জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের বলেছেন, ‘দেশের বর্তমান শাসন পদ্ধতিতে শতকরা একশভাগ ক্ষমতা প্রধানমন্ত্রীর হাতে। মন্ত্রিসভা ও সংসদ পরিবর্তন করে কোনো লাভ নেই। নিজের অধীনে নির্বাচনে কেউ পরাজিত হতে চাইবে, এটা আশা করা পাগলামি। বর্তমান পদ্ধতিতে কোনোভাবেই সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।’
আজ সোমবার দুপুরে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের বনানীর কার্যালয় মিলনায়তনে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলোচনার সময় তিনি এ কথা বলেন। এ সময় চেয়ারম্যানের প্রেস সচিব-২ খন্দকার দেলোয়ার জালালী উপস্থিত ছিলেন।
জি এম কাদের বলেন, ‘নির্বাচনব্যবস্থা সরকারের ক্ষমতার বাইরে আনতে হবে। ১৯৯০ সালে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জামায়াতসহ সবাই এরশাদ সাহেবের বিপক্ষে আন্দোলন করেছে। আবার বিএনপির বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি ও জামায়াতসহ সবাই আন্দোলন করেছে ১৯৯৬ সালে। যখন বিএনপি নির্বাচনব্যবস্থা কুক্ষিগত করতে চেয়েছিল, তখনকার বিরোধীদলীয় নেতা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘‘চিরস্থায়ীভাবে আমরা তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা চাই।’’ ২০০৬ সালের পর বিএনপি আবার তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা প্রভাবিত করতে চেয়েছিল। তখন জাতীয় পার্টি, আওয়ামী লীগসহ সবাই মিলে আন্দোলন করেছিলাম।’
তিনি আরও বলেন, ‘পরবর্তী সময়ে ওয়ান-ইলেভেন সরকার আসে। সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন করতে হবে এর কোনো অর্থ নেই। কারণ, ১৯৯১ সালে ও ২০০৮ সালে সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হয়নি। শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়া সব সময় সংবিধান মানেননি। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের যে ব্যবস্থা ছিল, তা এখন বাতিল হয়েছে।’
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, ‘তাই এখন একটি নতুন ব্যবস্থা করা জরুরি। কোনো সরকার যাতে নির্বাচনব্যবস্থা প্রভাবিত করতে না পারে। সরকার যদি আগ্রহ দেখায়, অথবা সবাই যদি একটি ফর্মুলায় আসতে চায়, তবে আমরাও একটি প্রস্তাব দেব। আমরা যে প্রস্তাব দেব তা হয়তো শতভাগ গ্রহণযোগ্য হতে নাও পারে। তবে, সবার আলোচনার মাধ্যমে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য একটি চিরস্থায়ী ব্যবস্থা হতে পারে। সে জন্য সরকারকে আন্তরিকভাবে এগিয়ে আসতে হবে।’
‘আওয়ামী লীগ প্লাস’ বিষয়ে অপর এক প্রশ্নের জবাবে জি এম কাদের বলেন, ‘বাংলাদেশে এখন গণতন্ত্র নেই। যদি গণতন্ত্র সংজ্ঞায়িত করি গভর্নমেন্ট অব দ্য পিপল, বাই দ্য পিপল, ফর দ্য পিপল। আর রাজতন্ত্র যদি হয় গভর্নমেন্ট অব দ্য কিং, বাই দ্য কিং, ফর দ্য কিং। তাহলে এখন আমাদের দেশে গভর্নমেন্ট অব দ্য আওয়ামী লীগ প্লাস, বাই দ্য আওয়ামী লীগ প্লাস, ফর দ্য আওয়ামী লীগ প্লাস।’