সাংবাদিকরা সবসময় ময়লা খোঁজেন বলে দাবি করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে একটি বইয়ের প্রকাশনা উৎসব শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ মন্তব্য করেছেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী রোম সফর করে ঢাকায় ফিরেছেন। হিরো আলমকে নিয়ে বিবৃতি দেওয়া দেশগুলোর মধ্যে ইতালিও ছিল। দেশটির সরকারপ্রধান থেকে শুরু করে মন্ত্রীপর্যায়ে এ বিষয়ে কোনো অসন্তোষ জানানো হয়েছে কি না?- এমন প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা এটা নিয়ে কিছু বলিনি। এটা ভদ্রতার জায়গা। আপনারা (সাংবাদিকরা) ময়লা, এগুলো নিয়ে আলাপ করবেন। আমরা এটা নিয়ে আলাপ করিনি। আর আপনারা সবসময় ময়লা খোঁজেন। আপনাদের অভ্যাসটা খারাপ হয়ে গেছে।’
আব্দুল মোমেন বলেন, ‘আপনাদের (সাংবাদিকদের) কারণে বিদেশি রাষ্ট্রদূতরা বিভিন্ন অভ্যন্তরীণ বিষয়ে মাতুব্বরি করেন। এটা একটা, সাম হাউ, এটা একটা কালচার তৈরি হয়েছে অনেক দিন ধরে। এটা বন্ধ করা উচিত, এখনই বন্ধ করার সময়।। এখন সময় এসেছে এটা বন্ধ করার।’
রাজনীতিবিদরাও তো নানা কারণে যাচ্ছে (বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের কাছে), দুই দলেরই- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘সেটা অনেক দিন ধরে কালচার তৈরি করেছেন। আমরা এই কালচারটা পছন্দ করি না।’
অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বিদেশিদের বক্তব্য বা হস্তক্ষেপ বন্ধে সরকার কোনো উদ্যোগ নিয়েছে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর রোম সফরে ইউরোপে নিযুক্ত বাংলাদেশি দূতদের নিয়ে বৈঠকের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশের রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে একটা বৈঠক করেছি। সেখানে আমরা বলেছি, আমাদের দেশ সম্পর্কে অনেক দেশের জ্ঞান সীমিত। আমরা বিভিন্ন ইস্যুতে মানবাধিকার, গণতন্ত্র, নির্বাচন প্রক্রিয়া, নির্বাচন কমিশন- এসব নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রায় ১০টি বিশেষ ব্রিফ তৈরি করেছে। আমরা বলেছি, আপনারা এটা শেয়ার করেন।’
ড. মোমেন বলেন, ‘এমনকি আগুন-সন্ত্রাসী নিয়েও বই তৈরি করেছি আমরা। আমরা বলেছি, আপনারা (বাংলাদেশি দূত) ওদের (বিদেশি) সঙ্গে শেয়ার করবেন, জানান দেবেন। এগুলো নিয়ে জানাবেন। তাতে তারা আহমকের মতো হঠাৎ করে বিবৃতি দেবে না। কেউ একজন তাকে (বাংলাদেশি নাগরিক) ধরল আর সে না জেনে কথা বলে দিল!’
তিনি বলেন, ‘কখনো কখনো তার তহবিলে পয়সা দিল, আর তারা বলে ফেলল। এজন্য আপনাদের (বাংলাদেশি দূত) এটা বড় দায়িত্ব। আপনারা তাদের সঙ্গে (বিদেশি) সাক্ষাৎ করে বড় বড় ইস্যু সম্পর্কে জানান দেবেন। এ ব্যাপারে তাদের জ্ঞান বাড়বে।’
সম্প্রতি অনুষ্ঠিত ঢাকা- ১৭ আসনের উপনির্বাচনের স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল হোসেন আলম ওরফে হিরো আলমের ওপর হামলার ঘটনায় বিবৃতি দেয় ঢাকায় অবস্থিত ১৩টি পশ্চিমা মিশন। ওই বিবৃতির পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল বুধবার পশ্চিমা ১৩ মিশনকে ডেকে ঢাকার অসন্তোষের কথা জানায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।