রমজান আলী রুবেল, শ্রীপুর, গাজীপুর প্রতিনিধিঃ শ্রীপুরে কারখানার পাশের দোকানের সামনে চলা লুডু খেলার ভিডিও ধারণ করেন তিন যুবক। পরে নিজেদেরকে পুলিশ পরিচয় দিয়ে লুডু খেলতে থাকা লোকজনের কাছ থেকে টাকা দাবি করে। এসময় তাদের কথাবার্তায় সন্দেহ হলে এলাকাবাসী তাদের আটক করে গণধোলাই দেয়। পরে জাতীয় জরুরি পরিসেবার নম্বর ৯৯৯-এ ফোন করে পুলিশে খবর দিলে ওই তিন যুবককে আটক করে থানা পুলিশ। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের ফরিদপুর গ্রামে।
মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) সকালের দিকে শ্রীপুর থানা পুলিশ বাংলাদেশ সমাচারকে এমন তথ্য জানিয়েছেন। এরআগে,সোমবার রাত সাড়ে ১১ টার দিকে ফরিদপুর গ্রামের হা-মিম নামক পোশাক কারখানার পাশ থেকে তাদের গণধোলাই দেয়।
আটককৃতরা হলেন- শ্রীপুর উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের তেলিহাটি গ্রামের মো. আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে মিলন মিয়া, একই ইউনিয়নের মূলাইদ গ্রামের সাইজ দ্দিনের ছেলে সোহেল রানা ও জুয়েল রানা।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে স্থানীয় মিজানুর রহমান জানান, সোমবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে কয়েকজন ব্যক্তি হা-মিম পোশাক কারখানার পাশের একটি দোকানের সামনে বসে লুডু খেলছিলেন। এ সময় ওই তিন যুবক এসে নিজেদেরকে পুলিশ পরিচয় দিয়ে লুডু খেলার ভিডিও ধারণের পর টাকা দাবি করে। পুলিশ পরিচয় দানকারীদের কথাবার্তা সন্দেহ হলে এলাকাবাসী তাদের আটক করে গণধোলাই দেয়। পরে জাতীয় জরুরি পরিষেবার নম্বর ৯৯৯-এ ফোন করে পুলিশে খবর দেওয়া হয়। খবর পেয়ে রাত ১২টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ওই তিন যুবককে আটক করে থানা হেফাজতে নিয়ে যায়।
অভিযুক্ত সোহেল রানা ও জুয়েল রানার মোলাইদ গ্রামে গিয়ে আরো চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া যায়। সেখানকার স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, তিন অভিযুক্ত ব্যক্তি দীর্ঘদিন ধরে এলাকার মধ্যে মাদক সন্ত্রাস চাঁদাবাজি করে আসছে। অভিযুক্ত জুয়েল, সোহেল ও মিলন পুলিশ পরিচয় দিয়ে, রিপন মিয়ার মুদির দোকানে ঢুকে দোকান তল্লাশি নামে অভিযুক্ত মিলনের পকেট থেকে গাঁজার তুবলা দোকানে রেখে দোকানি কে ফাঁসাতে চেয়েছিল, পরে এলাকার মানুষ বিষয়টি দেখে ফেলায় তাদেরকে সেখান থেকে তাড়িয়ে দেয়। অভিযুক্তদের নিজ এলাকা মোলাইদ গ্রামে প্রায় শতাধিক পরিবারকে পুলিশ পরিচয় দিয়ে এবং ভুয়া পুলিশ এনে তাদেরকে হয়রানি করে আসছে এই চক্রটি। গত কয়েক মাসে এই তিনজনের বিরুদ্ধে শ্রীপুর মডেল থানায় ৪-৫টি অভিযোগ করেও এই চক্রটির হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে না এলাকার মানুষ।
উপজেলা স্থাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা: আজরিনা আফরিন জানান, গতরাত ১টার দিকে পুলিশ তিন যুবককে হাসপাতালে নিয়ে আসলে তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয় । তাদের শরীরে কিল-ঘুষির আঘাতের চিহ্ন ছিল। কোনো গুরুতর জখম ছিল না।
শ্রীপুর থানার উপপরিদর্শক (এস.আই) আবু রায়হান জানান, ৯৯৯-এর ফোন পেয়ে সোমবার রাত ১২টার দিকে ঘটনাস্থল থেকে ওই তিন যুবককে আটক করা হয়। রাতেই তাদের শ্রীপুর হাসপাতালে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে থানা হেফাজতে আনা হয়েছে।
এ বিষয়ে শ্রীপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি,
এ এফ এম নাসিম, বাংলাদেশ সমাচারকে জানান, গতকাল রাতে পুলিশ পরিচয়ে চাঁদাবাজি করতে গেলে তিনজনকে হাতেনাতে আটক করে জনতা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে তাদেরকে উদ্ধার করে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়। ১৭ অক্টোবর সকালে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে নিয়মিত আইনে মামলা করে তাদেরকে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে থানায় আরো একাধিক অভিযোগ রয়েছে সে ব্যাপারেও তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।