চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী প্রতি সরকার গড়ে ৫০ হাজার টাকা ব্যয় করছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক। আজ রোববার বিকেলে রাজধানীর শেরাটন হোটেলে ডেঙ্গু মোকাবেলায় করণীয় শীর্ষক মতবিনিময় সভায় তিনি এ তথ্য জানান।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে ৭০ শতাংশ চিকিৎসা নিচ্ছেন সরকারি হাসপাতালে। আর বাকি ৩০ শতাংশ রোগী বেসরকারি হাসপাতালে যাচ্ছেন। অধিকাংশ রোগী সরকারিতে নেওয়ায় ব্যয় বেশি। সাধারণত দুই ধরণের ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে। অনেকের প্লাটিলেট ও আইসিইউ প্রয়োজন হয়। অনেকে শুধু ওষুধেই সুস্থ হয়।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘সরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গুর চিকিৎসা বিনামূল্যে দেওয়া হচ্ছে। সরকার গড়ে রোগী প্রতি ৫০ হাজার টাকা ব্যয় করছে। সেই হিসেবে চলতি মৌসুমে প্রায় ৪০০ কোটি টাকা ডেঙ্গু চিকিৎসায় ব্যয় করেছে সরকার। কোনো রোগী যাতে চিকিৎসার বাইরে না থাকা সেই চেষ্টা চালাচ্ছি আমরা।’
ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সমন্বয়হীনতার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘মানুষের জীবন ও চিকিৎসা নিয়ে এখানে কাজ করছি, কাউকে দোষারোপ করার জন্য নয়। আমরা কাউকে দোষ দিচ্ছি না। ডেঙ্গু সুরক্ষায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একার কাজ নয়। স্থানীয় সরকার, পরিবেশসহ অনেক মন্ত্রণালয় ও বিভাগের দায়িত্ব রয়েছে।’
জাহিদ মালেক আরও বলেন, ‘ডেঙ্গুতে পুরুষরা বেশি আক্রান্ত হলেও নারীদের বেশি মৃত্যু হচ্ছে। মোট মৃত্যুর ৬৫ ভাগই নারী। চিকিৎসার প্রতি অবহেলার কারণে তাদের মৃত্যুহার বেশি। তাই নারীদের চিকিৎসার প্রতি আমাদের আরও যত্নবান হতে হবে। যারা দেরিতে চিকিৎসা নিতে আসছেন, তারাই বেশি মারা যাচ্ছেন। পাশাপাশি যারা একাধিকবার আক্রান্ত হন, তাদের মৃত্যুহার বেশি।’
এডিশ মশা নির্মূলে সিটি করপোরেশনের ব্যবহৃত ওষুধের বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, মশা নিধনে যেভাবে ডোবা-নালায় স্প্রে হওয়া দরকার, সেভাবে হচ্ছে না। স্কুলেও অনেক বাচ্চা আক্রান্ত হচ্ছে। কিন্তু সেখানে ঠিকমতো মশা নিধনের স্প্রে হচ্ছে না বলে মনে হচ্ছে। পাশাপাশি কল কারখানায় যাতে নিয়মিত স্প্রে হয়, সেটি তদারকি করতে হবে। যেসব মশা জন্মাচ্ছে, সেগুলো নিয়েও গবেষণা হওয়া দরকার।
এ সময় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (রোগ নিয়ন্ত্রণ) অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম বলেন, মানুষের আচরণগত পরিবর্তন অনেক কঠিন কাজ। পাশাপাশি লজিস্টিক সাপোর্ট। সরকারি প্রতিষ্ঠানে সবসময়ই কিছু ঘাটতি থাকে, সেটা মোকাবেলা করার চেষ্টা চলছে। সময়মত মশা নিধন, জনসম্পৃক্ততা বাড়ানো না গেলে সংক্রমণ ও মৃত্যু ঠেকানো সম্ভব নয়।