কোপার সব সেমিফাইনালিস্ট কোচ আর্জেন্টিনার

জাতীয়

Tata_MotinBG_103679702

ঢাকা: লাতিন আমেরিকার প্রশান্ত মহাসাগরবর্তী দেশ চিলিতে চলছে ‘লাতিন বিশ্বকাপ’ কোপা আমেরিকা। গ্রুপ পর্ব ও কোয়ার্টার ফাইনালের লড়াই শেষে মাঠের যুদ্ধ গড়িয়েছে সেমিফাইনালে। এ সেমিফাইনালের লড়াই উতরে দু’বারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা ফাইনালে উঠবে কি? সেটা দেখতে অপেক্ষা করা লাগলেও এ কথা বলা যাচ্ছে, আর্জেন্টাইন কোচের শিষ্যরাই উঠছে ফাইনালে!

কী? পরস্পরবিরোধী কথা হয়ে গেলো? ব্যাপারটি সত্যিই মজার। আসলে কোপা আমেরিকার সেমিফাইনালিস্ট আর্জেন্টিনা, চিলি, প্যারাগুয়ে ও পেরু দলের চার কোচই জন্মসূত্রে আর্জেন্টাইন। যথাক্রমে জেরার্দো মার্টিনো, জর্জ সাম্পাওলি, রামোন দিয়াস এবং রিকার্দো গারেকার শিষ্যরাই লড়ছে কোপা আমেরিকার শিরোপা জেত‍ার লড়াইয়ে।

বিষয়টি নিয়ে দারুণ উচ্ছ্বসিত প্যারাগুয়ের কোচ রামোন দিয়াস। ব্রাজিলকে হারিয়ে সেমিফাইনালে উঠে তিনি বলে দেন, ‘এটা খুব গর্বের ব্যাপার। এতে প্রমাণ হল, আর্জেন্টিনা কেবল বিশ্বে সেরা ফুটবলারদেরই তৈরি করে না, সেরা কোচও তৈরি করে।’

দিয়াসের জন্ম লা রিওজায় ১৯৫৯ সালে। স্ট্রাইকার হিসেবে চার বছর খেলেছেন আর্জেন্টিনা দলে। দেশের হয়ে দশ গোল আছে তার। ১৯৯৫ সালে কোচিং শুরু করেন রিভার প্লেট ক্লাবে। গত বছর প্যারাগুয়ের দায়িত্ব নেন। আর এবারই সবাইকে চমকে দিয়েছেন কোপায়। ব্রাজিলকে হারিয়ে সেমিফাইনালে উঠে গেছে ৫৫ বছর বয়সী এ কোচের প্যারাগুয়ে।

সাম্পাওলি ষাটের দশকে জন্ম নেন আর্জেন্টিনার সান্তা ফে-তে। খেলোয়াড় জীবনে এ ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার অবশ্য খুব বেশি উজ্জ্বল ছিলেন না। ১৯৭৭ থেকে ১৯৭৯ পর্যন্ত মাত্র দু’বছর নিউওয়েলস ওল্ড বয়েজে খেলেন। এই সময়ে চোট পেয়ে হারিয়ে যান তিনি। মাত্র ১৯ বছরে শেষ হয়ে যায় সাম্পোলির খেলোয়াড় জীবন। এরপর ২০০২ সালে শুরু করেন কোচিং। ২০১২ সাল থেকে তিনি রয়েছেন চিলির দায়িত্বে। গত বিশ্বকাপের পর এবারও তার অধীনে দুরন্ত কোপা আমেরিকা খেলছে স্বাগতিক চিলি।

রিকার্দো আলবার্তো গারেকার জন্ম ১৯৫৮ সালে তাপিয়ালেসে। রামোন দিয়াসের মতো গারেকাও আশির দশকের শুরুতে বিক্ষিপ্তভাবে পাঁচ বছর খেলেছেন আর্জেন্টিনা দলে। ফরোয়ার্ড পজিশনে খেলে করেছিলেন ২০ ম্যাচে ৫ গোল। ১৯৯৬ সালে সালে প্রথম কোচিংয়ে আসেন। কোচিংয়ে ছিরেন ব্রাজিলের ক্লাব পালমেইরাসে। সম্প্রতি পেরুর কোচ হয়েছেন। দায়িত্ব নিয়েই দলকে ওঠালেন কোপার সেমিফাইনালে।

জেরার্দো টাটা মার্টিনোর জন্ম ১৯৬২ সালে। সান্তা ফে-র রোজারিওর এই ছেলে দেশের হয়ে মাত্র একটি ম্যাচ খেলেছিলেন ১৯৯১ সালে। বেশিরভাগ সময় নিউওয়েলস ওল্ড বয়েজের হয়ে খেলা অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার মার্টিনো বার্সেলোনাতেও খেলেছেন এক বছর। স্প্যানিশ জায়ান্টদের কোচের দায়িত্বও সামলেছেন। প্যারাগুয়ে দলের কোচ ছিলেন টানা পাঁচ বছর। ২০১১ সালে তার অধীনেই কোপার ফাইনালে লড়ে প্যারাগুয়ে।

লিওনেল মেসি-সার্জিও আগুয়েরো-অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া-কার্লোস তেভেজ-গঞ্জালো হিগুয়েন-হাভিয়ের মাসেরানোরা কোপার সেরার মুকুট জিতে ফেললে নিশ্চিতভাবেই দীর্ঘদিনের শিরোপা খরায় ভোগা আর্জেন্টাইনদের আনন্দের সীমা থাকবে না। কিন্তু যদি ভাগ্যদেবী মুখ না তোলে, তবে অন্তত এই ভেবে আর্জেন্টাইনরা সান্ত্বনা পাবে যে, ট্রফিটাতো ‘আমাদের কোচ’র হাতেই উঠলো!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *