মাসুদ রানা সরকার, বগুড়া জেলা প্রতিনিধি ঃ বগুড়ায় ব্যতিক্রমী এক আয়োজনে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের যুদ্ধকালীন বীরত্বগাথা শুনলেন বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রায় ৪ শতাধিক শিক্ষার্থী। গল্পে গল্পেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত কোমলমতি শিক্ষার্থীরা যেন এক মূহুর্তের জন্যে ফিরে গিয়েছিলো ১৯৭১ সালের সেই দিনগুলিতে। গল্পের মাঝেই তারা জানছিলো মহান মুক্তিযুদ্ধে বাংলার দামাল সন্তানদের দেশের জন্যে আত্মত্যাগ ও লড়াই-সংগ্রামের বীরত্বগাথার সেই দিনগুলোর বাস্তবতার কথা। জেনেছে মহান মুক্তিযুদ্ধে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর অবদান ও স্বাধীনতার প্রকৃত ইতিহাস। জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের আয়োজনে ও বগুড়া জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় মঙ্গলবার সকাল থেকে জেলা শিল্পকলা একাডেমি অডিটোরিয়ামে নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধকরনের লক্ষ্যে শিক্ষার্থীদেরকে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের যুদ্ধকালীন বীরত্বগাথা শোনানোর এই আয়োজন অনুষ্ঠিত হয়। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন প্রকল্পের আওতায় প্রাণবন্ত এই আয়োজনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের পরিচালক ড: মো: নুরুল আমিন (উপ-সচিব)।বগুড়ার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) আফসানা ইয়াসমিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফিরোজা পারভীন, জেলা শিক্ষা অফিসার হযরত আলী ও জেলা কালচারার অফিসার শাহাদৎ হোসেন। আয়োজনে শিক্ষার্থীদের গল্পে গল্পে মহান মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন লড়াই, সংগ্রাম, ত্যাগ ও লোমহর্ষক নানা বাস্তবতার কথা তুলে ধরেন ৪ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা যথাক্রমে রেজাউল করি মন্টু, সাবেক কমান্ডার রুহুল আমিন বাবলু, মোকছেদুর রহমান ঠান্ডু ও নুরুল আমিন বুলু। এসময় শিক্ষার্থীরা নিজেদের অজানা নানা প্রশ্ন জানতে চান বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে যা অনুষ্ঠানকে করেছিলো আরো প্রাণবন্ত। বগুড়া জিলা স্কুলের শিক্ষার্থী জুবায়ের হাসান জানান, পাঠ্যপুস্তকে আর ছোট থেকে মা-বাবার কাছে মুক্তিযুদ্ধের অনেক গল্প শুনেছি কিন্তু সেসময় যারা যুদ্ধের ময়দানে ছিলো সেই বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মুখ থেকে সেসময়কার বাস্তব কথাগুলো জেনে যেন আমাদের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হয়েছে। দেশের জন্যে যে প্রেম তা আজ আমরাও অনুভব করেছি এমন সুযোগ আমরা আগে পাইনি।সরকারের এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগ প্রসঙ্গে সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমিন বাবলু বলেন, বর্তমান প্রজন্মের সকলের মাঝে দেশপ্রেম জাগ্রত করতে হলে প্রথমে তাদের স্বাধীনতার প্রকৃত ইতিহাস জানাতে হবে। যা ইতিবাচকভাবে শুরু করেছে বর্তমান সরকার তা সত্যি প্রশংসনীয়।বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মুখ থেকে শোনা গল্পের মধ্য থেকেই অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের কুইজ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয় যেখানে বিজয়ী ১০ জন শিক্ষার্থীর মাঝে পুরস্কার ও সনদ বিতরণ করা হয়।