ড্যান্ডি ডায়িং মামলা মোকাবেলায় আইনজীবী নিয়োগ খালেদার

Slider জাতীয় রাজনীতি

madam_sm_966581735

ঢাকা: ড্যান্ডি ডায়িং ঋণখেলাপি মামলা মোকাবেলায় আইনজীবী নিয়োগ করেছেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। আইনজীবীর সময়ের আবেদনের প্রেক্ষিতে আগামী ৩০ জুন খালেদার জবাব দাখিল ও ইস্যু (বিচার্য বিষয়) গঠনের দিন ধার্য করেছেন আদালত।

সোনালী ব্যাংকের দায়ের করা ৪৫ কোটি টাকা খেলাপি ঋণের এ মামলাটির আসামি ছিলেন কোকো। তিনি মারা যাওয়ায় গত ১৬ মার্চ আদালত তার মা খালেদা জিয়া, স্ত্রী শর্মিলা রহমান এবং দুই মেয়ে জাফিয়া রহমান ও জাহিয়া রহমানকে বিবাদীভূক্ত করেন।

রোববার (১৭ মে) মামলাটিতে ইস্যু গঠনের দিন ধার্য ছিল। খালেদা জিয়া জয়নুল আবেদিন মেজবাহকে আইনজীবী হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন। তিনি জবাব দাখিল ও ইস্যু গঠনের জন্য সময়ের আবেদন জানালে আগামী ৩০ জুন পুনর্নির্ধারণ করেছেন ঢাকার প্রথম অর্থঋণ আদালতের বিচারক ফাতেমা ফেরদৌস।

সোনালী ব্যাংকের আইনজীবী জাহাঙ্গীর হোসেন, বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট হোসনে আরা বেগম শুনানিতে অংশ নেন।

গত ৮ মার্চ খালেদাসহ অন্যদের বিবাদীভূক্ত করার আবেদন জানিয়েছিলেন সোনালী ব্যাংকের আইনজীবী জাহাঙ্গীর হোসেন। তিনি আবেদনে বলেন, আরাফাত রহমান কোকো এ মামলার বিবাদী। তিনি মারা যাওয়ায় খেলাপি ঋণ দেওয়ানি কর্মবিধি আইনের ২২নং আদেশের নিয়ম ৪ অনুসারে তার সম্পদের ওয়ারিশরা বিবাদীভূক্ত হবেন। তাই তার ওয়ারিশ হিসেবে খালেদা জিয়া, স্ত্রী শর্মিলা রহমান এবং দুই মেয়ে জাফিয়া রহমান ও জাহিয়া রহমানকে বিবাদীভূক্ত করার আবেদন জানানো হয়।

আদালত গত ১৬ মার্চ তা মঞ্জুর করেছেন।

কোনো ছেলে না থাকায় বড় ভাই তারেক রহমানও কোকোর সম্পদের ওয়ারিশ। তবে তারেক রহমান এ মামলায় আগে থেকেই বিবাদী হওয়ায় তাকে নতুন করে বিবাদীভূক্ত করার আবেদন জানানো হয়নি।

২০১৩ সালের ২ অক্টোবর ঢাকার প্রথম অর্থঋণ আদালতে মামলাটি করেন সোনালী ব্যাংকের স্থানীয় কার্যালয় শাখার সিনিয়র নির্বাহী কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম। ৪৫ কোটি ৫৯ লাখ ৩৭ হাজার ২৯৫ টাকা ঋণখেলাপির অভিযোগে এ মামলাটি দায়ের করা হয়।

পরদিন ৩ অক্টোবর মামলাটি মধ্যস্থতা করার জন্য অ্যাডভোকেট আব্দুস সালামকে মধ্যস্থতাকারী নিয়োগ করেন বিচারক। কিন্তু দীর্ঘদিনেও কোনো মধ্যস্থতা না হওয়ায় বিচারক মামলাটিতে ইস্যু গঠনের সিদ্ধান্ত নেন।

কিন্তু বিবাদীপক্ষে এ মামলাটির কার্যক্রম চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট আবেদন করা হয়। হাইকোর্টের বিষয়টি শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে বলে জানান বিবাদীপক্ষের আইনজীবী জাহেদুল ইসলাম কোয়েল।

জাহেদুল ইসলাম কোয়েল বলেন, ৫ কোটি টাকা পর্যন্ত মামলার বিষয়বস্তু হলে ব্যাংকের ম্যানেজার মধ্যস্থতা করতে পারেন। কিন্তু ৫ কোটি টাকার উর্দ্ধে হলে ব্যাংকটির চেয়ারম্যান/ম্যানেজিং ডাইরেক্টর পর্যায়ের কাউকে মধ্যস্থতায় থাকতে হবে।

এ মামলায় ব্যাংকের পক্ষে তেমন কোনো কর্মকর্তা উপস্থিত থাকেন না। এ বিষয়টিসহ অন্যান্য বিষয়ে মামলার কার্যক্রম চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে আবেদন করা হয়েছে।

এ মামলার অন্য বিবাদীরা হলেন, ড্যান্ডি ডায়িং লি., প্রয়াত সাঈদ এস্কাদরের ছেলে শামস এস্কান্দার ও সাফিন এস্কান্দার, মেয়ে সুমাইয়া এস্কান্দার, স্ত্রী বেগম নাসরিন আহমেদ, তারেক রহমান, গিয়াস উদ্দিন আল মামুন, মামুনের স্ত্রী শাহীনা ইয়াসমিন, কাজী গালিব আহমেদ, শামসুন নাহার ও মাসুদ হাসান।

মামলার ১০ নম্বর বিবাদী মোজাফফর আহমেদ মারা যাওয়ায় তার স্ত্রী শামসুন্নাহার ও ছেলে মাসুদ হাসানকে এ মামলায় বিবাদীভূক্ত করা হয়।

মামলায় অভিযোগ করা হয়, বিবাদীরা ড্যান্ডি ডাইংয়ের পক্ষে ১৯৯৩ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি সোনালী ব্যাংকে ঋণের জন্য আবেদন করেন। ওই বছরের ৯ মে সোনালী ব্যাংক বিবাদীদের আবেদনকৃত ঋণ মঞ্জুর করে।

২০০১ সালের ১৬ অক্টোবর বিবাদীদের আবেদনক্রমে ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ সুদ মওকুফ করেন। এরপর ঋণ পুন:তফসিলিকরণও করা হয়।

কিন্তু বিবাদীরা ঋণ পরিশোধ না করে বারবার কালক্ষেপণ করতে থাকেন।

মামলায় আরও অভিযোগ করা হয়, ২০১০ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি ব্যাংকের পক্ষ থেকে ঋণ পরিশোধের জন্য চূড়ান্ত নোটিশ প্রদান করা হলেও বিবাদীরা কোনো অর্থ প্রদান করেননি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *