ফের ছাপানোর অর্থ নেই এনসিটিবির

Slider শিক্ষা


নতুন কারিকুলামে প্রণীত এ বছরের ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বিষয়ের ‘অনুশীলনী পাঠ’ এবং ষষ্ঠ শ্রেণির বিজ্ঞান ‘অনুসন্ধানী পাঠ’ পাঠ্যপুস্তকগুলোর কিছু অধ্যায়ের প্রয়োজনীয় সংশোধনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)।

সম্প্রতি তাদের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়ে দেওয়া হয়, এই দুটি পাঠ্যবইয়ের অন্য সব অধ্যায়ের পাঠদান অব্যাহত থাকবে। সংশোধনীগুলো শিগগিরই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে অবহিত করা হবে।

নতুন পাঠ্যবইয়ে খ-িত ইতিহাস অন্তর্ভুক্তি, মুসলিম ইতিহাস বাদ দেওয়া, ধর্মবিরোধী, প্রজনন স্বাস্থ্য ও ট্রান্সজেন্ডারের মতো বিষয় পাঠ্য রাখা নিয়ে সমালোচনা বিভিন্ন মহলে। এছাড়া সার্চ ইঞ্জিন

গুগল থেকে হুবহু অনুবাদ তুলে দেওয়া এবং অনলাইন থেকে পাঠ নেওয়ার অভিযোগ ওঠে। ভুলের সংশোধনী দিয়েও শেষ রক্ষা হয়নি। এখন দুই বিষয়ে বই সংশোধন করে ফের ছাপিয়ে সরবরাহ করতে হবে। যখন বৈশি^ক প্রেক্ষাপটে সরকার সর্বত্র ব্যয় সাশ্রয়ের কৃচ্ছ্রতা সাধন নীতিতে চলছে, এই মুহূর্তে লাখ লাখ পাঠ্যবই বাতিল করে কোটি কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতি গুনতে হচ্ছে এই প্রতিষ্ঠানকে।

এনসিটিবির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির ‘অনুসন্ধানী পাঠ’ এই দুটি বই প্রত্যাহার করায় সরকারের প্রায় ৩৫ কোটি টাকার ক্ষতি হচ্ছে। চলতি শিক্ষাবর্ষের প্রতিটি বই ৩৪ লাখ কপি করে মোট ৬৮ লাখ কপি ছাপানো হয়েছে। বইগুলোর ‘কনটেন্ট’ তৈরিতে কর্মশালার আয়োজন, ‘স্টেকহোল্ডার’দের (অংশীজন) সম্মানীভাতা এবং ছাপার যাবতীয় ব্যয়সহ এই টাকার ক্ষতি হয়েছে।

জানা গেছে, প্রত্যাহার করা দুটি বই ছাড়াও ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির আরও দু’-তিনটি বইয়ে বেশকিছু সংশোধনী আসছে। এতে ‘ডিউ পার্ট’ আকারে সারা দেশে সংশোধনী পাঠানো হতে পারে। কিংবা পুরো বই নতুন করে ছাপা লাগতে পারে। এতে খরচের খাত আরও দীর্ঘ হবে। এই অর্থ কোথা থেকে জোগান হবে সেটি নিয়ে উদ্বিগ্ন এনসিটিবি কর্মকর্তারা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মাধ্যমিক স্তরের পাঠ্যপুস্তক ছাপার দায়িত্বে থাকা এনসিটিবির বিতরণ নিয়ন্ত্রক মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম জানান, প্রত্যাহার হওয়া দুটি বই ৩৩ থেকে ৩৪ লাখ কপি করে ছাপার কার্যাদেশ হয়েছিল। এসব বইয়ের পেছনে সবমিলিয়ে প্রায় ৩৫ কোটি টাকা খরচ হচ্ছে বলে সংস্থার অর্থ ও হিসাব শাখার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। নতুন বাজেট ছাড়া ফের বই ছাপানো যাবে না।

এ বিষয়ে এনসিটিবি সদস্য (শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক মো. মশিউজ্জামান বলেন, সংশোধনী যদি ২০ পৃষ্ঠার কাছাকাছি হয় তাহলে ‘ডিউ পার্ট’ আকারে তৈরি করে স্কুলপর্যায়ে পাঠানো হবে। এর চেয়ে বেশি হলে অনলাইনে দিয়ে দেয়া হবে।

নতুন শিক্ষাক্রমে এ বছর ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে মোট ১০টি করে বই থাকছে। বইগুলো হলো বাংলা, ইংরেজি, গণিত, বিজ্ঞান, ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান, স্বাস্থ্য সুরক্ষা, ডিজিটাল প্রযুক্তি, জীবন ও জীবিকা, ধর্ম এবং শিল্প ও সংস্কৃতি। এগুলোর মধ্যে মাত্র দুটি বিষয়ের বই নিয়ে ধর্মীয় সংগঠনের নেতারা আপত্তি করে আসছেন। এক পর্যায়ে একটি বিশেষ ধর্মের ‘অবমাননার’ বিতর্কে ২০২৩ শিক্ষাবর্ষে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির জন্য প্রণীত ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বিষয়ের ‘অনুসন্ধানী পাঠ’ পাঠ্যপুস্তক দুটি প্রত্যাহারের ঘোষণা দেয় শিক্ষা প্রশাসন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *