আমার পরিবার আ. লীগ, আমি নিজেও আ. লীগ: চবি প্রক্টর

Slider শিক্ষা


চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) দুর্নীতি, অনিয়ম, অডিও কেলেঙ্কারি ও অতিরিক্ত শিক্ষক নিয়োগ এবং প্রশাসন থেকে শিক্ষকদের একটি বড় অংশের পদত্যাগের অস্থিরতার রেশ যেন কাটতে না কাটতেই ক্যাম্পাস জুড়ে প্রক্টর ড. নূরুল আজিম সিকদারকে নিয়ে চলছে গুঞ্জন, এ নিয়ে তোলপাড় ক্যাম্পাস।

গত ১২ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরসহ প্রশাসনের বিভিন্ন পর্ষদ থেকে ১৬ জন শিক্ষক পদত্যাগ করে। এর ১ ঘণ্টা পরেই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মেরিন সায়েন্স ইন্সটিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক ড. নূরুল আজিম সিকদারকে নতুন প্রক্টর হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এরপরে ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে আরও তিনজন পদত্যাগ করে। পদত্যাগকারী শিক্ষকের মোট সংখ্যা দাড়ায় ১৯ জনে।

সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত প্রক্টর ড. নূরুল আজিম সিকদারের নাম ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই ক্যাম্পাস জুড়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। কেউ কেউ তাকে শিবির তকমাও দিচ্ছে। আবার ছাত্রলীগের সাবেক ও বর্তমান নেতাদের কেউ কেউ এ নিয়ে ফেসবুকেও পোস্ট দিচ্ছেন। ছাত্রলীগের সাবেক কয়েকজন নেতা দাবি করেছেন নতুন প্রক্টর ছাত্রজীবনে শিবিরের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। যদিও এখন পর্যন্ত ওই দাবির সপক্ষে কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেননি তারা। তবে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতারা বলছেন, নূরুল আজিম সিকদার পারিবারিকভাবেই আওয়ামী লীগ। তার পরিবারের অন্তত ১০ জন আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের পদধারী। ছাত্রজীবনেও তিনি এলাকায় ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন প্রগতিশীল কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তবে কোনো পদে ছিলেন না তিনি।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, বিশ্ববিদ্যালয়য়ের আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের একমাত্র সংগঠন হলুদ দলের সদস্য নূরুল আজিম সিকদার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯৯৫-১৯৯৬ সেশনের শিক্ষার্থী। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেই ২০১১ সালে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রভাষক পদে যোগদান করেন।

এই গুঞ্জনের সত্যতা জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড.নূরুল আজিম সিকদার বলেন, আমি জানি না এটা তারা কোন যুক্তিতে বলছে। তবে একটা কথা খুবই স্পষ্ট করে বলছি। এটা মিথ্যা, বানোয়াট এবং এটা প্রতারণামূলক প্রচারণা। হয়ত তাদের পছন্দের শিক্ষককে প্রক্টর হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয় নাই যার কারণে আমার বিরুদ্ধে এই প্রচারণা। আমার পরিবার আওয়ামী লীগ এবং আমি নিজেও আওয়ামী লীগ। এই সরকারের আমলে আমি নিয়োগ প্রাপ্ত হইছি। ২০১১ সাল থেকে আমি হলুদ দলের সদস্য। এর চেয়ে বড় ঘটনা আর নেই। আমি যখন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলাম তখন ছাত্র শিবির বা অন্য কোনো সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম না। আমার যত সব প্রচারণা করছে একটি মহল এগুলো মিথ্যা এবং বানোয়াট।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান সিদ্দিকী বলেন, আমি ঠিক জানি না উনি কি ছিলেন। আমার কাছে এই মুহূর্তে হলুদ দলের তালিকা নাই তাই চেক না করে বলতে পারি না। অনেকেই তো হলুদ দলে থাকেন তো আমাদের কাছে তাৎক্ষণিক কোনো তালিকা থাকে না।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন টিপু বলেন, আমরা যতটুকু খোঁজখবর নিয়েছি উনার পরিবার আওয়ামী পরিবারের সঙ্গে সম্পৃক্ত। বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র থাকাকালীন শিবির করেছেন কিনা বা অন্য কোনো সংগঠন করেছেন কিনা এই ধরনের তথ্য প্রমাণ তাদের কাছে নেই। এখন গড়পড়তা হারে তারা অভিযোগ দিচ্ছেন। আমরা বলছি এই অভিযোগ যদি পাওয়া যেত তাহলে অবশ্যই আমাদের সাংগঠনিক জায়গা থেকে একটা প্রতিক্রিয়া দেখানোর সুযোগ ছিল। কোনো তথ্য প্রমাণ কিন্তু উনারা আমাদের দিতে পারেন নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *