স্বাস্থ্যকর্মীরা একজন রোহিঙ্গা শরণার্থীকে পরীক্ষা করছেন যিনি রোববার ইন্দোনেশিয়ার আচেহ প্রদেশে নৌকায় করে আসার পর অসুস্থ বোধ করছেন
সাগরে প্রায় এক মাস ধরে ভেসে থাকার পর একটি হালকা নৌকা ডুবে মিয়ানমারের অন্তত ১৮০ জন রোহিঙ্গা নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা (ইউএনএইচসিআর)। গত নভেম্বরে ওই রোহিঙ্গা শরণার্থীরা বাংলাদেশ ছেড়েছিলেন বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
অসমর্থিত সূত্রের বরাত দিয়ে সংস্থাটি বলছে, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের বহন করা সমুদ্রযাত্রায় অনুপযোগী ওই নৌকাটি সম্ভবত ডুবে গেছে। নৌকায় থাকা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সঙ্গে তাদের আত্মীয়স্বজনদের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। ফলে ধারণা করা হচ্ছে, সাগরে থাকা নৌকাটি ডুবে গেছে। মৃত্যু হয়েছে সবার।
গত শনিবার মাইক্রো ব্লগিং সাইট টুইটারে ইউএনএইচসিআর এমনটাই লিখেছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। তবে নৌকাটি কোথায় যাচ্ছিল, সেই বিষয়ে কোনো তথ্য জানায়নি সংস্থাটি।
২০১৭ সালে সেনাবাহিনীর নির্মম নিপীড়নের মুখে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আসা ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরগুলোতে অবস্থান করছে। বৌদ্ধ-সংখ্যাগরিষ্ঠ মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলিমদের নাগরিকত্ব কেড়ে নিয়ে উল্টো তাদের অনুপ্রবেশকারী, দক্ষিণ এশিয়া থেকে যাওয়া অবৈধ শরণার্থী হিসেবে দেখা হয়।
অপরদিকে বাংলাদেশে শরণার্থী হিসেবে যারা রয়েছেন, কাজ না পেয়ে তারাও রয়েছেন কষ্টে। আর এই সুযোগ নিচ্ছে মানবপাচারকারীরা। তারা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মালয়েশিয়ার মতো দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে কাজ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয় এবং সাগরে ঝুঁকিপূর্ণ যাত্রায় প্রলুব্ধ করে।
খাবার, কাজ ও চাকরি পাওয়ার আশায় বাংলাদেশ ছাড়া ওই শরণার্থীদের বেশিরভাগ যাত্রারই ইতি ঘটে আন্তর্জাতিক জলসীমায়। তীব্র ক্ষুধা-তৃষ্ণা ও রোগ নিয়ে তারা অনেকদিন ধরে সমুদ্রে ভাসতে থাকে।
গত সপ্তাহে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিয়ে কাজ করা দুটি গোষ্ঠী জানায়, ভারত সাগরে দুই সপ্তাহ ভেসে থাকা একটি নৌকায় ২০ জনের মতো রোহিঙ্গা শরণার্থী তীব্র ক্ষুধা-তৃষ্ণায় মারা গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, অন্তত ১০০ জন লোক নিয়ে নৌকাটি এখন মালয়েশিয়ার জলসীমায় রয়েছে।
এর আগে চলতি মাসের শুরুর দিকে শ্রীলঙ্কার উত্তর উপকূলের কাছে ভাসতে থাকা ১০৪ জন রোহিঙ্গাকে উদ্ধার করেছিল দেশটির নৌবাহিনী।