সমাবেশস্থলের আশেপাশে গণপরিবহন না পেয়ে দীর্ঘ সময় যাত্রীদের অপেক্ষা করতে দেখা গেছেসমাবেশস্থলের আশেপাশে গণপরিবহন না পেয়ে দীর্ঘ সময় যাত্রীদের অপেক্ষা করতে দেখা গেছে
রাজধানীতে বিএনপিসহ যুগপৎ আন্দোলনে থাকা ৩৬টি রাজনৈতিক দলের সমাবেশ ঘিরে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়েছে। মতিঝিল, পল্টন, গুলিস্তান, দৈনিক বাংলার মোড়ে ব্যাপক যানজট দেখা দেখা গেছে। এছাড়া শাহবাগ, মালিবাগ, পান্থপথ, গ্রিনরোড এলাকায় যানবাহন চলছে ধীর গতিতে। এদিকে কাকরাইল মোড়, শান্তিনগর সমাবেশস্থলের আশেপাশে গণপরিবহন না পেয়ে দীর্ঘ সময় যাত্রীদের অপেক্ষা করতে দেখা গেছে।
বুধবার ( ১৮ অক্টোবর) সকাল থেকেই নগরবাসীকে রাস্তায় চলাচলে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। বিকাল গড়াতে এই ভোগান্তি বাড়তে থাকে।
পুরান ঢাকার লালবাগে পরিবার নিয়ে বসবাস করেন জসিম উদ্দিন (৩৫)। কাজ করেন একটি বেসরকারি কোম্পানির মার্কেটিং বিভাগে। বিকাল ৩টার দিকে শাহবাগ মোড়ে যানজটে আটকে ছিলেন। তিনি বলেন, আজকে বিভিন্ন জায়গায় রাস্তার উপর রাজনৈতিক সমাবেশ চলছে। আমাদেরকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থেকে সড়কের যানজট ঠেলে চলতে হচ্ছে।
ভিক্টর পরিবহনে বাড্ডা থেকে গুলিস্তান যাচ্ছেন বিল্লাল হোসেন। তিনি জানান, রাজনৈতিক কর্মসূচি থাকুক বা না থাকুক শুক্রবার ছাড়া তাকে সবসময়ই যানজটে পড়তে হয়। তিনি বলেন, যেদিন পল্টনের দিকে রাজনৈতিক সমাবেশ থাকে সেদিন শান্তিনগর, মৌচাকের দিকে যানজটে পড়তে হয়। আজকে রাস্তায় গাড়ি কম ও জ্যামও বেশি।
দুপুর থেকে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে গণসমাবেশ চলছে। সেখানে ভোর থেকে ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নেতাকর্মীরা ব্যানার, ফেস্টুন নিয়ে খণ্ড খণ্ড মিছিল সহকারে নয়াপল্টনে জড়ো হতে দেখা গেছে। বেলা বাড়ার সাথে ওই এলাকায় মানুষের ঢল নামে। এতে করে আশেপাশের রাস্তা ব্যাপক যানজট সৃষ্টি হয়।
সমাবেশস্থলের আশেপাশে গণপরিবহন না পেয়ে যাত্রীদের দীর্ঘ সময় ধরে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। গাড়ি না পেয়ে অনেকে হেঁটে গন্তব্যের দিকে রওনা হন।
ট্রাফিক পুলিশ বলছে, সমাবেশের জন্য কিছু কিছু জায়গায় মানুষের চলাচল বেড়েছে। এতে এসব এলাকায় যানজটও যেমন রয়েছে, তেমনি মানুষের চাপও বেড়েছে।
বাংলামোটরে দায়িত্বরত ট্রাফিক কর্মকর্তা (টিআই) নিউটন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, বাংলামটর এলাকার আশেপাশে প্রতিদিনের মতোই সিগনালে গাড়িগুলোকে কিছুটা সময় থামতে হচ্ছে। কাকরাইল, পল্টনের দিকে গাড়ি চাপ থাকার কারণে এমনটা হচ্ছে। এদিকটায়ও কিছুটা ধীরগতি হচ্ছে।
যানজট নিয়ে নগরবিদ ও স্থপতি ইকবাল হাবিব বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, পার্শ্ববর্তী দেশের কলকাতা ও দিল্লিতে শহরের প্রান্তে অথবা শহরতলীতে রাজনৈতিক কর্মসূচি করা হয়। সেখানে সবাই অংশগ্রহণ করে। তাদের কিন্তু এমন যানজট হয় না। আমাদের দেশে সকল বড় বড় রাজনৈতিক কর্মসূচি মানুষের ভোগান্তি বাড়িয়ে শহরে, বাণিজ্যক এলাকাতে করা হয়। এসব নিয়ে অনেক বলেছি। এর সমাধানের উত্তরও সবার জানা আছে। কিন্তু এসব নিয়ে কেউ কাজ করে না।
এ প্রসঙ্গে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) রমনা ট্রাফিক বিভাগের উপ-কমিশনার মো. জয়নুল আবেদীন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, পল্টন, রাজধানীর বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে দিকে রাজনৈতিক কর্মসূচি চলছে। এতে করে পাশেপাশের এলাকায় মানুষের চলাচল বেড়েছে। বিশেষ করে শান্তিনগর কাকরাইল এলাকাগুলোতে মানুষের চাপ দেখা যাচ্ছে। এসব এলাকায় যানবাহ চলাচলে ব্যাহত হচ্ছে।
বিকালে অফিস শেষে ঘরমুখো মানুষেরাও পড়েছেন ভোগান্তিতে। যানজট আরও বাড়তে পারে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, শান্তিনগর ছাড়া অন্যসব এলাকা এখন পর্যন্ত স্বাভাবিক রয়েছে। তবে বিকালের পর কী হবে এখনই বলা যাচ্ছে না। তবে সড়কে যান চলাচল গতিশীলতা রাখতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।