জাতিসঙ্ঘের নথি অনুযায়ী, এতদিন তুরস্কের ইংরেজি নাম ছিল টার্কি। কিন্তু আঙ্কারার আবেদনের মাধ্যমে নাম পরিবর্তন করে করা হলো টুর্কিয়ে। তুরস্ক ছাড়াও আরো কয়েকটি দেশ তাদের নাম পরিবর্তন হয়েছে। কিন্তু কেন?
মুরগির এক প্রজাতি হলো টার্কি। বলা হচ্ছে, এ কারণেই নিজের দেশের নাম পালটাতে চাচ্ছিলেন প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগান। আঙ্কারার আনুষ্ঠানিক আবেদনের পর জাতিসঙ্ঘ তুরস্কের নতুন নাম ঘোষণা করেছে। ভূ-রাজনীতিতে তুরস্ক যতই গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে, দেশের ইমেজ নিয়ে ততটাই সচেতন হচ্ছেন এরদোগান।
রাজনৈতিক বা ঐতিহাসিক কারণে, কিংবা শুধু ব্র্যান্ডিং করার জন্য এর আগেও আরো দেশ তাদের নাম পরিবর্তন করছে। তুরস্ক ছাড়াও আছে এমন আরো ছয়টি দেশ।
মাদক নিয়ে হল্যান্ডের যে ইমেজ তৈরি হয়েছিল, মূলত সেটি পরিবর্তনই ছিল ডাচ সরকারের মূল উদ্দেশ্য। তাই নতুন নাম হিসেবে তারা ‘দ্য নেদারল্যান্ডস’ বেছে নেয়। ২০২০ সাল থেকে পুরো ব্যবসায়ী সমাজ, পর্যটন বোর্ড ও কেন্দ্রীয় সরকারের সর্বত্র এই নাম চালু হয়। তবে কোথাও কোথাও এখনো হল্যান্ড নামটি রয়েছে।
আগে যুগোশ্লাভিয়ার অংশ ছিল মেসিডোনিয়া। ১৯৯১ সালে স্বাধীনতার পর থেকে রিপাব্লিক অফ মেসিডোনিয়া নামটি নিয়ে আপত্তি ছিল গ্রিসের। কারণ, গ্রিসের একটি অংশের নামও মেসিডোনিয়া। শেষ পর্যন্ত ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে রিপাবলিক অফ নর্থ মেসিডোনিয়া নামটি চূড়ান্ত করা হয়।
আগে নাম ছিল সোয়াজিল্যান্ড। ২০১৮ সালের এপ্রিল মাসে তা বদলে দেশের নাম এসওয়াতিনি রাখেন দেশটির রাজা সোয়াতি দ্য থার্ড। বলা হয়, সুইজারল্যান্ডের সাথে তার দেশের নামের মিল থাকাটা পছন্দ করছিলেন না তিনি। তাই তিনি দেশটির প্রাক-ঔপনিবেশিক আমলের নামে ফেরত যাবার সিদ্ধান্ত নেন।
নিছক ব্র্যান্ডিংয়ের সুবিধার জন্য ২০১৬ সালে চেক প্রজাতন্ত্রকে চেকিয়া নামে ডাকার সিদ্ধান্ত নেয় দেশটির সরকার। তারা বলেন, ফ্রেঞ্চ রিপাবলিককে যে যুক্তিতে ফ্রান্স নামে ডাকা হচ্ছে, সে যুক্তি চেকিয়ার ক্ষেত্রেও খাটে। নামটি ছোট, শুনতে ভালো। তবে এখনো নামটি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তেমন জনপ্রিয়তা পায়নি।
আটলান্টিক মহাসাগরের দ্বীপদেশটির অ্যাংলো নাম কেপ ভের্দে। দেশটির সরকার ২০১৩ সালে তাদের মূল পর্তুগিজ নাম কাবো ভের্দেতে ফেরত যাবার জন্য আবেদন করে। এ নামের অর্থ হলো সবুজ অন্তরীপ।
এসওয়াতিনির মতো ঔপনিবেশিক যোগসূত্র মুছতে শ্রীলঙ্কাও তাদের নাম পরিবর্তন করেছে। ব্রিটিশ শাসনমুক্ত হবার পর তারা সিলোন নাম মুছে শ্রীলঙ্কা করেছিল। তবে ২০১১ সাল পর্যন্ত নানা সরকারি নথিতে সিলোন নামটি রয়ে গিয়েছিল। পরে সব জায়গায় বদলালেও ’সিলোন চা’ কিন্তু এখনো পাওয়া যায়।
সূত্র : ডয়চে ভেলে