প্রকাশ্য সভায় কর্মীর হাতে নগদ টাকা বিতরণের অভিযোগে ফরিদপুর-৪ (ভাঙ্গা, সদরপুর ও চরভদ্রাসন) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী মজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সনের প্রার্থিতা বাতিল চেয়ে আবেদন করা হয়েছে।
শনিবার (৩০ ডিসেম্বর) প্রতিদ্বন্দ্বী নৌকার প্রার্থীর প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট ও ভাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাইফুর রহমান জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক মো: কামরুল আহসান তালুকদারের কাছে এ ব্যাপারে একটি দরখাস্ত দাখিল করেন।
নিক্সন চৌধুরী এ আসন থেকে পর পর দুইবার স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জয়ী হন। এ আসনে তার প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম মেম্বার ও নির্বাচনী পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান কাজী জাফর উল্যাহ।
নিক্সন চৌধুরীর বিরুদ্ধে দাখিল করা ওই দরখাস্তে বলা হয়েছে, ‘গত ২৮ ডিসেম্বর দুপুরে ভাঙ্গা থানার উত্তর পাশে অটোস্ট্যান্ডে একটি নির্বাচনী সভায় প্রকাশ্যে ভোটারদের মাঝে টাকা বিতরণ করেছেন নিক্সন চৌধুরী। তিনি প্রকাশ্যে অর্থের মাধ্যমে ভোটারদের প্ররোচিত করে নির্বাচনী আচরণবিধি ৩ (১) ধারার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন করেছেন। নির্বাচন আচরণবিধি ভঙ্গের দায়ে তার প্রার্থিতা বাতিল করার জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঈগল প্রতীকের প্রার্থী মজিবুর রহমান নিক্সন চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমার নামে মিথ্যা প্রচার করা হচ্ছে। তারা খিচুড়ি খাওয়ার জন্য আমার কাছে কিছু টাকা চেয়েছিল, আমি তাদের বকশিশ হিসেবে দিয়েছি। আমি এভাবে অনেক গরিব-দুঃখী মানুষকে সহযোগিতা করে থাকি, এটা নির্বাচনী বিষয় না।’
এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের নৌকার প্রার্থী কাজী জাফর উল্যাহ বলেন, ‘আমি যে অভিযোগ করেছি তা ইতোমধ্যে প্রমাণ হয়েছে। স্বতন্ত্র প্রার্থী কালো টাকা ছড়িয়ে নির্বাচনকে প্রভাবিক করার চেষ্টা করছেন। আমি আশা করি, কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। আমরা চাই, আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে একটি অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন হবে। ভোটাররা যাকে খুশি তাকে ভোট দিতে পারবেন।’
জেলার রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক কামরুল আহসান তালুকদার এ প্রসঙ্গে বলেন, আবেদনটি নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটিতে পাঠানো হয়েছে। কমিটির প্রতিবেদনে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে বিষয়টি প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছে পাঠানো হবে।
উল্লেখ্য, গত ২৮ ডিসেম্বর ভাঙ্গা থানার পাশে অটোস্ট্যান্ডে নিক্সন চৌধুরী নির্বাচনী সভা শেষে তার এক কর্মীর হাতে পাঞ্জাবির পকেট থেকে কিছু টাকা বের করে দেন। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
ওই ভিডিওতে দেখা যায় বক্তব্যের শেষের দিকে নিক্সন চৌধুরী বলছেন, ‘আগামী শনিবার আলগীতে আপনারা একটা বড় শোডাউন করবেন। কিন্তু নির্বাচনের আচরণবিধির জন্য আমরা আপনাদের কিছু বলতে পারতেছি না। তবে আপনারা খিচুড়ি খাবেন, সেই ব্যবস্থা আমি করে দিতে পারি।’ এ কথা বলার পর নিক্সন চৌধুরী তার পাশে দাঁড়ানো ব্যক্তির হাতে পকেট থেকে নগদ টাকা বের করে দেন।