বৈশাখের আলপনায় রঙিন হাওরের ১৪ কিলোমিটার সড়ক

Slider ফুলজান বিবির বাংলা

কিশোরগঞ্জের হাওর উপজেলা মিঠামইনের জিরো পয়েন্ট থেকে অষ্টগ্রাম পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার ‘অলওয়েদার’ সড়কে বাঙালি ঐতিহ্যের আলপনা আঁকা হয়েছে। যা বিশ্বের দীর্ঘতম আলপনা অঙ্কন বলে দাবি করছে কর্তৃপক্ষ। গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ডে নাম লেখানোর প্রত্যয়ে অষ্টমবারের মতো এ আলপনার নাম দেওয়া হল ‘আলপনায় বৈশাখ-১৪৩১ উৎসব’।

রোববার পহেলা বৈশাখে (১৪ এপ্রিল) বেলা পৌনে ১১টায় মিঠামইন জিরো পয়েন্টে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে তুলির আঁচড়ের মাধ্যমে আলপনায় বৈশাখ-১৪৩১ উৎসবের সমাপ্তি করেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।

এ সময় জুনাইদ আহমেদ পলক কিশোরগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিককে সঙ্গে নিয়ে আলপনা রঙিন অলওয়েদার সড়কে মোটরসাইকেল চালিয়ে আনন্দ উপভোগ করেন।

কিশোরগঞ্জের মিঠামইনে উৎসবের সমাপনী দিনের আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন কিশোরগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. জিল্লুর, বাংলালিংকের চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স অফিসার তাইমুর রহমান প্রমুখ।

মিঠামইন জিরো পয়েন্টে সমাপনী অনুষ্ঠানে জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, বিশ্বরেকর্ড গড়ার এই প্রচেষ্টা দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করবে, পাশাপাশি পর্যটন শিল্পকেও উদ্বুদ্ধ করবে। কোভিড-১৯ এর বিরতির পর পহেলা বৈশাখের আলপনার উৎসব আবার ফিরে আসায় বাঙালি চেতনার উদযাপন আবার তার চেনা রূপ লাভ করেছে। আয়োজকদের প্রতি আমি শুভকামনা জানাচ্ছি ও আশাবাদ ব্যক্ত করছি যেন তারা ভবিষ্যতেও এমন আয়োজন করে দেশবাসীকে আনন্দে ভাসাতে পারে। এ আয়োজন ইতিহাসের পাতায় স্থান পাবে বলে আমরা আশা রাখি।

কিশোরগঞ্জ হাওরাঞ্চলে বাঙালি লোকসংস্কৃতি তুলে ধরতে মিঠামইন জিরো পয়েন্ট থেকে অষ্টগ্রাম জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার সড়কে ৬৫০ জন শিল্পী সর্ববৃহৎ আলপনা উৎসব বিশ্বমঞ্চে তুলে ধরার লক্ষ্যে এবার অষ্টমবারের মতো আয়োজিত ‌‘আলপনায় বৈশাখ ১৪৩১’ বিশ্বরেকর্ড গড়ার অনবদ্য প্রত্যয় নিয়ে এই উৎসব আয়োজন করে।

বাংলালিংক এর চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স অফিসার তাইমুর রহমান তার উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বলেন, বাংলা আমাদের ঐতিহ্য, তাই এ উৎসব উদযাপনে বাংলালিংক পরিবার গভীরভাবে দায়বদ্ধ। বাংলালিংক-এর এই আয়োজন ভবিষ্যত প্রজন্মের কাছে বাংলাদেশের সংস্কৃতি ও দেশীয় উৎসবকে তুলে ধরার একটি প্রয়াস।

হাওরকন্যা নূরজাহান পপি বলেন, হাওরের মধ্যে এত সুন্দর আলপনা এর আগে দেখিনি। এ আলপনা দেখে সত্যি আমরা অনেক আনন্দিত। যদিও দূর-দুরান্ত থেকে অনেক মানুষ আসছে দেখতে তবে হাওরের মানুষ অনেক বেশি আনন্দিত।

কিশোরগঞ্জ সদর থেকে আলপনা দেখতে এসেছেন আর জে অন্তর। তিনি বলেন, আগে পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠানগুলো স্কুল কলেজের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকত। কিন্তু এবার হাওরের মধ্যে এটা ছড়িয়ে পড়েছে। আমরা সব সময় বইয়ের মধ্যে এইসব দেখেছি। আজ নিজ চোখে দেখে অনেক ভালো লাগছে।

কনটেন্ট ক্রিয়েটর তৌহিদ আফ্রিদী বলেন, আজকে আমরা একটি বিশ্ব রেকর্ড করতে যাচ্ছি। বিশেষ করে আলপনা ১৪.২ মধ্য দিয়ে আমরা এই বিশ্ব রেকর্ড করেছি। এই আলপনার মাধ্যমে বিশ্বের মাঝে বাংলাদেশকে যেভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে একজন বাঙালি হিসেবে আমি খুবই খুশি।

তিনি আরও বলেন, চারদিকে সবুজে মধ্যে মেঝেতে এই আলপনা যা মনোমুগ্ধকর। এই ১৪ কিলোমিটার আল্পনা মাধ্যমে বাংলাদেশকে বিশ্বে উপস্থাপন করবে। আমি সবাইকে বলবো আপনারা আসেন এসে দেখেন। এই সড়কের আলপনা আঁকার মাধ্যমে বিশ্বরেকর্ড হিসেবে গিনেস বুকে নথিভুক্ত করার উদ্যোগ নেবেন আয়োজকরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *