স্বামীর কড়া নজরদারিও ঠেকাতে পারেনি

Slider সারাদেশ

66123_b6

স্বামী মধ্যপ্রাচ্যে। ওমানে। বাড়িতে এক সন্তানকে নিয়ে একাই থাকেন সুন্দরী খালেদা আকতার। একদিন সন্ধ্যায় হঠাৎ তার মোবাইলে অচেনা এক যুবকের কল। অপর প্রান্ত থেকে হ্যালো বলে মুহূর্তেই মন ভুলিয়ে দিলো সে। এরপর খালেদা আকতারের সঙ্গে সেই যুবকের প্রতিদিন ফোন।

একদিন, দুইদিন। এভাবে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে প্রবাসীর স্ত্রী। শেষমেশ বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে পরপুরুষের হাত ধরে চলে গেছে খালেদা। এই ঘটনায় বউ ফেরত চেয়ে থানায় মামলা করেছে ওমান প্রবাসী স্বামী হামিদ উল্লাহ। চট্টগ্রামের রাউজানে ঘটে যাওয়া এই ঘটনা নিয়ে এলাকায় চলছে ব্যাপক আলোচনা।
স্থানীয় সূত্র জানায়, ঘটনাটি ঘটে গত বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার উরকিরচর ইউনিয়নের দেয়ানজিরঘাটের হাজী জাফরের বাড়িতে। এই ঘটনায় সদ্য ওমানফেরত স্বামী রাউজান থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। স্বামীর দাবি, তার স্ত্রী যাওয়ার সময় ৭ ভরি স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ ৫০ হাজার টাকা ও বিদেশ থেকে আনা মূল্যবান সামগ্রীসহ একটি লাগেজ নিয়ে যায়।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বাঁশখালী উপজেলার সরল ইউনিয়নের কাহারঘোনা গ্রামের গুণাবলীর বাড়ির মাওলানা মনির আহমেদের ছেলে ওমান প্রবাসী হামিদ উল্লাহ (৩৫)। ২০০৭ সালের ডিসেম্বরে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন একই ইউনিয়নের আশিগর পাড়ার অলি আহমেদের কন্যা খালেদা আকতার (২২)-এর সঙ্গে। তাদের সংসারে তানিম উল্লাহ নামের একটি ছেলে সন্তান জন্ম নেয়। তার বর্তমান বয়স ৬ বছর।
বিয়ের পর দীর্ঘদিন তাদের সংসার চলছিলো সুখে- শান্তিতে।  কিছুদিন পর স্বামী ওমান চলে গেলে পার্শ্ববর্তী এলাকা জলদি গ্রামের আব্দুস সালামের ছেলে রুবেল (২৫)-এর সঙ্গে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে প্রবাসী হামিদ উল্লাহর স্ত্রী খালেদা।
স্বামী বিদেশ থাকায় খালেদা মোবাইল ফোনে প্রায় সময় প্রেমিক রুবেলের সঙ্গে রাতের পর রাত মধুর আলাপে মগ্ন থাকতো। একদিন স্বামীর ভাবী গভীর রাতে তাদের এই অবৈধ ফোনালাপে বাধা দেয় এবং ঘটনাটি হামিদ উল্লাহকে জানায়। এই সময় সে বিদেশ থেকে ফোনে তার স্ত্রীকে বোঝানোর চেষ্টা করেন।
তখন সে ওয়াদা করে। বলে, ওই ছেলের সঙ্গে আর কখনও যোগাযোগ করবে না। কিন্তু কিছুদিন পর আবারও একই ধরনের ফোনালাপ শুরু করে গভীর রাতে।
গত রমজানে পুনরায় ওই ছেলের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করতে বললে পরদিন ঈদের খরচের জন্য পাঠানো টাকাসহ প্রেমিকের হাত ধরে খালেদা পালিয়ে যায়। তারপর অবুঝ ছেলে সন্তানের ভবিষ্যতের কথা ভেবে দীর্ঘ ২ মাস পর আবার সামাজিকভাবে খালেদাকে ঘরে  তোলে তার স্বামীর পরিবার। পরকীয়া ঠেকাতে সবাই সিদ্ধান্ত নেন, তাকে দূরে কোথাও পাঠিয়ে দেবে। তাই ৬ মাস আগে রাউজানের উরকিরচর ইউনিয়নের  দেওয়ানজির ঘাটের হাজী জাফর বিল্ডিংয়ে ভাড়া বাসা নিয়ে রাখেন স্বামী হামিদ উল্লাহ।
চলতি মাসের ২৬শে ফেব্রুয়ারি রাত ৯টায় স্বামী হামিদ একমাত্র ছেলে তানিমকে নিয়ে বাজারে যায়। বাজার  থেকে ফিরে বাসায় এসে দেখেন স্ত্রী খালেদা বাসায়  নেই। বিদেশ থেকে আনা ও ঘরের আলমিরায় রাখা ৭ ভরি স্বর্ণালঙ্কার ও ৫০ হাজার টাকা, বিদেশী লাগেজ কিছুই নেই। পরে বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পারেন স্ত্রী খালেদা তার প্রেমিক রুবেলের হাত ধরে পালিয়েছে।
স্থানীয় লোকজন জানায়, প্রবাসীর স্ত্রী খালেদা লাগেজসহ পালানোর সময় মিয়ারঘাটা এলাকার কিছু লোকজন আটকিয়ে জানতে চায় লাগেজ নিয়ে এত রাতে কোথায় যাও? তখন খালেদা বলে স্বামী অসুস্থ তাই মেডিক্যালে  দেখতে যাচ্ছি। তখন এলাকাবাসীর সন্দেহ হলে  মোবাইলে প্রেমিক রুবেলকে স্বামী সাজিয়ে খালেদা  ফোন ধরিয়ে দেন। অপর প্রান্ত থেকে রুবেল বলে, আমি অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে আছি। ও হাসপাতালে আসছে।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে প্রবাসী স্বামী হামিদ উল্লাহ বলেন, আমার সুন্দর সাজানো সংসার ভেঙে চুরমার হয়ে গেছে। প্রবাসী স্বামীদের সচেতন হয়ে দেশে রেখে যাওয়া স্ত্রীদের প্রতি নজরদারি বাড়াতে হবে। যা হওয়ার তাই হয়ে গেছে। সামাজিকভাবে আমি অনেকখানি হেয় হয়েছি। তিনি আরো বলেন, যে নারীর মনে এমন নিষিদ্ধ বাসনা থাকে সে কোনদিনই সুখী হতে পারবে না। আমার ছোট্ট ছেলেটার মুখের দিকে চেয়ে হলেও তার ফেরা উচিত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *