ইয়াঙ্গুনে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মনজুরুল করিম খান চৌধুরীকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করেছে মিয়ানমার সরকার। বান্দরবান সীমান্তে সাম্প্রতিক গোলাগুলির প্রেক্ষাপটে গত রোববার তাকে ডেকে নিয়ে নিজেদের অবস্থান ব্যাখ্যা করেন মিয়ানমারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক উ জাউ ফিউ উইন।
বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে নেওয়ার বিষয়টি মিয়ানমারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ফেসবুক পেজে বিবৃতি আকারে প্রকাশ করা হয়। বিবৃতিতে বলা হয়, ঢাকায় মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত ও বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালকের বৈঠকগুলোতে বাংলাদেশের তুলে ধরা বক্তব্যের প্রেক্ষাপটে মিয়ানমার-বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে গোলাগুলির বিষয়ে চলমান পরিস্থিতি বৈঠকে স্পষ্ট করেছেন মহাপরিচালক ফিউ উইন।
তিনি বলেছেন, আরাকান আর্মি ও সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আরসা ১৬ সেপ্টেম্বর বিপি-৩১ নম্বরের বর্ডার গার্ড পুলিশের তাউংপিও চৌকিতে মর্টার হামলায় চালায়, যার মধ্যে তিনটি মর্টার বাংলাদেশ ভূখণ্ডের ভেতরে পড়ে।
তিনি আরও ব্যাখ্যা করেছেন, আরাকান আর্মি ও সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আরসা পুনরায় একই অস্ত্র ব্যবহার করে এবং ১৬ ও ১৭ সেপ্টেম্বর তারিখে বিপি-৩৪ নম্বরে বর্ডার গার্ড পুলিশের তাউংপিউ চৌকি আক্রমণ করে, যেখানে ৯টি মর্টার শেল এসে পড়ে বাংলাদেশের মাটিতে। মিয়ানমার ও বাংলাদেশের মধ্যে বিদ্যমান আন্তরিক দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে অব্যাহতভাবে এ ধরনের হামলা চালিয়ে আসছে আরাকান আর্মি ও সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আরসা।
মহাপরিচালক বলেছেন, সীমান্ত নিকটবর্তী এলাকায় সর্বোচ্চ সতর্কতার মাধ্যমে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার পাশাপাশি মিয়ানমার সবসময় দ্বিপাক্ষিক চুক্তি ও আন্তর্জাতিক রীতি-নীতি মেনে চলে এবং বাংলাদেশসহ সব দেশের অখণ্ডতা ও সার্বভৌমত্বকে শ্রদ্ধা জানায়।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, সীমান্তে শান্ত পরিস্থিতি বজায় রাখতে বাংলাদেশের সঙ্গে মিয়ানমারের একসঙ্গে কাজ করবে বলে জানিয়েছেন মহাপরিচালক। এক্ষেত্রে বাংলাদেশের দিক থেকে সম্পূর্ণ ও একই ধরনের সহযোগিতার ওপর জোর দিয়েছেন তিনি।
মিয়ানমারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশের অভ্যন্তরে আরাকান আর্মি ও আরসা সন্ত্রাসীদের পরিখা ও ঘাঁটি থাকার তথ্য ৭ সেপ্টেম্বর ২০২২ তারিখে কূটনৈতিক মাধ্যমে বাংলাদেশকে জানানোর কথা স্মরণ করেছেন মহাপরিচালক। এক্ষেত্রে সরেজমিন তদন্ত এবং সেসব স্থাপনা ও ঘাঁটি ধ্বংসে প্রয়োজনীয় ও দ্রুত পদক্ষেপ নিতে মিয়ানমারের আহ্বান তিনি পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
বিভিন্ন ঘটনাবলির বাস্তব তথ্য দিয়ে একটি আন-অফিসিয়াল পেপার রাষ্ট্রদূতের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলেও জানায় মিয়ানমারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।