টঙ্গী(গাজীপুর) প্রতিনিধি : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এমপি বলেছেন, বিশ্ব ইজতেমা বাংলাদেশের একটি ইতিহাস। দুই পক্ষের বিরোধ দুঃখজনক। আপনাদের মনোভাব পরিবর্তন হয়নি। দুই গ্রুপ যদি এক সথে খেতে পারতেন, আমরা খুশি হতাম। দুই গ্রুপকে যদি আপনারা মিলিয়ে দিতে পারতেন, আমরা খুশি হবো। এই মেলানোর দায়িত্বটা ধর্মমন্ত্রীকে দিলাম। তিনি ভবিষ্যৎ তাদের মিলিয়ে দিবেন।
সোমবার (২২ জানুয়ারী) বিকেলে টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা সংলগ্ন বাটা গেট রোডে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ আয়োজিত বিশ্ব ইজতেমার ফলো আপ সভায় সভাপতির বক্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমি প্রথম গ্রুপকে বলবো, সুন্দর ভাবে মাঠ বুঝিয়ে দিবেন। দুপুর পর্যন্ত না গড়িয়ে সকাল থেকে মাঠ বুঝিয়ে দিবেন। এই ইজতেমা বাংলাদেশে ইতিহাস সৃষ্টি হয়েছে। আমরা আয়োজন সু সম্পন্ন করতে পেরেছি। আমি অনুরোধ করবো, আপনারা মিলেমিশে চলবেন এবং মিলে মিশে চলার শিক্ষা দিবেন।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী আ ক মোজাম্মেল হক বলেন, ইজতেমার মুসল্লীদের জন দুর্ভোগ কমাতে বিকল্প রাস্তা হিসেবে ভোগড়া বাইপাস ৩০০ ফুটের রাস্তা কাজ বন্ধ রেখে যান চলাচল চালু করলে ভালো হয়। সভায় গাজীপুর মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি এডভোকেট আজমত উল্লাহ খানকে আমন্ত্রণ না জানানোয় তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ফরিদুল হক খান বলেন, অতিতের ভুলগুলো খেয়ালে আনতে হবে। আজ ইজতেমায় দুই গ্রুপ হওয়ায় অসংগতি হচ্ছে। দুই গ্রুপের বিবেদ দু:খ জনক।
জাহিদ আহসান রাসেল এমপি বলেন, অতীতের মতো এবারও সুন্দর হবে। একটা সময় টয়লেট সুবিধা চাননি। কিন্তু এখন এটার গুরুত্ব বুঝতে পারছেন। আমরা পানির সাপ্লাই নিশ্চিত করতে পেরেছি।
ইন্সপেক্টর জেনারেল আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, বিশ্ব ইজতেমা সাফল্য করতে বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। দিয়াবাড়ী এলাকায় একটা মঞ্চ করবে বলেছে, কিন্তু অনুমতি ছাড়াই তারা মঞ্চ করে ফেলেছেন। এটার অনুমতি দেওয়া হয়নি। আমরা চাই, আপনারা ভবিয্যতে যৌথভাবে কাজ করবেন।
ইজতেমা তদারকি কমিটির সমন্বয়ক ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার মো. সাবিরুল ইসলাম বলেন, পয়ঃনিস্কাশন বিষয়ে ওয়াশার সাথে যোগাযোগ করা হয়েছে।
প্রথম পর্বের প্রতিনিধি খন্দকার মেজবাহ উদ্দিন আহমদ বলেন, এই বাংলাদেশের এজতেমা মানুষের রক্তের সাথে মনের সাথে মিশে গেছে। প্রথম পর্বের হস্তান্তরের সময় কোনো সমস্যা হবে না বলে তিনি জানান।
দ্বিতীয় পর্বের প্রতিনিধি ড. মোহাম্মদ আব্দুস সালাম বলেন, সোমবার বা মঙ্গলবার বাদ মাগরিব আমাদের মাঠ দিয়ে দিতে অনুরোধ করছি। গতকাল প্রথম পর্বের লোকজন উত্তরায় আমাদের একজনকে মারধর করা হয়েছে। আহত এখম পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে।
গাজীপুরের জেলা প্রশাসক আবুল ফাতে মোহাম্মদ সফিকুল ইসলাম বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মোতাবেক সকল কাজ করা হবে।
জিএমপি উপ পুলিশ কমিশনার আবুল বাশার মো. আতিকুল রহমান বিশ্ব ইজতেমার আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির মানচিত্র প্রদর্শন করে বলেন, বিশেষ করে এবার ২০০ টি স্মার্ট সি সি ক্যামেরা থাকবে।
জিএমপি কমিশনার মাহবুবুর রহমান বলেন, মুরুব্বি মুসল্লীদের হ্যান্ড ওভার ও টেক ওভার বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছি। বিদেশি মেহমানদের বিষয়ে আরো খেয়াল রাখতে হবে, যাতে বিদেশে আমাদের ইজ্জত থাকে।
সভায় সংশ্লিষ্ট সকল মন্ত্রণালয় ও বিভাগের উর্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সভাটি গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন ও জেলা প্রশাসনের যৌথ আয়োজনে অনুষ্ঠিত হলেও গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়রের প্রতিনিধি সাবকে মেয়র জাহাঙ্গীর আলম উপস্থিত থাকলেও তাকে বক্তব্য দিতে দেয়া হয়নি।
প্রসঙ্গত: রবিবার রাতে উত্তরার তিন নম্বর সেক্টরে তাকওয়া মসজিদে যোবায়ের পন্থদের আক্রমনে সাদ পন্থীদের আটজন আহত হয়। তাদের মধ্যে একজনের অবস্থা গুরুতর। এদিকে বিশ্ব ইজতেমায় এবার দুটি ময়দান প্রস্তুত করা হয়েছে। টঙ্গী তুরাগ তীরে মূল মঞ্চ ও দিয়া বাড়িতে আরেকটি মঞ্চ তৈরী করা হচ্ছে। দুই ময়দানে একই বয়ান প্রচারিত হবে বলে জানালেও পুলিশের আইজিপি বললেন, দিয়া বাড়িতে মঞ্চ ও ময়দান করার অনুমতি নেই।