পশ্চিমা দেশগুলোতে ডিনারের টেবিলে মুরগির আইটেম একটি জনপ্রিয় খাবার। তবে যে হারে মুরগির মাংসের দাম বাড়ছে, আশঙ্কা করা হচ্ছে মুরগির দাম গরুর মাংসের কাছাকাছি যাবে।
যুক্তরাজ্যের সুপারমার্কেটের কর্তা ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, মুরগির মাংসের দাম সামনে আরও বাড়বে। এমনকি এর দাম গরুর মাংসের মতোই ব্যয়বহুল হতে পারে। গত দুই বছরে দেশটিতে প্রতি কেজি মুরগির মাংসে দাম বেড়েছে আড়াই থেকে ৩ ইউরো পর্যন্ত।
ব্রিটিশ পোল্ট্রি কাউন্সিলের বরাত দিয়ে জানা যায়, দেশটির মাংসের চাহিদার অর্ধেকই আসে ফার্মের মুরগি থেকে। প্রতি বছর সাতটি ধাপে প্রায় ২ লাখ ১৫ হাজার মুরগি সরবরাহ করে থাকে প্রতিষ্ঠানটি।
মুরগির দাম বাড়ার পেছনে দায়ী করা হচ্ছে ফিড ও মুরগির বাচ্চার দাম বৃদ্ধিকে। গত বছরেও যেখানে একটি মুরগির বাচ্চার দাম ছিল ৫ পেন্স (ব্রিটিশ মুদ্রা), এখন সেটি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪০ পেন্সে।
যুক্তরাজ্যের জাতীয় কৃষক ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মটারশেড বলেন, ‘ হ্যাচারি সংশ্লিষ্ট সবকিছুর দাম বেড়েছে। ফিড, বিদুৎ বিল, বাচ্চা ফোটানোর যন্ত্র, কর্মীদের বেতন, বাচ্চার দাম, পরিবহন ব্যয় ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক সবকিছুর দাম গত কয়েক বছরে বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। এতে করে স্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেছে মুরগির দাম।’
মুরগির খাবারের দাম বৃদ্ধি সম্পর্কে মেসি ব্রোস ফিড ফার্মের স্বত্বাধিকারী কিনান মেসি বলেন, ‘এর আগে ফিডের দাম এত বাড়েনি। মূলত ফিড তৈরি হয় গম, সয়াবিন ও সূর্যমুখী বীজ থেকে। রাশিয়া-ইউক্রেনের সংঘাত শুরু হওয়ার পর থেকে ইউরোপের বাজারে দেখা দিয়েছে গম সংকট। এতে করে শস্যের দাম বেড়ে গেছে। স্বাভাবিকভাবেই এর সঙ্গে তাল মেলাতে গিয়ে বেড়ে গেছে ফিডের দাম।’
কেবল ফিড নয়, পরিবহন খরচও বেড়েছে কয়েক গুণ। মূলত জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় যেসব ট্রাকে করে মুরগি পরিবহন করা হয়, তাদের দিতে হচ্ছে বাড়তি অর্থ। এছাড়া জাতীয় বেতন কাঠামো মানতে গেলে ট্রাকচালকদের বাৎসরিক বেতন দিতে হবে ৮০ হাজার ইউরো। এতে করে লাভ গুনতে চাইলে ফার্মের মালিকদের বাড়াতে হচ্ছে মুরগির দাম।
এদিকে বাজারে মুরগির দাম বেড়ে যাওয়ায় রেস্টুরেন্টগুলোও চিকেন-সংক্রান্ত খাবারের আইটেমের দাম বাড়িয়েছে। ইতোমধ্যে যুক্তরাজ্যের কেএফসি ও নানদোস তাদের চিকেন আইটেমে দামের পরিবর্তন এনেছে।