ঢাকা-লক্ষ্মীপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের জকসিন বাজারে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন করেন সন্তানরা। এ সময় স্বজন ও এলাকাবাসী উপস্থিত ছিলেন। ছবি: আমাদের সময়
লক্ষ্মীপুরে স্বামীর পরকীয়া প্রেমে বাধা দেওয়ায় নির্যাতন করা হয় সেলিনা আক্তার নামের গৃহবধূকে। নির্যাতনের একপর্যায়ের নৃশংসভাবে তাকে হত্যা করেন প্রবাসফেরত স্বামী জসীম উদ্দিন।
সোমবার সকালে ঢাকা-লক্ষ্মীপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের জকসিন বাজারে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন থেকে এসব অভিযোগ করেন স্বজন ও এলাকাবাসী। কর্মসূচি থেকে বাবার গ্রেপ্তার ও ফাঁসির দাবি জানান সন্তানরা।
তাদের অভিযোগ, মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন প্রভাবিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। মামলা হলেও প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন জসীম।
কর্মসূচিতে অংশ নেন নিহতের চার ছেলেমেয়ে। তারা হলেন রোজিনা আক্তার, আসমা আক্তার, লাভলী আক্তার ও আব্দুল আজিজ। এ ছাড়া এলাকার অনেকেই মানববন্ধনে অংশ নেন।
এ সময় নিহতের ভাই মোক্তার হোসেন জানান, সদর উপজেলার বাঙ্গাখাঁ ইউনিয়নের কাচারী বাড়ির প্রবাসী জসীম উদ্দিন তার ভগ্নিপতি। অর্থের লোভ দেখিয়ে তিনি বিভিন্ন নারীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন। ওই নারীদের অনেককে তিনি বিদেশে নিয়ে শারীরিক সম্পর্ক করেছেন। সবশেষ এক নারীর সঙ্গে পরকীয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে জসীমের সঙ্গে ঝগড়া হয় স্ত্রী সেলিনা আক্তারের। এর জের ধরে গত ২৭ মে সেলিনাকে বাবার বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে নির্মমভাবে নির্যাতন শেষে হত্যা করেন। পরে মুখে বিষ ঢেলে দেন।
মোক্তার হোসেন আরও জানান, ওই ঘটনায় সদর থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ প্রভাবিত হয়ে মামলা গ্রহণ করেনি বলে দাবি করেন নিহতের ভাই। এ ছাড়া মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে সদর হাসপাতালের চিকিৎসককে প্রভাবিত করে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে হত্যাকে আত্মহত্যার ঘটনা বলে সাজানো হয়। এ কারণে ঘটনার এক সপ্তাহ পর বোনের হত্যার বিচার চেয়ে লক্ষ্মীপুর আদালতে অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। এতে ভগ্নিপতি জসীমসহ ১২ জনকে অভিযুক্ত করা হয়। এ ঘটনার বিচারিক তদন্ত সাপেক্ষে খুনিদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন তিনি।
মানববন্ধনে অংশ নিয়ে বাবার বিচার দাবি করেন তিন ছেলে ও এক মেয়ে। এ সময় বড় মেয়ে রোজিনা আক্তার কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, তাদের বাবা পরকীয়া প্রেমে জড়িত ছিলেন। তার মা সেলিনা এসবে বাধা দেন। এর জেরে বাবা তার মাকে নির্মমভাবে নির্যাতন করে হত্যা করেন। তাই মায়ের হত্যাকারী বাবা জসীমের ফাঁসির দাবি জানান তিনি।
এ বিষয়ে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোসলেহ উদ্দিন বলেন, এ ঘটনায় থানায় অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত করছে পুলিশ।