ফেনীর পরশুরামে হাত-পা ও মুখ বেঁধে উম্মে সালমা লামিয়া (৭) নামে এক শিশুকে হত্যা করা হয়েছে। পুলিশ শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করেছে। এ ঘটনায় শিশুটির বাবা নূর নবী এবং সৎ মা রেহানা আক্তারকে আটক করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে পরশুরাম পৌরসভার পশ্চিম বাঁশপদুয়া এলাকার এয়ার আহাম্মদের ভাড়া বাসা থেকে নিহত শিশুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নূর নবী দ্বিতীয় স্ত্রী রেহানাকে নিয়ে পশ্চিম বাঁশপদুয়া এলাকার এয়ার আহাম্মদের একটি ভাড়া বাসায় থাকেন। সেখানে তার প্রথম স্ত্রীর দুই মেয়ে লামিয়া ও ফাতেমা আক্তার নিহাও থাকে।
মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) মেয়েদের বাড়িতে রেখে চিকিৎসার কথা বলে ফেনীতে যান নূর নবী ও তার দ্বিতীয় স্ত্রী। দুপুর দেড়টার দিকে হেলমেট পরা দুই যুবক তাদের ভাড়া বাসায় এসে নিজেদের পল্লী বিদ্যুতের লোক দাবি করে দরজা খুলতে বলে। শিশুরা দরজা খুলে দিলে তারা ঘরের ভেতরে ঢুকে লামিয়াকে (৭) টেপ দিয়ে হাত-মুখ-পা বেঁধে হত্যা করে। এ সময় বড় বোন ফাতেমা আক্তার নিহা (১২) পালিয়ে গিয়ে পাশের একটি বাড়িতে আশ্রয় নেয়। বর্তমানে নিহা পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
স্থানীয় কাউন্সিলর নিজাম উদ্দিন চৌধুরী সুমন বলেন, ৪ বছর আগে নূর নবীর সঙ্গে প্রথম স্ত্রী আয়েশা আক্তারের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। পরে দ্বিতীয় বিয়ে করলে তার প্রথম স্ত্রীর দুই মেয়ে সৎ মায়ের সঙ্গে থাকত। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে ধারণা করছি, ঘটনাটি তার সৎ মায়ের পরকীয়ার কারণে ঘটতে পারে।
নূর নবীর বোন মুন্নি বলেন, বিভিন্ন সময় ভাইয়ের পরিবারে বিভিন্ন বিষয়ে ঝগড়া হতো। মাঝে মধ্যে সৎ মা লামিয়া ও নিহাকে মারধর করত বলেও শুনেছি।
নূর নবীর সাবেক স্ত্রী আয়েশা আক্তারের বাবা অভিযোগ করে বলেন, নূর নবী দ্বিতীয় বিয়ের পর আমার মেয়েকে তালাক দিয়েছে। এরপর থেকে আমরা চাইলেও দুই নাতনির সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারতাম না। তার দ্বিতীয় স্ত্রীর লোকজন পরিকল্পিতভাবে আমার নাতনিকে হত্যা করেছে।
পরশুরাম থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহাদাত হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, ঘটনার মূল রহস্য উদঘাটনে পুলিশ কাজ করছে। প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য শিশু লামিয়ার বাবা ও সৎ মাকে থানায় আনা হয়েছে।