‘কেউ বলে কসাই ডাক্তার, কেউ বলে ডাইনি’

Slider ফুলজান বিবির বাংলা

সেন্ট্রাল হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় নবজাতকের পর মারা গেছেন মাহবুবা রহমান আঁখি। তাদের চিকিৎসায় ‘প্রথম গাফিলতি’ গাইনি ও প্রসূতি বিভাগের চিকিৎসক সংযুক্তা সাহার ছিল বলে দাবি করেছে হাসপাতালটি কর্তৃপক্ষ। তবে এ ঘটনায় কোনো দায় নিতে নারাজ এই চিকিৎসক।

আজ মঙ্গলবার রাজধানীর পরীবাগে নিজ বাসায় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ডা. সংযুক্তা সাহা জানান, হাসপাতালের ষড়যন্ত্রের কারণেই এখন তার বিরুদ্ধে কুৎসা রটানো হচ্ছে। কেউ তাকে ‘কসাই ডাক্তার’, আবার কেউ ‘ডাইনি’ বলছে।

সংযুক্তা সাহা বলেন, ‘হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের ষড়যন্ত্রের দরুন আমার নামে বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় যে কুৎসা রটনা হচ্ছে। এমন কোনো গালমন্দ নেই যা আমার শোনা বাকি আছে। কেউ বলে কসাই ডাক্তার, কেউ বলে দুর্নীতিবাজ, কেউ বলে প্রতারক, কেউ বলে ডাইনি। এটা খুবই দুঃখজনক।’

তিনি বলেন, ‘সবাইকে বলতে চাই, প্রয়াত মাহবুবা রহমান আঁখি এবং উনার নবজাতক সন্তানের অকাল মৃত্যুর জন্য আপনাদের মতো আমিও শোকে স্তব্ধ। আমাকে এসব নামে আখ্যায়িত করার আগে একবার ভাবুন, আমি একজন মা, আপনাদেরই বোন। উনারা ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে আমার বিরুদ্ধে মিডিয়া ট্রায়েলের অপচেষ্টায় লিপ্ত। হয়তবা উনারা সফলও। কারণ আমার যা ক্ষতি হওয়ার তা হয়ে গেছে।’

ওই রোগীকে ভর্তি করার বিষয়ে কিছু জানতেন না দাবি করে এই চিকিৎসক বলেন, ‘আমি সেন্ট্রাল হাসপাতালকে ওপেন চ্যালেঞ্জ দিচ্ছি, আমার সাথে যে কথা হয়েছিল প্লিজ সেই কল লিস্ট নিয়ে আসেন। ভিডিও কল হয়ে থাকলে তার ডিজিটাল প্রিন্ট নিয়ে আসেন। আর যদি না পারেন তবে জনসম্মুখে আপনাদের ক্ষমা চাইতে হবে।’

সংযুক্তা সাহা আরও বলেন, ‘যে মানুষটা দেশেই নাই তার নাম করে কেন রোগী ভর্তি করবেন? এটা কার স্বার্থে? আমি যদি অপারেশন না করি, যদি নাই থাকি, তাহলে রোগী ভর্তি করালেন কোন আক্কেলে? এটা অবশ্যই একটা বেআইনি ব্যবস্থা।’

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে না জানিয়েই ডা. সংযুক্ততা সাহা বিদেশে গিয়েছিলেন বলে দাবি করেছেন সেন্ট্রাল হাসপাতালে ম্যানেজার (বিজনেস ডেভেলপমেন্ট) মো. মামুনুর রশিদ রাসেল। তিনি আমাদের সময়কে বলেন, ‌‘হাসপাতালের নিয়ম অনুযায়ী কোনো চিকিৎসক ছুটিতে যেতে চাইলে অন্তত তিন দিন আগে কর্তৃপক্ষকে চিঠির মাধ্যমে জানাতে হয়। সে অনুযায়ী রোগীদের স্বার্থে নোটিশ টাঙানো হয়। কিন্তু ডা. সংযুক্তা এগুলোর কোনটাই করেননি।’

মো. মামুনুর রশিদ রাসেল আরও বলেন, ‘ঘটনার দিন ৯ জুন ডা. সংযুক্তা যে হাসপাতাল ছেড়ে গেছেন, সেটিও আমাদের অবহিত করেননি। আঁখিকে হাসপাতালে ভর্তির আগে আমরা জানতাম না তিনি নেই। অস্ত্রোপচার হওয়ার পর জটিলতা দেখা দিলে পরদিন ভোরে আমরা জানতে পারি, সংযুক্তা সাহা দেশের বাইরে যাচ্ছেন।’

এর আগে গতকাল সোমবার সেন্ট্রাল হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. এ টি এম নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আঁখির চিকিৎসায় প্রথম গাফিলতি ছিল ডা. সংযুক্তা সাহার। পাশাপাশি যারা অস্ত্রোপচার করেছেন, তাদের অবহেলা ছিল। কারণ, ওই সময় তারা সিনিয়র ডাক্তারদের ডাকেননি। গাফলতি ছিল হাসপাতালেরও।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *