দেশ ছাড়লেন কোরীয় কূটনীতিক

Slider জাতীয়

67088_37

বহিষ্কার করা হয়েছে উত্তর কোরিয়ার কূটনীতিক সন ইয়াং ন্যামকে। বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে তাকে বহিষ্কারের জন্য ৭২ ঘণ্টার সময় বেধে দেয়া হয়েছিল গতকাল। তবে কোরীয় দূতাবাস পররাষ্ট্র দপ্তকে আনুষ্ঠানিভাবে জানিয়েছে, রোববার রাতেই ন্যামকে পিয়ং ইয়ং পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। গতকাল দুপুরে স্বর্ণ চোরাচালানে হাতেনাতে ধরা পড়া উত্তর কোরীয় কূটনীতিক ন্যামকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে বাংলাদেশ ছাড়তে নির্দেশ দেয়ার কথা জানায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। দিনের শুরুতে দেশটির ঢাকায় নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত সং মিয়ন  কে পররাষ্ট্র দপ্তরে তলব করে সরকারের ওই নির্দেশনার বিষয়টি জানিয়ে দেয়া হয়। অভিযুক্ত কোরীয় দূতাবাসের ফার্স্ট সেক্রেটারি (ইকোনমিক অ্যান্ড কমার্শিয়াল) সন ইয়াং ন্যাম (৫০)কে বেঁধে দেয়া সময়ের

 মধ্যে বিমানে তুলে দিয়ে পররাষ্ট্র দপ্তরে রিপোর্ট পাঠাতে বলা হয়েছিল। কোরীয় দূতাবাস সেই আনুষ্ঠানিকতাও সম্পন্ন করেছে বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল সূত্র গতরাতে মানবজমিনকে নিশ্‌িত করেছে।
অ্যাম্বাসেডর’স কার (দ-২০-০০১) -এ চড়ে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মন্ত্রণালয়ে প্রবেশ করেন উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত। দূতাবাসের ডেপুটি চিফ অব মিশন গাড়িটি ড্রাইভ করছিলেন। গাড়ির সমানে ফ্লাগ স্ট্যান্ড থাকলেও পতাকা ওড়ানো ছিল না। ছিল না কোন প্রটোকলও। ইস্ট এশিয়া অ্যান্ড প্যাসিফিক অনুবিভাগের একজন কর্মকর্তা রাষ্ট্রদূতকে রিসিভ করে মহাপরিচালক মো. জসিম উদ্দিনের কক্ষে নিয়ে যান। উত্তর কোরিয়াসহ ইস্ট এশিয়ার দেশগুলো দেখভালের দায়িত্বপ্রাপ্ত মহাপরিচালক সরকারের সিদ্ধান্তের বিষয়টি রাষ্ট্রদূতকে জানিয়ে দেন। সেখানে রাষ্ট্রদূত ও তার সঙ্গে থাকা ডিসিএম প্রায় সোয়া ঘণ্টা  বৈঠক করেন মহাপরিচালকের কক্ষে। পররাষ্ট্র দপ্তরের দায়িত্বশীল একাধিক কর্মকর্তা মানবজমিনকে বলেন, এবার সম্পূর্ণ ভিন্ন ফর্মে কোরীয় রাষ্ট্রদূতকে তলব করা হয়েছে। যে কোন তলবে বাংলাদেশের সিদ্ধান্ত সংক্রান্ত নোট ভারবাল হাতে ধরিয়ে দেয়া হলেও এবার তা হয়নি। রাষ্ট্রদূত ও তার মিশন প্রধানের সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠকে পুরো পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করা হয়। অভিযুক্ত কূটনীতিককে দেশ ত্যাগে ৩ দিন সময় দিয়ে সেই সময়ের মধ্যে তার বাংলাদেশ ত্যাগের বিষয়টি নিশ্চিত করে আনুষ্ঠানিকভাবে সরকারের কাছে রিপোর্ট করতে বলা হয়েছে। যেহেতু ওই কূটনীতিক চোরাচালানের মতো গুরুতর অপরাধে ধরা পড়েছেন সে জন্য তাকে নিজ দেশে ফেরার পর আইনের আওতায় নিয়ে আসারও আহ্বান জানানো হয়েছে। তার বিরুদ্ধে কোরীয় সরকার কি ব্যবস্থা নিলো সেটি বাংলাদেশকে জানাতে রাষ্ট্রদূতকে অনুরাধও করা হয়েছে।
পররাষ্ট্র বৃহস্পতিবার রাতে বিমানবন্দরে নামার পর কোরিয়ান কূটনীতিকের লাগেজ থেকে প্রায় সাড়ে ১৩ কোটি টাকার স্বর্ণ উদ্ধার করেন শুল্ক গোয়েন্দারা। সারারাত তাকে আটক রেখে দুপুরে দূতাবাসের জিম্মায় ছেড়ে দেয়া হয়। ঘটনার পর থেকে কূটনৈতিক পল্লীতে রীতিমতো তোলপাড় চলছে। অভিযুক্তকে কড়া নজরদারিতে রাখা হয়েছে। তাকে ছাড়িয়ে নিতে সেদিন দূতাবাসের যেসব কর্মকর্তা বিমানবন্দরে গিয়ে দেন-দরবার করেছিলেন তাদের বিষয়েও খোঁজ-খবর নেয়া হচ্ছে। স্বর্ণ চোরাচালানে একজন না  ‘সংঘবদ্ধ চক্র’ জড়িত তা খতিয়ে দেখছে সরকার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *