ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপব্যবহার কমছে

Slider তথ্যপ্রযুক্তি


আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক বলেছেন, যেসব জায়গায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপব্যবহার হতো, সেসব জায়গায় আমরা প্লাগিং করার চেষ্টা করেছি। করোনার সময়ের পর এটা এখন অনেকটাই কমে এসেছে। অনেকাংশেই কিন্তু এখন গেলে মামলা আর নেয় না। গতকাল শনিবার রাজধানীর বনানীর ঢাকা গ্যালারিতে এডিটরস গিল্ড বাংলাদেশের আয়োজনে ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বিতর্ক’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন।

‘সংবিধানের ৩৯নং অনুচ্ছেদের উদ্ধৃতি দিয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন কিন্তু বাকস্বাধীনতা বা সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা হরণের জন্য হয়নি। আগে চুরি হতো ফিজিক্যালি। এখন যেই মুহূর্তে চুরি ডিজিটালি হওয়া শুরু করল, তখন এটাকে কি ফিজিক্যাল আইনে পেনাল কোডের ধারায় শাস্তিযোগ্য করা যাবে? পারবেন না। পেনাল কোডের অনেক ধারাতেই ডিজিটাল মাধ্যমে অবমাননার কথা নেই। যার জন্য এসব বিষয়কে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের আওতায় আনা হয়েছে। এ আইনটির খসড়া করেছিল আইসিটি বিভাগ। তা আইন মন্ত্রণালয়ে আসার পর যখন ভেটিং হচ্ছিল, তখন একটা প্রশ্ন তোলা হয়েছেÑ সাংবাদিকদের সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনা হয়নি। আমি তখন বললাম, এ আইন একটা পর্যায়ে চলে গেছে। আমরা যখন সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে এ আইন তুলব, আপনারা যা বলবেন সেখানে বলবেন। সেই আলোকে আমরা চিন্তাভাবনা করব। ওনারা আসার পর কিছু কিছু বিষয়ে পরিষ্কার হওয়া, সাজা কমানোর বিষয়ে আলোচনার পর সবাই কিন্তু রাজি হলেন যে, এ আইনের প্রয়োজন আছে। সেই কারণে আইন বানানো হয়েছে। ২০১৮ সালে এ আইন হওয়ার পর ২০১৯ সালে করোনা শুরু হওয়ার আগে আমি ব্যক্তিগতভাবে দেখেছি যে, এর কিছু কিছু অপব্যবহার ও হয়রানি হয়েছে। এ অপব্যবহার ও হয়রানি বন্ধের জন্য আমরা সচেষ্ট।’

বিভিন্ন দেশের আইন পর্যালোচনা করা হয়েছে জানিয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘গুড প্র্যাক্টিসেস নিয়ে এখনো আলাপ করছি। একই সময়ে হয়তো বলবেন, আলোচনা করা হচ্ছে কিন্তু আইনের তো অপব্যবহার হচ্ছে। আমি এ নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বসেছি, আমরা একমত হয়েছি যে এ আইনে মামলার সঙ্গে সঙ্গে সাংবাদিকদের আগেই গ্রেপ্তার করা হবে না। পাশপাশি যে কেউ মামলা করুক না কেন সেটাকে এ মামলা হিসেবে গ্রহণ করা হবে না। যে অভিযোগগুলো আসছে সেগুলো ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের যে ধারাগুলো আছে, সেগুলোর কমপ্লেইন কিনা, নাকি হয়রানি করা হচ্ছে এগুলো দেখার জন্য আইসিটি অ্যাক্টের একটি সেল আছে। সেই সেলটিকে কার্যকর করে এ অভিযোগগুলো আমলে নিয়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের কোনো ধারার মধ্যে পড়ে কিনা, সেটা দেখে তার পর যখন কোর্টে কিংবা থানায় পাঠানো হবে তখনই এটা মামলা হিসেবে রুজু করা হবে। এই যে একটা ধাপ বাড়িয়ে দিয়েছি আমরা, এখন আমি তো কোর্টকে বলে দিতে পারি না যেহেতু বিচার বিভাগ স্বাধীন। সাইবার ক্রাইমের যে ট্রাইব্যুনাল, সেখানে প্রসিকিউশনে বলে দেওয়া হয়েছে যে প্রথমেই যেন ওয়ারেন্ট দেওয়া না হয়, সমন জারি করা হোক। যাতে করে অভিযুক্ত আদালতে আসেন, তার বক্তব্য দেন।’

এডিটরস গিল্ডের সভাপতি মোজাম্মেল বাবুর সঞ্চালনায় বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির যুগ্ম সম্পাদক ইশতিয়াক রেজা, মানবাধিকার আইনজীবী জেডআই খান পান্না, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু, সাংবাদিক ও কলামিস্ট সোহরাব হাসান, আর্টিকেল ১৯-এর বাংলাদেশ ও দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের পরিচালক ফারুক ফয়সাল, পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ এবং চলচ্চিত্র নির্মাতা কামার আহমেদ সায়মন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *