পুলিশ অনুমতি না দিলেও সরকার পতনে দলের এক দফা দাবিতে রাজধানীর প্রবেশমুখে ৫ ঘণ্টার অবস্থান কর্মসূচি পালন করবে বিএনপি। আজ বেলা ১১ থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত রাজধানীর ৫টি প্রবেশমুখে কর্মসূচি পালন করবে দলটি। গতকাল রাতে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে রুহুল কবির রিজভী এ কথা বলেন।
রাজধানী যে ৫টি প্রবেশমুখে আজ বিএনপি অবস্থান কর্মসূচি পালন করবে সেগুলো হলো- গাবতলী, উত্তরা, নয়াবাজার ইউসুফ মার্কেট, শনির আখড়া এবং মুক্তি স্মরণী।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আমাদের সময়কে বলেন, ‘আমরা গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠায় দেশের জনগণকে সঙ্গে নিয়ে শান্তিপূর্ণ উপায়ে যুগপৎ ধারায় কর্মসূচি করছি। আমরা মনে করি, চলমান গণতান্ত্রিক এই আন্দোলন কর্মসূচিতে যারাই বাধা দেবে বা সন্ত্রাসী কায়দায় হামলা করবে তারাই সন্ত্রাসী। হোক সে রাষ্ট্রীয় কোনো বাহিনী অথবা কোনো রাজনৈতিক দলের ক্যাডার। আমরা আমাদের গণতান্ত্রিক আন্দোলন চালিয়ে যাব।’
মহাসমাবেশের প্রসঙ্গ টেনে সংবাদ সম্মেলনে রুহুল কবির রিজভী বলেন, আজকের মহাসমাবেশ ছিল ঐতিহাসিক এবং সাম্প্রতিককালের এক অবিস্মরণীয় জমায়েত। এই জমায়েতকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য পুলিশ এবং আওয়ামী সন্ত্রাসীরা ঢাকাসহ দেশব্যাপী মহাতাণ্ডব শুরু করে। ঢাকার বিভিন্ন প্রবেশপথে বিভিন্ন জেলা থেকে আগত নেতাকর্মীদেরকে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়েছে, যানবাহন থেকে নামিয়ে দেওয়া হয়েছে, পকেট তল্লাশী করা হয়েছে, মোবাইল ফোন চেক করা হয়েছে, ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় বাসসহ বিভিন্ন যানবাহন বন্ধ করার পরেও মানুষের ধাবমান স্রোতকে রুদ্ধ করা যায়নি। হিংসা-প্রতিহিংসার রাজনীতিকে মানুষ যে ঘৃণা করে, আজকের মহাসমাবেশে অংশগ্রহণ করে এটিরই জবাব দিয়েছে বিপুল মানুষ।
তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনার স্বেচ্ছাতন্ত্র এখন পচে গলে বিকৃত হয়ে গেছে। স্বৈরাচারের উগ্র প্রতিমূর্তি শেখ হাসিনার সরকারের পতন অনিবার্য। মহাসমাবেশ থেকে ঘোষিত রাজধানীর সব প্রবেশপথের অবস্থান কর্মসূচির বিষয়ে পুলিশকে অবহিত এবং সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জাতিকেও জানানো হয়েছে।
অবস্থান কর্মসূচিতে কে কোথায় থাকবেন
যাত্রাবাড়ি হানিফ ফ্লাই ওভার থেকে নেমে চট্টগ্রাম রোড দনিয়া কলেজ সংলগ্ন সড়কে অবস্থান কর্মসূচির নেতৃত্ব দেবেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। এছাড়াও থাকবেন বিএনপির বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক সালাউদ্দিন আহম্মেদ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিন।
নয়া বাজার বিএনপি অফিস সামনে অবস্থান কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেবেন স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। আরও থাকবেন সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট নিপুণ রায় চৌধুরী, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সদস্য প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন।
উত্তরায় বিএনএস সেন্টারের কাছে অবস্থান কর্মসূচির নেতৃত্ব দেবেন স্থায়ী কমিটির সদস্য বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান, আরও থাকবেন মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হক ও নির্বাহী কমিটির সদস্য তাবিথ আউয়াল।
গাবতলী এস এ খালেক বাস স্টেশন সামনে অবস্থান কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেবেন স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। আরও থাকবেন মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান।
এছাড়াও আজ গণতন্ত্র মঞ্চ গাবতলী মিরপুর মাজার রোড, ১২ দলীয় জোট চট্টগ্রাম রোড দনিয়া কলেজের সামনে, গণফোরাম ও পিপলস পার্টি মতিঝিল নটরডেম কলেজ উল্টো দিকে গণফোরাম চত্বরে, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট চট্টগ্রাম রোড সাইনবোর্ড পার হবার আগে, এলডিপি উত্তর আজমপুর বাস স্টেশন সংলগ্ন এবং গাবতলী টেকনিক্যাল মোড়, যাত্রাবাড়ী মোড়, গণঅধিকার পরিষদ (নুর) উত্তর আজমপুর ওভার ব্রিজ ও চট্টগ্রাম রোড শনির আঁকড়া ওভার ব্রিজ সংলগ্ন, এনডিএম চট্টগ্রাম রোড সাইনবোর্ড সংলগ্ন গণ অধিকার পরিষদ (রেজা) রেজা কিবরিয়া ও ফারুক হাসান নেতৃত্বে মিরপুর মাজার রোড ও যাত্রা বাড়ি দনিয়া কলেজের সামনে অবস্থান করবে।
এদিকে রুহুল কবির রিজভী জানান, মহাসমাবেশ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে গতকাল শুক্রবার ৬’শ ১৩ জন নেতাকর্মীকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। অবিলম্বে যে সকল নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি করছি।