ওসমানীনগর (সিলেট): সিলেটের ওসমানীনগরে যুক্তরাজ্য প্রবাসী বাবা-ছেলের অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় গুরুতর আহত অবস্থায় ওই পরিবারের আরো তিন সদস্যকে হাসপাতালে ভর্তি করেছে স্থানীয়রা।
মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার তাজপুর ইউয়িনের রবিদাসস্থ স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান অরুনোদয় পাল ঝলকের বাসা থেকে তাদের উদ্ধার করা হয়।
মৃতরা হলেন উপজেলার দয়ামীর ইউনিয়নের বড় ধিরারাই গ্রামের যুক্তরাজ্য প্রবাসী রফিকুল ইসলাম (৫৫) ও ছেলে মাইকুল ইসলাম (১৬)।
আহতরা হলেন স্ত্রী হুসনে আরা বেগম (৫০), ছেলে ছাদিকুল ইসলাম (২২) ও মেয়ে সামিয়া বেগম (২০)। আহতদের মধ্যে দু’জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদের আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়েছে। তারা সবাই যুক্তরাজ্য প্রবাসী।
ঘটনার খবর পেয়ে সিলেটের পুলিশ সুপার ফরিদ উদ্দিন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নীলিমা রায়হানা, এএসপি সার্কেল রফিকুল ইসলাম, ওসমানীনগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এস এম মাইন উদ্দিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
জানা যায়, মঙ্গলবার সকাল ১০টায় ইউপি চেয়ারম্যান ঝলকের বাসায় ভাড়াটিয়া যুক্তরাজ্য প্রবাসী রফিকুল ইসলামের ঘরের দরজায় সকালের নাস্তার জন্য তার আত্মীয়রা কড়া নাড়েন। কোনো সাড়া শব্দ না পেয়ে সাড়ে ১০টার দিকে তারা স্থানীয় পুলিশে খবর দেন। পুলিশ রুমের দরজা ভেঙে ভেতর থেকে রফিকুল ইসলাম, স্ত্রী হুসনে আরা বেগম, ছেলে ছাদিকুল ইসলাম, মাইকুল ইসলাম ও মেয়ে সামিয়াকে এলোমেলো অবস্থায় একজনের উপর-আরেকজন অজ্ঞান হয়ে পড়ে থাকতে দেখেন।
তাৎক্ষণিক তাদেরকে নিকটস্থ একটি ক্লিনিকে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাদের সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন। হাসপাতালে নেয়ার পথে রফিকুল ইসলাম ও ছেলে মাইকুল ইসলাম মারা যান। এরপর গুরুতর আহত অবস্থায় আরো দু’জনকে হাসপাতালের আইসিইউতে স্থানাস্তর করেন। ধারণা করা হচ্ছে, বিষক্রিয়ায় তাদের মৃত্যু হতে পারে।
মৃতের ভায়েরা ভাই সাজ্জাদুর রহমান (৪৮) জানান, বাড়িতে থাকার ঘর না থাকায় চলতি মাসের ১৮ তারিখে প্রবাসী রফিকুল ইসলাম পরিবার নিয়ে রবিদাসস্থ বাসায় ভাড়াটিয়া হিসেবে উঠেন। এর আগে তারা ঢাকায় বড় ছেলে ছাদিকুল ইসলামের চিকিৎসা করান। তাদের কারো সাথে কোনো শত্রুতা নেই। গতরাতে পাশের কক্ষে তাদের সাথে তার শ্বশুড় আনফর আলী, শাশুড়ি, শ্যালক দিলোয়ার হোসেন (৩২), শ্যালকের স্ত্রী সুবা বেগম, মেয়ে সাবিলাও ছিলেন। সকালে শ্বশুর বাড়িতে গিয়ে তার আরেক মেয়েকে নিয়ে হাসপাতালে যান। তিনি দুর্ঘটনার খবর পেয়ে বাসায় এসেছেন।
স্থানীয় চেয়ারম্যান অরুনোদয় পাল ঝলক জানান, ‘আমি আইন শৃঙ্খলা কমিটির মিটিংয়ে ছিলাম। খবর পেয়ে পুলিশ নিয়ে বাসায় এসে দরজা ভেঙে তাদের অচেতন দেখতে পাই।’
সিলেটের পুলিশ সুপার ফরিদ উদ্দিন বলেন, একই বাসায় এক কক্ষে প্রবাসী পাঁচজন অচেতন ছিলেন। বাকি দু’কক্ষে তাদের পরিবারের লোকজন ছিল। ধারণা করা হচ্ছে, বিষক্রিয়ায় তাদের মুত্যু হতে পারে। পিবিআইয়ের লোকজন আসবে। আহতদের জ্ঞান ফিরলে এবং পরিবারের লোকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে বিস্তারিত জানা যাবে।