এবার হয়তো বাংলাদেশি চ্যানেল দেখার দীর্ঘদিনের ইচ্ছে পূরণ হতে চলেছে ভারতের বিশেষত পশ্চিমবঙ্গের বাঙালিদের। দু’দিনের সফরে এখন ঢাকায় অবস্থান করছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তার সফর নিয়ে এ আশাবাদ ব্যক্ত করলেন পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ।
বিভিন্ন সময় দুই বাঙলার নাগরিকরা পরস্পর মিলিত হলে পশ্চিমবঙ্গবাসীর যে আক্ষেপটা বারেবার প্রকাশ পেতো, হয়তো মোদির এ সফরে সে আক্ষেপ ঘুচতে যাচ্ছে।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বেশ কয়েকবার এই প্রসঙ্গ তুলেছিলেন। তবে, কোনো সুরাহা হয়নি। এবার সেই প্রসঙ্গ সামনে এলে আশার আলো জ্বেলে দিলেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব সুব্রামানিয়াম জয়শঙ্কর। শুক্রবার (৫ জুন) নয়াদিল্লিতে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানিয়েছেন, বাংলাদেশের টেলিভিশন চ্যানেল নিয়ে কথা হতে পারে দুই প্রধানমন্ত্রীর।
সফরে প্রতিবেশী দু’দেশের মধ্যে বেশ কিছু চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই হতে পারে। তবে স্থল সীমান্ত চুক্তির মতো বাংলাদেশের টেলিভিশন চ্যানেল দেখার প্রসঙ্গ নিয়েও কম উচ্ছ্বসিত নয় পশ্চিমবঙ্গের আমজনতা।
সুদূর যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, জার্মানি, চীন, জাপান, মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশের টেলিভিশন চ্যানেল দেখা যায় কলকাতাসহ পশ্চিমবঙ্গে। কিন্তু প্রতিবেশী দেশেরই টিভি চ্যানেল দেখতে সুযোগ পান না এ রাজ্যের বাংলাভাষীরা।
এবার এ বিষয়ের সুরাহা হওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে কলকাতার গৃহবধূ প্রতিমা ভট্টাচার্য বাংলানিউজকে বলেন, আমার টিভিতে শুধু ইংরেজি, চীনা, জার্মান কিংবা রাশিয়ান ভাষার চ্যানেল নয়; তামিল, তেলেগু, মালায়ালাম চ্যানেল দেখা যায়। কিন্তু বাংলাদেশের চ্যানেল দেখা যায় না। এটা হতাশাজনক।
কলেজ শিক্ষার্থী সুস্মিতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, টেলিভিশন, সিনেমায় কি ধরনের কাজ বাংলাদেশে হচ্ছে সেটা জানার সুযোগ আমাদের নেই। মোদি যদি এই বিষয়ে কিছু করেন তবে ভাল হয়।
তিনি বলেন, কিছুদিন আগে ‘বৈশাখী’ চ্যানেলটি দেখা যাচ্ছিল; কিন্তু এখন সেটিও দেখা যায় না।
ফিল্ম স্টাডিজেরর শিক্ষার্থী পিন্টু সাহা বলেন, সৃষ্টিশীল ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতার অন্যনাম সহযোগিতা।
বাংলাদেশের টেলি-নাটকের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশটির চ্যানেলগুলি পশ্চিমবঙ্গে দেখানো হলে দুই দেশের অনুষ্ঠানের ধরনেই পরিবর্তন আসবে। যার ফলে আখেরে লাভবান হবেন দর্শকরা।
পিন্টু দুই বাংলার সিনেমা হলগুলো বাংলা সিনেমা দেখানোর বিষয়েও কথা বলেন।
পশ্চিমবঙ্গবাসীর আশা, প্রধানমন্ত্রী মোদি এই সফরে ছিটমহল, তিস্তার মতো রাজনৈতিক বিষয়ের পাশাপাশি টেলিভিশন চ্যানেল এবং সিনেমার মতো সাংস্কৃতিক আদানপ্রদানের বিষয়ও কথা বলবেন।