চলমান করোনা মহামারিতে বিশ্বজুড়ে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে। তবে আগের দিনের তুলনায় কমেছে নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যা। গত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন এক হাজার ২০০-র বেশি মানুষ। একই সময়ে ভাইরাসটিতে নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা নেমে এসেছে ৫ লাখের নিচে।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে জাপানে। অন্যদিকে দৈনিক প্রাণহানির তালিকায় শীর্ষে উঠে এসেছে ব্রাজিল। প্রাণহানির তালিকায় এরপরই রয়েছে জাপান, যুক্তরাষ্ট্র, ইতালি, ফ্রান্স ও ইরান। এতে বিশ্বব্যাপী করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৫৮ কোটি ৯৮ লাখের ঘর। অন্যদিকে মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৬৪ লাখ ৩৮ হাজার।
মঙ্গলবার (৯ আগস্ট) সকালে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত, মৃত্যু ও সুস্থতার হিসাব রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারস থেকে পাওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১ হাজার ২২৭ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে প্রায় সাড়ে চারশো। এতে বিশ্বজুড়ে মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৬৪ লাখ ৩৮ হাজার ২০ জনে।
একই সময়ের মধ্যে ভাইরাসটিতে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৪ লাখ ৮৪ হাজার ৫৪৭ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যা কমেছে ৭০ হাজারের বেশি। এতে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত ভাইরাসে আক্রান্ত মোট রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৮ কোটি ৯৮ লাখ ৯৫ হাজার ৭০১ জনে।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বে করোনায় সবচেয়ে বেশি সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে জাপানে। এই সময়ের মধ্যে দেশটিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ৯৮ হাজার ৫৬৩ জন এবং মারা গেছেন ১৫৪ জন। করোনা মহামারির শুরু থেকে পূর্ব এশিয়ার এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ১ কোটি ৪২ লাখ ৪৮ হাজার ৫৪১ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ৩৩ হাজার ৬৬৩ জন মারা গেছেন।
অন্যদিকে দৈনিক প্রাণহানির তালিকায় শীর্ষে উঠে এসেছে ব্রাজিল। লাতিন আমেরিকার এই দেশটি করোনায় আক্রান্তের দিক থেকে চতুর্থ ও মৃত্যুর সংখ্যায় তালিকার দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১৮৮ জন এবং নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন ১৭ হাজার ৪০৯ জন। অপরদিকে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৩ কোটি ৪০ লাখ ৩৫ হাজার ৭৮০ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৬ লাখ ৮০ হাজার ২৩৯ জনের।
যুক্তরাষ্ট্রে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৩৬ হাজার ৪০০ জন এবং মারা গেছেন ১২৭ জন। করোনাভাইরাসে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৯ কোটি ৪০ লাখ ১ হাজার ৮৮১ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১০ লাখ ৫৯ হাজার ১৪ জন মারা গেছেন।
ফ্রান্সে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৫ হাজার ৯০ জন এবং মারা গেছেন ১০৯ জন। করোনা মহামারির শুরু থেকে এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৩ কোটি ৪০ লাখ ৭৯ হাজার ৬৫৮ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১ লাখ ৫২ হাজার ৭১১ জন মারা গেছেন। একইসময়ে দক্ষিণ কোরিয়ায় নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৫৫ হাজার ২৯২ জন এবং মারা গেছেন ২৯ জন।
ইতালিতে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১১ হাজার ৯৭৫ জন এবং মারা গেছেন ১১৩ জন। করোনা মহামারির শুরু থেকে ইউরোপের এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ২ কোটি ১৩ লাখ ২৫ হাজার ৪০২ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১ লাখ ৭৩ হাজার ২৪৯ জন মারা গেছেন। একইসময়ে ডেনমার্কে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ২ হাজার ৬৩১ জন এবং মারা গেছেন ৫০ জন।
তাইওয়ানে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ২৬ জন এবং নতুন করে ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন ১৫ হাজার ৪১২ জন। এছাড়া মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৪৭ লাখ ৫৪ হাজার ২৬৮ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৯ হাজার ২৫৫ জনের। একইসময়ে ইরানে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৩ হাজার ৩৭৯ জন এবং মারা গেছেন ৫৪ জন।
রাশিয়ায় গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৪৫ জন এবং নতুন করে ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন ১৭ হাজার ৮৬২ জন। এছাড়া মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১ কোটি ৮৭ লাখ ৩০ হাজার ৫৬১ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৩ লাখ ৮২ হাজার ৭৮৬ জনের। একইসময়ে নিউজিল্যান্ডে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৪ হাজার ১৭৩ জন এবং মারা গেছেন ১৩ জন।
এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় অস্ট্রেলিয়ায় নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ২২ হাজার ২০১ জন এবং মারা গেছেন ১৪ জন। একইসময়ে থাইল্যান্ডে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১ হাজার ৮৪২ জন এবং মারা গেছেন ৩৪ জন। চিলিতে নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৭ হাজার ৫০৪ জন এবং মারা গেছেন ৩৫ জন।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এরপর ২০২০ সালের ১১ মার্চ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) করোনাকে ‘বৈশ্বিক মহামারি’ হিসেবে ঘোষণা করে। এর আগে একই বছরের ২০ জানুয়ারি বিশ্বজুড়ে জরুরি পরিস্থিতি ঘোষণা করে সংস্থাটি।