ঢাকা: সরকারি-বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রথম শ্রেণিতে শিক্ষার্থী ভর্তির কোটা সংরক্ষণকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন দেশের শিক্ষাবিদরা। তবে এলাকাভিত্তিক কোটায় পিছিয়ে পড়াদের এগিয়ে আনার সুযোগ থাকলেও এক্ষেত্রে মনিটরিং জোরদার করার পক্ষে মত দিয়েছেন তারা।
এ বিষয়ে গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী তিনি বলেন, এলাকাভিত্তিক কোটা চালু করায় ভর্তি বাণিজ্যের লাগাম টেনে ধরা যাবে।
পাশাপাশি বেসরকারি বিদ্যালয়গুলোর খরচ সীমার মধ্যে আনার পক্ষে মত দিয়েছেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের এ উপদেষ্টা।
মঙ্গল ও বুধবার (২০-২১ অক্টোবর) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে দু’দফা বৈঠকে সরকারি-বেসরকারি বিদ্যালয়ে (প্রাথমিক শ্রেণি যুক্ত মাধ্যমিক বিদ্যালয়) প্রথম শ্রেণিতে ভর্তিতে এলাকাভিত্তিক ৪০ শতাংশ কোটা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে এ পদ্ধতিতে শিক্ষার্থী ভর্তি করানো হবে।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালক ফাহিমা খাতুন বলেন, প্রথমবার স্কুলগুলো ক্যাচমেন্ট এরিয়া নির্ধারণ করবে। পরবর্তীতে জরিপ করে আমরা ক্যাচমেন্ট এরিয়া নির্ধারণ করে দেব।
এর আগে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী শিক্ষার্থী ভর্তিতে ‘এলাকা কোটা’ চালুর সুপারিশ করে মাউশি।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, কোনো এলাকার স্কুলে সেই এলাকারই ৪০ শতাংশ শিক্ষার্থীকে আগে ভর্তি করাতে হবে। বাকি আসনে ভর্তি করা হবে এলাকার বাইরের শিক্ষার্থীদের।
ফাহিমা খাতুন বলেন, বিদ্যালয়গুলো ক্যাচমেন্ট এরিয়া নির্ধারণের পর আমাদের কাছে দেবে। এরপর থানা শিক্ষা কর্মকর্তারা জরিপ করবেন। এক্ষেত্রে কোনো সমস্যা হলে সে বিষয়ে মাউশি উদ্যোগ নেবে।
বালক ও বালিকা বিদ্যালয় কাছাকাছি হলে সেটি মাথায় রেখে ওয়ার্ডভিত্তিক ক্যাচমেন্ট এরিয়া নির্ধারণ করতে হবে বলে জানায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
কোটা নির্ধারিত থাকলে পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের ভাল প্রতিষ্ঠানে পড়ার সুযোগ সৃষ্টি হবে বলে মনে করেন রাশেদা কে চৌধুরী।
সারা দেশে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের (প্রাথমিক শ্রেণি যুক্ত মাধ্যমিক বিদ্যালয়) মধ্যে ৯৭ শতাংশই বেসরকারি জানিয়ে গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক বলেন, এক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানগুলোতে যাতে সামর্থ্য অনুযায়ী ফি দিতে পারে সে বিষয়টি সর্বাগ্রে বিবেচনায় নিতে হবে।
ফাহিমা খাতুন বলেন, মনিপুর, আইডিয়াল, হলিক্রসসহ রাজধানীর নামি প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রধানদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, যাতে তারা নিজেদের মধ্যে সমন্বয় করে ক্যাচমেন্ট এরিয়া নির্ধারণ করেন।
সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে বিদ্যমান বৈষম্য দূর করতে শিক্ষায় বিনিয়োগ বাড়ানোর পক্ষে মত দেন রাশেদা কে চৌধুরী।
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী, প্রথম শ্রেণিতে ভর্তিতে পরীক্ষা না নেওয়ার জন্য পুনর্বার পরিপত্র জারি করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
মহানগরের পাশাপাশি এবার জেলা পর্যায়েও প্রথম শ্রেণিতে অনলাইনে আবেদন করে শিক্ষার্থী ভর্তি করাতে হবে বলে বাংলানিউজকে জানান শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব রুহী রহমান।
ভর্তির ক্ষেত্রে সার্বিক বিষয় মাউশি মনিটর করবে জানিয়ে অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ফাহিমা খাতুন বলেন, সবার জন্য শিক্ষা কার্যক্রম এগিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যেই এ উদ্যোগ।