যেভাবে কঠোর গোপনীয়তায় ইউক্রেনে পৌঁছান বাইডেন

Slider সারাবিশ্ব

কোনো ধরনের পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই যুদ্ধকালীন সময়ে গতকাল সোমবার ইউক্রেন সফরে যান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এটি মার্কিন প্রেসিডেন্ট প্রথম কিয়েভ সফর। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম, বাইডেনের এই সফরকে ঐতিহাসিক বলে উল্লেখ করেছে।

তবে বাইডেনের এই সফর কঠোর গোপনীয়তার মধ্যে আবৃত ছিল বলে বিবিসি ও সিএনএন জানিয়েছে।এদিকে জার্মান রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম ডয়চে ভেলে বাইডেনের এই গোপন সফরের বিস্তারিত তুলে ধরেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গতকালের বাইডেনের এই যাত্রা ছিল রোমাঞ্চকর। বিমানের জানালা ছিল বন্ধ। এরপর পোল্যান্ডে বিমান নামার পর দীর্ঘ ট্রেন যাত্রা।

রোববার ভোর চারটার সময় অন্ধকারের মধ্যে ওয়াশিংটনের বাইরে সেনাঘাঁটি থেকে একটি বোয়িং ৭৫৭ বিমান উড়ে। বিমানটির নাম সি-৩২। এই বিমানেই ছিলেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।

ডয়চে ভেলে বলছে, সাধারণত এই বিমানবন্দর থেকে এই বিমানে চড়ে বাইডেন বিদেশ সফরে যান না। কিন্তু আর পাঁচটা ঘোষিত সফর না হওয়ায় কঠোরভাবে গোপন রাখা হয়। মার্কিন কিছু কর্মকর্তা ব্যতিত এই সফরের কথা কেউ জানতেন না।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, প্লেনটি যখন বিমানবন্দরে ছিল তখন তার প্রতিটি জানালা বন্ধ করে রাখা ছিল। যেন বাইরে থেকে কিছুই দেখা না যায় এবং আলোও বাইরে না যায়।

বিমান ছাড়ার ১৫ মিনিট আগে প্লেনে ঢুকে বাইডেন। এরপর তার বাছাই করা কয়েকজন নিরাপত্তারক্ষী, চিকিৎসকের দল, ঘনিষ্ঠ কয়েকজন পরামর্শদাতা এবং দুইজন সাংবাদিক। দুই সাংবাদিককেই আগে গোপনীয়তার শপথ নিতে হয়েছে।

বাইডেনের বিদেশ সফরে সাধারণত বিভিন্ন রেডিও, টিভি, সংবাদপত্র থেকে ১৩ জন সাংবাদিক ও চিত্রসাংবাদিক যান। এক্ষেত্রে নেওয়া হয়েছিল মাত্র দুইজনকে। তারমধ্যে একজন চিত্রসাংবাদিক। অন্যদিকে রিপোর্টার হিসেবে ছিলেন সাবিনা সিদ্দিকি। তিনি ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের সাংবাদিক। আর ছিলেন এপি-র চিত্রসাংবাদিক ইভান। তাদের বিমানবন্দরে রাত দুইটা ১৫ মিনিটে ডাকা হয়। তাদের ফোন নিয়ে নেওয়া হয়েছিল। বাইডেন কিয়েভে পৌঁছানোর পর তা ফেরত দেওয়া হয়।

যুক্তরাষ্ট্র থেকে যাত্রা শুরু করার পর বিমানটি জার্মানির মার্কিন ঘাঁটিতে নামে জ্বালানি ভরার জন্য। তখনো বিমানের জানালা নামানো ছিল। কাউকে প্লেন থেকে বের হতে দেয়া হয়নি। পরের গন্তব্য পোল্যান্ডের বিমানবন্দর। ইউক্রেনের যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর এই বিমানবন্দরই পশ্চিমা দেশের অস্ত্র সরবরাহের কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে।

এখান থেকে প্লেনের সবাই ট্রেনে উঠেন। তবে তখন পর্যন্ত সাংবাদিকরা বাইডেনকে দেখেননি। ট্রেনে মোট আটটি কামরা ছিল। প্রায় সব কামরাই ছিল নিরাপত্তা বাহিনীর দখলে।

১০ ঘণ্টা পরে ট্রেন কিয়েভ পৌঁছায়। এই যাত্রায় মার্কিন সেনা ট্রেনের সুরক্ষা দেয়ার জন্য নেই। মার্কিন প্রেসিডেন্ট সরাসরি যুদ্ধক্ষেত্রে গিয়ে পৌঁছাচ্ছেন। রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধের প্রথম বার্ষিকীর দিন কয়েক আগে।

কিয়েভে গিয়ে বাইডেন বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র গত প্রায় এক বছরে বারবার জানিয়েছে, ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব, স্বাধীনতা রক্ষার লড়াইয়ে তারা পাশে থাকবে। সেই বার্তা নিয়েই তিনি যুদ্ধের প্রথম বার্ষিকীতে ইউক্রেন এসেছেন।

অন্যদিকে জেলেনস্কি বলেছেন, বাইডেনের এই সফর ইউক্রেনকে যুদ্ধজয়ের কাছে নিয়ে আসবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *