রমজান আলী রুবেল, শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি, গাজীপুরের শ্রীপুরে হাতুড়ে চিকিৎসকের অবহেলায় প্রাণ গেলে এক পোশাক শ্রমিকের। কুকুরের কামড়ের পর ভুল চিকিৎসায় জলাতঙ্ক রোগে আক্রান্ত হয়ে তার মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ নিহতের স্বজনদের।
নিহত মো. রাশিদুল ইসলাম (২৬) উপজেলার কাওরাইদ ইউনিয়নের নয়াপাড়া গ্রামের খোরশেদ আলমের ছেলে। তিনি স্থানীয় সাদচান গার্মেন্টসে শ্রমিকের কাজ করতেন।
অভিযুক্ত হাতুড়ে চিকিৎসক মো. আসাদুল (৩০) এর বাড়ি ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে। তিনি উপজেলার জৈনা বাজার এলাকার সরকার ফামের্সী কর্মচারী।
নিহতের স্ত্রী সুরাইয়া আক্তার অভিযোগ করে বলেন, গত ১১ নভেম্বর বাড়ির পাশে আমার স্বামীকে একটি কুকুর কামড় দেয়। এরপর আমার এক স্বজনদের মাধ্যমে অভিযুক্তের সঙ্গে আমরা যোগাযোগ করলে অভিযুক্ত জানায় তার ফামের্সী ভ্যাকসিন রয়েছে। এরপর বিকালে স্বামী রাশিদুলকে নিয়ে সরকার ফামের্সীতে নিয়ে যায়। এরপর অভিযুক্ত হাতুড়ে চিকিৎসক আমার স্বামীর শরীরে একটি ইনজেকশন ও একটি ভ্যাকসিন পুশ করেন। এর কয়েকদিন পর থেকে স্বামীর শারীরিক অবস্থা খারাপ হতে থাকে।
বিষয়টি অভিযুক্ত হাতুড়ে চিকিৎসককে অভিহিত করলে তিনি আমাকে দমক দিয়ে বলে ১৫ বছর যাবৎ অভিজ্ঞতা নিয়ে এই কাজ করছি। এই বলে আমাকে বিদায় করে দেন। এরপর স্বামীর অবস্থা আরও বেশি খারাপ হলে গত ১ মার্চ ঢাকার মহাখালী সংক্রমণ ব্যাধি হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, আপনার স্বামীকে কুকুরে কামড়ানোর পর সঠিক চিকিৎসা ও ভ্যাকসিন প্রদান না করার কারণে অবস্থা খুবই আশংকাজন। তাকে বাঁচানো সম্ভব না। এই বলে হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক স্বামীকে বাড়িতে নিয়ে আসার জন্য পরামর্শ দিলে হাসপাতাল থেকে চলে আসি। এরপর গত ২ মার্চ রাতে আমার স্বামী মারা যায়।
অভিযুক্ত চিকিৎসক আসাদুল পলাতক থাকায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। সরকার ফামের্সীর মালিক মজিবুর রহমান বলেন, আমার ফামের্সী আসার পর আমার দোকানে থাকা একজন কর্মচারী ভ্যাকসিন দিয়েছে। এরপর বাকি ভ্যাকসিন নিতে বলা হয়েছে। কিন্তু তিনি আর যোগাযোগ করেনি। এখন আমার দোকানের কর্মচারীকে অভিযুক্ত করে থানায় অভিযোগ দিয়েছে। আপনার কর্মচারী কি করে ভ্যাকসিন দেয়? এমন প্রশ্নের জবাব তিনি কোন উত্তর না দিয়ে সংযোগ কেটে দেন।
শ্রীপুর থানার উপপরিদর্শক এসআই রওশন আলী বলেন, এবিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত পদক্ষেপ নেয়া হবে।