শ্রীপুরে ৮টি পরিবারের চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ

Slider গ্রাম বাংলা


রমজান আলী রুবেল শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধিঃ গাজীপুরের শ্রীপুরে অসহায় হতদরিদ্র মানুষের জমি জবরদখল ও চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করছে কারখানা কতৃপক্ষ। জমি জবরদখল রাস্তা বন্ধ করে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ বন্ধ ভুক্তভোগীরা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগীতা চেয়ে পাচ্ছে অভিযোগ প্রতিবন্ধী নারীর। নিজের শেষ সম্বল জমিটুকু চোখে সামনে জবরদখল হচ্ছে দেখে বারবার কেঁদে কেঁদে এদিকসেদিক ছুটাছুটি করছে ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা। প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়ে আর্তনাদ করছেন উপস্থিত সংবাদকর্মীদের কাছে। কারখানা কতৃপক্ষের দাবি বৈধ মালিকেদের কাছ থেকে জমি ক্রয় করে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করছেন।

আজ শনিবার সকালে থেকে উপজেলার মাওনা ইউনিয়নের চকপাড়া গ্রামে জমি জবরদখল ও রাস্তা বন্ধ করে সীমানা প্রাচীর নির্মাণের ঘটনা ঘটে।

ভুক্তভোগী প্রতিবন্ধী ছাহেরা খাতুন (৭৫) উপজেলার মাওনা ইউনিয়নের চকপাড়া গ্রামের মৃত হযরত আলীর স্ত্রী। একই গ্রামের আবুবক্কর সিদ্দিক এর স্ত্রী সোলেমন (৬৫)। এই গ্রামের বাহারাম, তাইজুদ্দিন, শফিকুল ইসলাম, ইমন।

অভিযুক্ত কারখানা ফরচুন গ্রুপের ফরচুন ক্যাবলস ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের।

সরজমিনে গিয়ে দেখাযায়, অর্ধশতাধিক শ্রমিক কারখানার হয়ে সীমানা প্রাচীরের কাজ করছে। কয়েকজন নারী পুরুষ তাদেরকে হাতজোড় করে কান্নাকাটি করে অসহায় আর্তনাদ করছে। আমাদের জমি রাস্তা তুমরা দখল করো না। এভাবে এদিকসেদিক ছুটাছুটি করতে দেখা যায় তাদের। সবার হাতে রয়েছে জমির কাগজপত্র। কিন্তু কারখানা কতৃপক্ষের লোকজন তাদের কোন কথার কর্নপাত না করে চালিয়ে যাচ্ছে ব্যাপক কর্মযজ্ঞ। অসহায় ভুক্তভোগীরা কান্নায় ভেঙে পড়ে তাদের জমি রাস্তা রক্ষা করতে পারছে না। ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানাযায় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগীতা চেয়েও পাচ্ছে না সহযোগিতা।

ভুক্তভোগী সোলেমান নেছা অভিযোগ করে বলেন, দীর্ঘ বছর যাবৎ আমার জমি ভোগদখল করে খাচ্ছি। কয়েকবছর যাবৎ আমার জমিটুকু হাতিয়ে নিতে চেষ্টা করছে কারখানা কতৃপক্ষের লোকজন। শেষ চেষ্টা করে আর রক্ষা করতে পারলাম না শেষ সম্বলটুকু। আজ সকাল থেকে জোরপূর্বক জবরদখল করে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করছে। পাশাপাশি বন্ধ করে দিচ্ছে আমাদের কয়েকটি পরিবারের চলাচলের রাস্তা। আজ আমরা অসহায় আমাদের আর্তনাদ কেউ শুনছেন না।

ভুক্তভোগী শারীরিক প্রতিবন্ধী ছাহেরা খাতুন বলেন, আমাদের অভিযোগ আজ কেউ শুনছে না। অসহায় মানুষের কেউ নেই। প্রশাসন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে অভিযোগ করেও সহযোগীতা পাচ্ছি না। আমি একজন প্রতিবন্ধী নারী। ১৯৮৪ সালে আমার স্বামী মারা যাওয়ার পর এই জমিটুকু নিয়ে খেয়ে না খেয়ে পড়ে আছি। আজ জোরপূর্বক চোখের সামনে জমিটুকু নিয়ে সীমানা প্রাচীর করছে।

ভুক্তভোগী ইমন অভিযোগ করে বলেন, আমাদের ৮টি পরিবারের চলাচলের একমাত্র রাস্তাটি বন্ধ করে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করছে কারখানা কতৃপক্ষ। বিষয়টি গত কিছুদিন পূর্বে আমরা স্থানীয় চেয়ারম্যানকে জানানোর পর চেয়ারম্যান ঘটনাস্থলে আসে। আমাদের রাস্তার জন্য সুপারিশ করলে চেয়ারম্যানসহ কয়েকজনকে মিথ্যা চাঁদাবাজি মামলা দেয় কারখানা কতৃপক্ষ। এত ক্ষমতাধর ব্যক্তির সাথে আমাদের কি করার আছে। শুধু চেয়ে দেখা ছাড়া আমাদের কিছু করার নেই। আপনারা আমাদের জন্য কিছু করেন।

ফরচুন ক্যাবলস ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের কোম্পানির দায়িত্বে থাকা মো. জাহিদুর ইসলাম বলেন, সীমানা প্রাচীরের বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারবো না। আমি একটি বাংলোর দায়িত্বে আছি।

শ্রীপুর থানার উপপরিদর্শক তদন্ত সাখাওয়াত হোসেন বলেন, আদালতের নিষেধাজ্ঞা না থাকায় আমাদের পুলিশের কিছু করার নেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *