বানের পানিতে ‘ভেসে গেছে’ তাহিরপুরের মানুষের ঈদ আনন্দ

Slider সিলেট


এবার বন্যায় বিপর্যস্ত সুনামগঞ্জের হাওর অঞ্চল। বানের পানিতে বাড়িঘর তলিয়ে যাওয়ায় বহু মানুষকে ছুটতে হয়েছিল আশ্রয়কেন্দ্রে। তাদেরই একজন তাহিরপুর উপজেলার সদর ইউনিয়নের সূর্যরগাঁও গ্রামের বাসিন্দা দিনমজুর মোজাহিদ মিয়া। বানের পানি নেমে যাওয়ায় দুই সপ্তাহ পর আশ্রয়কেন্দ্র থেকে বাড়ি ফিরেছেন। এই সময়টিতে তার যে ভয়াবহ অভিজ্ঞতা হয়েছে কথায় কথায় তা তুলে ধরলেন তিনি।

মোজাহিদ মিয়া বলেন, ভয়াবহ বন্যায় নিজের জীবন বাঁচাতে আশ্রয়কেন্দ্রে গিয়েছিলাম গত ১৬ জুন রাতে। পানি কমায় চৌদ্দ দিন পর বাড়ি ফিরে দেখি ঘরসহ আমার সব শেষ।

শুধু মোজাহিদ নন, হাওরাঞ্চলের বহু কৃষক, শ্রমিক ও দিনমজুর মানুষের এখন এই অবস্থা। তার বলছেন, তাদের ঈদ আনন্দ আসলে বানের পানিতে ‘ভেসে গেছে’।

মোজাহিদ মিয়া বলেন,‘সামনে আসছে কোরবানি ঈদ। হাতে টাকাও নাই। এখন কাজও পাই না। কীভাবে যে তিনবেলা ডাল-ভাত খামু ভেবে পাই না। এর মধ্যে থাকার ঘরের দুরবস্থা। এখন ঘর করমু না খাবার জোগাড় করমু; না ঈদে পরিবারের সবার জন্য নতুন কাপড় কিনমু। কীভাবে যে কি করমু বুজতাছি না। গরিবের কোনো ঈদ নাই। বাইছা থাকাটাই এখন দায়।’

তাহিরপুর সদর ইউনিয়নের লক্ষীপুর গ্রামের মাকমুদা বিবি জানান, ‘ঈদে সন্তানদের নতুন কাপড় কিনে দিতে পারতাম না এই কষ্ট কারে কমু। কেউ শোনার নাই। প্রধানমন্ত্রী নাকি ঘর মেরামতের টাকা দিব শুনছি, অহন যদি ঘরটা ঠিক করতাম পারি, তাইলে ঘরে থাকতে পারমু; নাইলে বৃষ্টিতে ভিজেই থাকতে হবে।’

তাহিরপুর উপজেলা চেয়ারম্যান করুনা সিন্ধু চৌধুরী বাবুল জানান, উপজেলায় ৫০৮টি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের জন্য ৫০ লাখ ৮০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি পরিবার ঘর মেরামতের জন্য ১০ হাজার টাকা করে পাবে। উপজেলায় মোট ১ হাজার ৯৯৭টি পরিবার। এরমধ্যে উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নে ৪৫১টি, দক্ষিণ শ্রীপুর ৪০৬, বড়দল উত্তর ২১৫, বড়দল দক্ষিণ ২৯৮, বাদাঘাট ৮০, তাহিরপুর সদর ৩৯৪ ও বালিজুরীতে ১৫৩টি পরিবার।

তিনি বলেন, ‘আমি সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি উপজেলার প্রতিটি অসহায় মানুষের পাশে দাড়াঁতে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *