ঈদ মুমিনের উৎসব

Slider সারাদেশ


ঈদ মুমিনের উৎসব। ঈদ মাঠে ইবাদতের মাধ্যমে আনন্দ প্রকাশ করেন মুমিনরা। এক মাস রোজা, তারাবি, দান-সদকা, তিলাওয়াত, তাসবিহ শবেকদর লাভের পর এই আনন্দ। রাসুল (স) বলেন, রোজাদারের জন্য দুটি আনন্দ। একটি ইফতারের সময়, অপরটি প্রভুর সঙ্গে সাক্ষাৎ (তিরমিজি শরিফ : ৭৬৬)। কেয়ামতের মাঠে আল্লাহর সাক্ষাৎ প্রাপ্তির সামান্য আনন্দের ঝিলিক, সবুজ মাঠে ঈদ উৎসব। ঈদের দিন মুমিন আল্লাহর প্রতিশ্রুত পুরস্কারে ধন্য হয়। প্রভুর দেওয়া ক্ষমার আনন্দে সেজদা করে। রাসুল (স) বলেন, যে ব্যক্তি দৃঢ়বিশ্বাস ও সওয়াবের প্রত্যাশায় রোজা রাখে, আল্লাহ তার অতীতের সব পাপ মোচন করে দেন। (বুখারি শরিফ)।

রোজা, তারাবি, শবেকদরের তিন ঘাট পাড়ি দিয়ে মুমিন আজ ঈদ মাঠে। প্রভুর ক্ষমা ঘোষণার অপেক্ষায়। রাসুল (স) বলেন, মুমিন বান্দারা যখন ঈদ মাঠে আসে, আল্লাহ ফেরেশতাদের গর্ব করে বলেন, হে আমার ফেরেশতারা বলো ওই প্রেমিক বান্দার প্রতিদান কী হতে পারে, যে দীর্ঘ মাস আমার দেওয়া ইবাদত পূর্ণ মনোযোগের সঙ্গে আদায় করেছে? উত্তরে ফেরেশতারা বলেন, প্রভু তাদের পরিশ্রমের উপযুক্ত প্রতিদানই কাম্য। তখন আল্লাহ ঘোষণা করেন, ফেরেশতারা সাক্ষী থেকো!

-যেসব নারী-পুরুষ তাদের ইবাদতের দায়িত্ব পালন করেছে। আমার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ ও ক্ষমার আবেদন জানাতে ঈদ মাঠে এসেছে, আমি তাদের দোয়া কবুল করলাম। সব পাপ মোচন করে দিলাম। অতীতের সব পাপ সওয়াবে পরিণত করলাম। রাসুল (স) বলেন, মুমিন বান্দারা ক্ষমার আনন্দ নিয়ে ঘরে ফিরে। (বায়হাকি)

প্রভুর ক্ষমা ঘোষণা মুমিনের পরম পাওয়া। তবে ভয়ও থেকে যায় ঈদের দিন হজরত ওমর (র)-এর মলিন চেহারা দেখে। সাহাবি আবু হুরায়রা বলেন, আমি ঈদের দিন হজরত ওমরের সঙ্গে কোলাকুলি করতে গেলাম, মুসলিম জাহানের খলিফা ওমরের ঘর তখন বন্ধ। ভেতর থেকে ভেসে আসছে কান্নার সুর। দরজায় কড়া নাড়তেই ওমর হাজির। চোখ বেয়ে তার পানি নামছে। জিজ্ঞেস করলাম হে আমিরুল মুমিনিন! আজ ঈদ। আনন্দ উৎসবের দিন। আপনি ঘরে বসে এভাবে কাঁদছেন কেন? ওমর বললেন, যদি প্রভুর ক্ষমা ঘোষিতদের তালিকায় নাম থাকে তা হলে তো তাদের আনন্দ সার্থক। যদি বিপরীত হয়ে বিতাড়িত হই আল্লাহর দরবার থেকে, তা হলে তো কাঁদাই উচিত। আমি সেই আশা-নিরাশার দোলাচলে কাঁদছি। ঈদের দিন শুধু আনন্দ নয়। আল্লাহর ভয়ও মনে থাকা উচিত।

মুদাররিস : শেখ জনূরুদ্দীন রহ. দারুল কোরআন মাদ্রাসা, চৌধুরীপাড়া ঢাকা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *