সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আত্মসমর্পণ করেছেন। তবে মাত্র ২০ মিনিট জর্জিয়ার ফুলটন কান্টি কারাগারে থাকার পর জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। এ নিয়ে তিনি চতুর্থবারের মতো আত্মসমর্পণ করলেন। তবে প্রথম মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে কারাগারে তার মাগশট গ্রহণ করা হয়েছে। সরকারি কাজে ব্যবহারের জন্য কারাবন্দীদের তোলা ছবিকে সাধারণভাবে মাগশট বলা হয়। এটিকে খুবই অমর্যাদাজনক বিবেচনা করা হয়। ২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অনিয়ম করার দায়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
ট্রাম্প কারাগার থেকে বের হওয়ার পরই তার মাগশট প্রকাশ করা হয়। এতে দেখা যায়, সাবেক প্রেসিডেন্ট নীল ব্লেজার এবং লাল টাই পরে আছেন, ক্যামেরার দিকে তীর্যকভাবে তাকিয়ে রয়েছেন।
কারাগার থেকে বের হওয়ার পর ৭৭ বছর বয়স্ক যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক কমান্ডার-ইন-চিফকে হার্টসফিল্ড-জ্যাকসন ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তিনি টারমাকে সাংবাদিকের সাথে কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা কোনো অন্যায় করিনি। আমি কোনোই ভুল কিছু করিনি, সবাই জানে তা।’ তিনি আরো বলেন, ‘তারা যা করছে, তা আসলে নির্বাচনী হস্তক্ষেপ এবং তারা একটি নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করার চেষ্টা করছে। আমাদের দেশে এমনটি আগে কখনো ছিল না। এটাই তাদের নির্বাচনী প্রচারণার পন্থা… আমরা মোটেই কোনো অন্যায় করিনি, আমরা পুরোপুরি ঠিক পথে রয়েছি, একেবারে প্রতিটি পর্যায়ে। আমরা এমন এক নির্বাচনকে চ্যালেঞ্জ করছি, যাকে আমরা মনে করি অন্যায়। আমরা মনে করি, এটি খুবই অন্যায়।’
ট্রাম্প এনজে গলফ ক্লাবের বেডমিনিস্টার থেকে জর্জিয়া রওনায় হওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগেই তার সমর্থক ও প্রতিপক্ষ লোকজন আটলান্টার কেন্দ্রস্থলে হাজির হতে থাকে। তারা ট্রাম্পকে সরাসরি একনজর দেখতে খুবই আগ্রহী ছিল। তবে এখানে তার বিরুদ্ধে থাকা লোকজনের চেয়ে তার সমর্থকের সংখ্যা ছিল অনেক বেশি। তারা তাকে নির্দোষ মনে করে।
ট্রাম্প বৃহস্পতিবার চতুর্থবারের মতো ফৌজদারি অভিযোগে আত্মসমর্পণ করলেন। কিন্তু এখানেই প্রথমবারের মতো তার মাগশট গ্রহণ করা হয়।
ট্রাম্পের বিরুদ্ধে আনা অন্যান্য অভিযোগের মধ্যে রয়েছে জাতীয় নিরাপত্তা তথ্য তার মার-এ-লাগো এস্টেটে নিয়ে যাওয়া, ফেডারেল পর্যায়ে জো বাইডেনের কাছে পরাজিত হওয়া ২০২০ সালের নির্বাচনীয় ফলাফল উল্টে দেওয়ার চেষ্টা করা, পর্ন স্টার স্টোমি ড্যানিয়েলসকে গোপনে অর্থ দিয়ে মিথ্যা সাক্ষী দেওয়ানোর ব্যবস্থা করা।
ট্রাম্পের আইনজীবী এবং ফুলটন কান্টি ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি ফ্যানি উইলস সোমবার এই মামলায় ট্রাম্পের দুই লাখ ডলারে জামিনের ব্যাপারে একমত হয়েছিলেন। মামলার ১৯ আসামির মধ্যে এটিই ছিল সর্বোচ্চ পরিমাণ অর্থ। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বন্ড প্রদান করেন সাবেক মেয়র এবং ট্রাম্পের আইনজীবী রুডি গুইলিয়ানি। তিনি বুধবার দেড় লাখ ডলার দিয়ে জামিনে মুক্তি পান।
এই মামলায় অন্যান্য আসামির মধ্যে রয়েছেন সাবেক কফি কান্টির জিওপি চেয়ার ক্যাথি লাথাম, ট্রাম্পের সাবেক আইনজীবী কেনেথ চেসেব্রো, জর্জিয়ার সাবেক স্টেট সিনেটর ডেভিড শেফার, জর্জিয়ার আইনজীবী রে স্মিথ, ট্রাম্পের সাবেক নির্বাচনী আইনজীবী সিডনি পাওয়েল। তারা সবাই বুধবার আত্মসমর্পণ করেছিলেন। হোয়াইট হাউজের সাবেক চিফ অব স্টাফ মার্ক মিডোস বৃহস্পতিবার বিকেলে আত্মসমর্পণ করে এক লাখ ডলারের বন্ডে মুক্তি পান।
সূত্র : আল জাজিরা, বিবিসি, সিএনএন এবং অন্যান্য