দ্বিতীয় আখেরী মোনাজাতে মুসলিম উম্মার শান্তি, নিরাপত্তা ও সমৃদ্ধি কামনা

Slider জাতীয়

গাজীপুর: অসীম অনন্ত প্রেমময় আল্লাহর নিকট নিজেকে আত্মসমর্পণের আবেদনে অনুষ্ঠিত হল আখেরী মোনাজাত। আর এর মাধ্যমে শেষ হল শুরায়ি নেজামের প্রথম পর্বের দুই ধাপের বিশ্ব ইজতেমা। মোনাজাতে মুসলিম উম্মার শান্তি নিরাপত্তা ও সমৃদ্ধি কামনা করা হয়।

ইজতেমা ময়দানের বিদেশি নিবাসের পূর্ব পাশের মঞ্চ থেকে লাখো মানুষের কাঙ্খিত আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করেন বিশ্ব তাবলীগ জামায়াতের বিশিষ্ট বুজুর্গ আলেমে দ্বীন হাফেজ মাওলানা মোহাম্মদ জুবায়ের আহমেদ।

সকাল ১২টা ০৮ মিনিট থেকে শুরু করে ১২টা ২৭ মিনিট পর্যন্ত ১৯ মিনিট স্থায়ী আবেগঘন আখেরী মোনাজাতে সমগ্র বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর ঐক্য, মুক্তি, সুখ, শান্তি, সমৃদ্ধি, নিরাপত্তা, ইহ ও পারলৌকিক কল্যাণ কামনা করে, বিভেদ ভুলে ঐক্যের আহবানে মহান রাব্বুল আলামীনের কাছে কাকুতি মিনতি জানানো হয়। গভীর ভাবাবেগপূর্ণ পরিবেশে ‘আমীন, আলাহুম্মামীন’ ধ্বনিতে প্রকম্পিত হয় টঙ্গীর তুরাগ তীর। রাজধানী ঢাকাসহ সমগ্র বাংলাদেশের প্রায় কয়েক লক্ষাধিক মুসল্লি ছাড়াও আখেরি মোনাজাতে অংশ নিয়েছেন বিশ্বের অর্ধশতাধিক বিদেশী রাষ্ট্রের প্রায় ৩ সহস্রাধিক ধর্মপ্রাণ মুসলমান।

মোনাজাতে অযুত কন্ঠে উচ্চারিত হয়েছে রাহমানুর রাহীম আলাহর মহত্ত্ব ও শ্রেষ্ঠত্ব। সকলেই যেন কিছু সময়ের জন্য আল্লাহর প্রেমে দিওয়ানা হয়ে ভুলে গিয়েছিল হিংসা-বিদ্বেষ ও ভেদাভেদ। আমীর-ফকির, মনীব-ভৃত্য, ধনী-গরীর, নেতা-কর্মী নির্বিশেষে সকল শ্রেণী-পেশা ও গোষ্ঠীর মানুষ পরওয়ারদেগার আল্লাহর দরবারে দু’হাত তুলে নিজ নিজ কৃতকর্মের জন্য নি:শর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন। বিশাল জনসমুদ্র থেকে মধ্যাহ্নের আকাশ কাপিয়ে ধ্বনি উঠে-‘ইয়া আল্লাহ, ইয়া আল্লাহ’। আখেরী মোনাজাতের সময় মুঠোফোন, বেতার, ওয়ারলেস সেট, ইলেকট্রনিক্স মিডিয়া এবং স্যাটেলাইট টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচারের সুবাধে দেশ-বিদেশের আরও লাখ লাখ মানুষ এক সঙ্গে হাত তুলেছেন ক্ষমাশীল পরওয়ারদিগারের শাহী দরবারে। গুনাহগার, পাপী-তাপী বান্দা প্রতিপালকের কাছে ক্ষমা চেয়ে কান্নায় চোঁখের পানিতে বুক ভাসিয়েছেন।

সকাল থেকে দিক নির্দেশনামূলক বয়ানের পর লাখো মানুষের প্রতীক্ষার অবসান ঘটে বেলা ১২টা ০৮ মিনিটে। জনসমূদ্রে হঠাৎ নেমে আসে আবেগঘন পিনপতন নিরবতা। যে যেখানে ছিলেন সেখানে দাঁড়িয়ে কিংবা বসে হাত তুলেন আল্লাহর দরবারে। আখেরী মোনাজাতকে ঘিরে লাখ লাখ মুসলমান যেন ভেঙে পড়েছিলেন টঙ্গীতে। এছাড়া হাজার হাজার ধর্মপ্রাণ মা ও বোনেরা এ আখেরি মোনাজাতে অংশ নেন। সকলের প্রাণান্তকর চেষ্টা ছিল দেশ-বিদেশের লাখ লাখ মুসল্লিদের সাথে মোনাজাতে শরীক হয়ে নিজের কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *