কুমিল্লার দেবিদ্বারে চোর সন্দেহে আল মামুন নামে এক কাঠমিস্ত্রিকে মধ্যরাতে ঘর থেকে তুলে নিয়ে গাছে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। এ সময় চুরির স্বীকারোক্তি আদায়ে প্লাস দিয়ে তার হাত পায়ের নখ তুলে ফেলা হয়েছে।
গত বুধবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে উপজেলার ইউসুফপুর ইউনিয়নের পূর্ব নবীপুর গ্রামের সাবেক ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য মো. বশির মিয়ার বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। নির্যাতনের শিকার মো. আল মামুন ওই এলাকার মৃত আবদুল কাদের মিয়ার ছেলে।
ভুক্তভোগী আল মামুন হাসপাতাল থেকে বলেন, ‘গত বুধবার সন্ধ্যায় কাজ থেকে ফিরে রাতে খাওয়ার পর বাড়িতে ঘুমিয়ে পড়ি। রাত ২টার দিকে ইউসুফপুর ইউনিয়নের সাবেক সদস্য বশির, তার ছেলে রুবেল, মেহেদি, ভাতিজা শামীম, শরিফ, তাদের অনুসারী ইয়াসিন, কাঠমিস্ত্রি রুবেলসহ কয়েকজন বাড়িতে এসে চোর চোর বলে ডাকাডাকি করতে থাকেন। আমি দরজা খুললে আমাকে টেনেহিঁচড়ে ঘর থেকে বের করে নিয়ে যান। আমার স্ত্রী ও ছেলে মেয়ে অনেক আকুতি জানালেও তারা আমাকে ছাড়েননি।’
তিনি আরও বলেন, ‘বশিরের বাড়ির আমগাছে আমাকে বেঁধে সারারাত নির্যাতন করা হয়। পরদিন সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত একটি ঘরে বেঁধে আরেক দফা নির্যাতন করা হয়। মোবাইল চুরির স্বীকারোক্তি নিতে প্লাস দিয়ে আমার পায়ের নখ তুলে ফেলেন জুয়েল। এ ঘটনা পুলিশকে জানালে হত্যা করা হবে বলে হুমকি দেন আমাকে। আমি বর্তমানে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছি। আমি সুস্থ হয়ে থানায় মামলা দায়ের করব।’
আহত আল মামুনের মা জাহানারা বেগম বলেন, ‘চোর সন্দেহে রাতে ঘর থেকে তুলে নিয়ে আমার ছেলেকে গাছে বেঁধে নির্যাতন করেছে। তারা প্লাস দিয়ে আমার ছেলের পায়ের নখগুলো তুলে ফেলছে। আমার ছেলে যদি কোনো অন্যায় করে থাকে তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনের ব্যবস্থা নিতো। কিন্তু গ্রামবাসী মিলে আমার ছেলের মাথা থেকে পা পর্যন্ত পিটিয়েছে।’
অভিযুক্ত সাবেক ইউপি সদস্য বশির মিয়া বলেন, ‘সে নিয়মিত বিভিন্ন বাড়িতে চুরি করে। ঘটনার সময় আমার বাড়িতে মোবাইল চুরি করে পালিয়ে যায়। এমন কোনো বাড়ি নেই যেখানে সে চুরি করে নাই। তাকে উত্তেজিত হয়ে লোকজন পিটিয়েছে। আমার কিছু করার ছিল না।’
আজ শুক্রবার বিকেলে দেবিদ্বারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কমল কৃষ্ণ ধর জানান, এ বিষয়ে কোনোপক্ষই লিখিত অভিযোগ দেননি। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।