভালোবাসা’য় কয়েক মুহূর্তের জন্য হাজির হয়েছিলেন আলিশা। এবার চাষীর শেষ ছবি ‘অন্তরঙ্গ’র মাধ্যমে তিনি ছিলেন প্রচারের আলোয়। তবে এটি মুক্তি পাওয়ার পর তেমন উচ্ছ্বাস দেখা গেলো না কারও মধ্যে।
ইমন-আলিশা জুটির ছবিটি দর্শক টানতে পারেনি। মন্দা বাজারে এর প্রাপ্তি চোখে পড়ার মতো নয়। সে হিসেবে আলিশা শুরুতেই ‘হোঁচট’ খেয়েছেন কি-না এটা সময়ই বলে দেবে। তবে তিনি যে সম্ভাবনাময়, এটা নিয়ে দ্বিমত নেই। টিভি নাটক ও বিজ্ঞাপনচিত্রে সেই ছাপও রেখেছেন। আগামী বছর আলিশার জন্য শুভ হোক।