ছিনতাই বন্ধের উদ্যোগ: টঙ্গী ফ্লাইওভারের তিনটি সিঁড়ি সাময়িক বন্ধ

Slider গ্রাম বাংলা

গাজীপুর: ধারাবাহিক ছিনতাইয়ে একাধিক মানুষ খুন ও অসংখ্য পথচারী আহত হওয়ার প্রেক্ষিতে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ( জিএমপি) আব্দুল্লাহপুর থেকে টঙ্গীর চেরাগআলী পর্যন্ত ফ্লাইওভারের পাঁচটির মধ্যে তিনটি সিঁড়ি বন্ধ করে দিয়েছে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের রাজধানীর বিমানবন্দর থেকে গাজীপুরের চান্দনা গাজীপুর পর্যন্ত ২৩ কিলোমিটার মহাসড়কের যানজট দূর করতে ২০১২ সালে হাতে নেওয়া হয় বিআরটির এই প্রকল্প। কিন্তু আব্দুল্লাহপুর থেকে টঙ্গীর চেরাগআলী পর্যন্ত ৪ দশমিক ৫ কিলোমিটার ফ্লাইওভারের কাজ সম্পন্ন হওয়া পর বন্ধ হয়ে যায়। কিছু দিন আগে সরকার বিআরটির এই প্রকল্পটিই আপাতত বন্ধ করে দেয়। এরপর টঙ্গীবাসী ফ্লাইওভার সহ ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের চারটি লেন খুলে দেয়া দাবীতে আন্দোলন সংগ্রাম করে। কিন্তু এখনো চারটি লেন পুরোপুরি খুলে দেয়া হয়নি। ফলে বিচ্ছিন্নভাবে চলছে যানবাহন।

সম্প্রতি আব্দুল্লাহপুর থেকে টঙ্গীর স্টেশন রোড ও চেরাগআলী পর্যন্ত ফ্লাইওভারে একাধিক পথচারী দিনে ও রাতে ছিনতাইয়ের শিকার হয়ে হতাহত হয়। বিশেষ করে ফ্লাইওভার থেকে নীচে নামার সিঁড়িগুলোতে ছিনতাইয়ের ঘটনা বেশী ঘটছে। আব্দুলাহপুর থেকে টঙ্গীর চেরাগআলী পর্যন্ত মোট পাঁচটি সিঁড়ি রয়েছে। পথচারীদের ফ্লাইওভার থেকে নীচে নামার জন্য এই সিঁড়িগুলো তৈরী করেছিল বিআরটি। ফ্লাইওভার স্টেশনে নামার পর যে সিঁড়ি দিয়ে যাত্রীরা নিরাপদে ঘরে ফেরার কথা ছিল, সে সিঁড়িগুলোই এখন মরণ ফাঁদ।
সম্প্রতিক সময়ে ফ্লাইওভারে সংঘটিত একাধিক ছিনতাইয়ের ঘটনায় হতাহতের বিবরণ বিশ্লেষনে দেখা যায়, ছিনতাইকারীর কোন যাত্রী গাড়ি থেকে নামার পর ফ্লাইওভারের উপর থেকে ধাওয়া করে সিঁড়িতে এনে কুপিয়ে হতাহত করে বা সিঁড়ি দিয়ে ফ্লাইওভারে উঠার সময় আক্রমন করে। এই প্রক্রিয়ায় একাধিক হতাহতের ঘটনার পর সাধারণ মানুষ বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে। হত্যার বিচারের দাবীতে করে আন্দোলন, মহাসড়ক ও থানা ঘেরাও এখন টঙ্গীর নিত্যদিনের ঘটনা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ছিনতাই বন্ধে জিএমপি আব্দুল্লাহপুর থেকে টঙ্গীর চেরাগআলী পর্যন্ত ৪ দশমিক ৫ কিলোমিটার ফ্লাইওভারের পাঁচটি সিঁড়ির মধ্যে তিনটি বন্ধ করে দিয়েছে। আব্দুল্লাহপুর ও চেরাগআলীতে দুটি রেখে বাকী তিনটি সিঁঁিড় আপাতত অস্থায়ীভাবে ইট দিয়ে প্রাচীর আকৃতির দেয়াল করে বন্ধ করে দেয় পুলিশ। একই সাথে খোলা রাখা দুটি সিঁড়িতে পুলিশি টহল জোরদার করা হয়। কিন্তু এই ফ্লাইওভারের উপরে বা নীচে কোন আলো বা সিসি ক্যামেরা না থাকায় ছিনতাইকারীরা সহজেই ছিনতাই করার কাজটি নিরাপদে করে আসছে। তিনটি সিঁড়ি বন্ধ হলেও পুরো ফøাইওভারে এখনো আলো ও সিসি ক্যামেরার ব্যবস্থা হয়নি। সিঁড়ি বন্ধ হলেই নয় আলো ও সিসিক্যামেরা সহ পুলিশি নিরাপত্তা নিশ্চিত না হলে এই অপরাধ দমন সম্ভব নয় বলে মনে করছে সাধারণ মানুষ।

এসব বিষয়ে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের(জিএমপি) অপরাধ দক্ষিন বিভাগের উপ-কমিশনার মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ছিনতাইরোধে অস্থায়ীভাবে ফ্লাইওভারের তিনটি সিঁড়ি বন্ধ করা হয়েছে। জনগন চাইলে খুলে দেয়া হবে। ফ্লাইওভারে আলো ও সিসিক্যামারা স্থাপনের বিষয়ে তিনি বলেন, এই সমস্যা সমাধান জটিল হয়ে যাচ্ছে। বিআরটি এ বিষয়ে কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না। বার বার বলার পরও তারা সাড়া দেয় না। এ ছাড়া গাজীপুর সিটিকরপোরেশনও কোন উদ্যোগ নেয় না। এ বিষয়ে সাধারণ মানুষ সহযোগিতার করতে চাইলেও নানা জটিলতায় সমস্যা সমাধান করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে পুলিশ চেষ্টা করছে যেন আলো ও সিসিক্যামেরা স্থাপন করে ও পুলিশ টহল আরো বাড়িয়ে ছিনতাই বন্ধ করা যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *