শত কোটি টাকা আত্মসাৎ ও অবৈধভাবে শেয়ার হস্তান্তরের অভিযোগে ট্রান্সকম গ্রুপের দুই পরিচালকসহ পাঁচ কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
গ্রেপ্তার হওয়া অভিযুক্তরা হলেন, ট্রান্সকম গ্রুপের আইন উপদেষ্টা ফখরুজ্জামান ভুঁইয়া, পরিচালক (কর্পোরেট ফাইন্যান্স) কামরুল হাসান, পরিচালক (কর্পোরেট ফাইন্যান্স) আব্দুল্লাহ আল মামুন, ম্যানেজার আবু ইউসুফ মো. সিদ্দিক এবং সহ-কোম্পানি সেক্রেটারি মোহাম্মদ মোসাদ্দেক।
বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর গুলশান থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পিবিআই ঢাকা উত্তরের বিশেষ পুলিশ সুপার (এসএসপি) জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ট্রান্সকম গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত লতিফুর রহমানের মেয়ে শাযরেহ হক বাদী হয়ে আজ গুলশান থানায় মামলা করেন। সেই মামলায় গ্রুপটির পাঁচজন কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গুলশান থানায় পিবিআইয়ের হাতে গ্রেপ্তার ৫ পাঁচ কর্মকর্তাসহ মা ও বোনের বিরুদ্ধেও মামলা করেছেন শাযরেহ হক। তিনি গুলশান থানায় মোট তিনটি মামলা করেছেন।
মামলার বাকি আসামিরা হলেন, শাহজরেহের বড় বোন সিমিন রহমান। তিনি ট্রান্সকমের বর্তমান সিইও। আর মা শাহনাজ রহমান। তিনি গ্রুপটির বর্তমান চেয়ারম্যান।
অর্থ আত্মসাতের মামলার এজাহারে শাযরেহ অভিযোগ করে বলেন, তার বাবা বিভিন্ন অ্যাকাউন্ট ও এফডিআরে প্রায় ১০০ কোটি টাকা রেখে মারা যান। ওই অর্থের নমিনি ছিলেন তার মা শাহনাজ রহমান। ২০২০ সালের ১ জুলাই লতিফুর রহমান মারা যাওয়ার পর ওই টাকা তার উত্তরাধিকারীদের (ওয়ারিশ) মধ্যে বণ্টন করে দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তার বাবার মৃত্যুর পর তার বড় বোন সিমিন সব টাকা নিজের ও তার মায়ের অ্যাকাউন্টে সরিয়ে ফেলেন।
এজাহারে তিনি আরও অভিযোগ করে বলেন, ২০২০ সালের ৩ আগস্ট তার বড় বোন ট্রান্সকম ইলেকট্রনিক্সের ১৮ শতাংশ শেয়ার প্রায় ১০০ কোটি টাকা থেকে ৬০ কোটি টাকা দিয়ে কিনে নেওয়ার বাহানায় নিজের নামে হস্তান্তর করেন। তার বোন ও মা পরস্পরের যোগসাজশে লতিফুরের অন্যান্য উত্তরাধিকারীদের বঞ্চিত করে এই কাজ করেছেন।
শেয়ার বঞ্চিত করার মামলার এজাহারে তিনি অভিযোগ করে বলেন, তার বোন ট্রান্সকমের আরও চার কর্মকর্তার সহযোগিতায় জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে তিনটি ফর্ম ১১৭ (হস্তান্তর দলিল) তৈরি করে রেজিস্ট্রার অব জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজ অ্যান্ড ফার্মসে (আরজেএসসি) জমা দিয়ে বেআইনিভাবে ট্রান্সকমের বেশিরভাগ শেয়ারের মালিকানা নিয়ে নেন। কিন্তু তিনি কখনোই হস্তান্তর দলিলে (ফর্ম ১১৭) স্বাক্ষর করেননি।
আরেকটি মামলায় এজাহারে বাদী অভিযোগ করেন, তার মা ও বোন ট্রান্সকমের অন্য তিন কর্মকর্তার সহযোগিতায় তার এবং তার ভাই আরশাদ ওয়ালিউর রহমানের স্বাক্ষর জাল করে ডিড অব সেটেলমেন্ট (মীমাংসার দলিল) তৈরি করেছেন। পরে ওই ডিড অব সেটেলমেন্ট ব্যবহার করে সিমিন ও শাহনাজ ট্রান্সকম গ্রুপের শেয়ার নিজেদের নামে হস্তগত করাসহ গ্রুপের চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং সিইওর পদ নিজেদের নামে করে নিয়েছেন।