নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে আওয়ামী লীগের কর্মী সম্মেলন চলাকালে উস্কানিমূলক বক্তব্যের জের ধরে দু’পক্ষের সমর্থকের সংঘর্ষে সম্মেলন পণ্ড হয়েছে। এতে আহত হয়েছে অন্তত ৩০ জন।
বুধবার (২৫ জানুয়ারি) বিকেলে শম্ভুপুরা ইউনিয়নের এলাহী নগর ঈদগাহ মাঠে আয়োজিত ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কর্মী সম্মেলনে এ সংর্ষষ হয়।
জানা যায়, সোনারগাঁও উপজেলা আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের লক্ষ্যে উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় কর্মী সম্মেলনের আয়োজন করে সোনারগাঁও উপজেলা আওয়ামী লীগ। বুধবার বিকেলে শম্ভুপুরা ইউনিয়নের এলাহী নগর ঈদগাহ মাঠে কর্মী সম্মেলনের আয়োজন করে শম্ভুপুরা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ।
সম্মেলনে শম্ভুপুরা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু বকর সিদ্দিক মোল্লার সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন, সোনারগাঁও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সামসুল ইসলাম ভূঁইয়া। বিশেষ অতিথি ছিলেন, উপজেলা সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সাংসদ আবদুল্লাহ আল কায়সার, সিনিয়র সহ-সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মাসুদুর রহমান মাসুম। এছাড়াও আওয়ামী লীগের অঙ্গ-সংগঠনের নেতারা অতিথি ছিলেন।
সম্মেলন চলাকালে আবু বকর সিদ্দিক মোল্লা তার স্বাগত বক্তব্যে গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী নাসির উদ্দিনকে মনোনয়ন দেয়া আওয়ামী লীগের ভুল সিদ্ধান্ত ছিল বলে উল্লেখ করেন। এতে নাসির উদ্দিনের সমর্থকরা উত্তেজিত হয়ে পড়ে। একপর্যায়ে তারা চেয়ার ছোড়াছুড়ি শুরু হয়।
পরে আবু বকর সিদ্দিক মোল্লার সমর্থকরা লাঠিসোটা নিয়ে নাসির উদ্দিন সমর্থকদের ওপর হামলা করে। উভয় পক্ষের নেতাকর্মীরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েলে এতে নাসির উদ্দিন পক্ষের ২০ জন এবং আবু বকর সিদ্দিক মোল্লা পক্ষের ১০ জন আহত হয়।
আহতদের মুন্সিগঞ্জ সদর হাসপাতাল ও নারায়ণগঞ্জ খানপুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহতদের মধ্যে নাসির উদ্দিন পক্ষের জান্নাত মোল্লা ও রিফাত নামের দু’জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
শম্ভুপুরা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু বকর সিদ্দিক মোল্লা বলেন, ’আমার স্বাগত বক্তব্যে এ ইউনিয়নে নৌকার পরাজয়ের কারণ তুলে ধরার সাথে সাথে নাসির উদ্দিনের নেতাকর্মীরা চেয়ার ছোড়াছুড়ি শুরু করে। এ নিয়েই সংঘর্ষ হয়। এতে আমার সমর্থকরাও আহত হয়েছে।’
শম্ভুপুরা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা নাসির উদ্দিন বলেন, ’আমি কর্মী সম্মেলনে প্রায় দুই হাজার নেতাকর্মী নিয়ে অংশগ্রহণ করি। ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু বকর সিদ্দিক মোল্লা আমাকে নিয়ে উস্কানিমূলক বক্তব্য দিলে নেতাকর্মীরা ক্ষিপ্ত হয়। এ সময় উভয় পক্ষের নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।’
সোনারগাঁও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সাংসদ আবদুল্লাহ আল কায়সার বলেন, সংঘর্ষের কারণে শম্ভুপুরা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কর্মী সম্মেলন স্থগিত করা হয়েছে। দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী দোষীদের চিহ্নিত করে সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সোনারগাঁও থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ আহসানউল্লাহ বলেন, কর্মী সম্মেলনের পুলিশ মোতায়েন ছিল। হঠাৎ সংঘর্ষের কারণে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়নি। পরে অতিরিক্ত পুলিশ পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা হয়।
এখন পর্যন্ত কোনো পক্ষ অভিযোগ করেনি বলে জানান তিনি।