যথাযোগ্য মর্যাদায় ভাবগাম্ভীর্যের সাথে অমর একুশে ফেব্রুয়ারি শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালনের লক্ষ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়স্থ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। শহীদ মিনারের মূল বেদীসহ পুরো প্রাঙ্গন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করাসহ সৌন্দর্যবর্ধন ও নিরাপত্তা নিশ্চিতের কাজ এখন শেষ পর্যায়ে।
একুশে ফেব্রুয়ারিতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সর্বস্তরের জনসাধারণের শ্রদ্ধা নিবেদনের যাবতীয় ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পালন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। এ বছরও দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদা এবং সুষ্ঠুভাবে উদযাপনের লক্ষে গত ২৩ জানুয়ারি একটি কেন্দ্রীয় সমন্বয় কমিটিসহ ১৪টি উপ-কমিটি গঠন করা হয়। ইতোমধ্যে কেন্দ্রীয় সমন্বয় কমিটি ও উপ-কমিটিসমূহের যৌথ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এদিকে, প্রস্তুতির বিষয়ে জানাতে আজ শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ একটি সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেছে বলে জানা গেছে।
কোভিড-১৯ উদ্ভুত পরিস্থিতি বিবেচনায় এ বছরও কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আগতদের বাধ্যতামূলক করোনা টিকা সনদ সাথে রাখতে হবে ও মাস্ক পরিধান করতে হবে। এছাড়া, সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ও যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে প্রতিটি সংগঠন/প্রতিষ্ঠানের পক্ষ হতে সর্বোচ্চ পাঁচ জন প্রতিনিধি ও ব্যক্তিপর্যায়ে একসাথে সর্বোচ্চ দুই জন শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করতে পারবেন।
বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে সরেজমিনে দেখা যায়, রংমিস্ত্রিরা শহীদ মিনারের মূল বেদীসহ অন্যান্য অংশের ধোয়ামোছা ও নতুন করে রং করার কাজ করছেন। এছাড়াও প্রয়োজনীয় এলাকায় লাইটিং ও সিসিটিভি ক্যামেরা বসানোর কাজও চলছে। শহীদ মিনার এলাকায় বাঁশের বেস্টনী নির্মাণ করা হয়েছে। শহীদ মিনার অভিমূখী রাস্তাগুলোতে নজরদাবি’র জন্য ওয়াচ টাওয়ার স্থাপনের সরঞ্জাম আনা হয়েছে।
উল্লেখ্য, একুশে ফেব্রুয়ারির প্রথম প্রহর ১২টা ১ মিনিট থেকে দিবস উদযাপনের সূচনা হবে। সাধারণত শুরুতেই রাষ্ট্রপতি এবং পরে প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, শিক্ষক, ঢাকাস্থ বিভিন্ন দূতাবাসের কর্মকর্তা, রাজনৈতিক নেতা, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংগঠন এবং সর্বস্তরের জনগণ পর্যায়ক্রমে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
প্রস্তুতির বিষয়ে অমর একুশে উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. একেএম গোলাম রাব্বানী বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতা এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত পরিসরে এ বছর অমর একুশে পালনের জন্য রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। এ উপলক্ষ্যে আমরাও কার্যক্রম গ্রহণ করেছি। ১৪টি প্রস্তুতি কমিটি যার যার অবস্থান থেকে কাজ করছে। প্রস্তুতি সম্পন্ন হওয়ার পথে। এখন শেষ মুহূর্তে কোথাও বাড়তি প্রস্তুতির প্রয়োজন হলে তা দেখা হচ্ছে।
তিনি বলেন, প্রস্তুতি ও নিরাপত্তার বিষয়ে ইতোমধ্যে দু’টি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আরও একটি সভার পরিকল্পনা আছে। নিরাপত্তার নিশ্চিতের জন্য ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ-ডিএমপি ও র্যাব দায়িত্ব পালন করবে। আমরা কোভিড পরিস্থিতিকেও নিরাপত্তা ঝুঁকি হিসেবে নিচ্ছি। তাই ক্যাম্পাসে যারা আসবেন, তারা টিকা কার্ড নিয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে আসবেন। আগতদের দুইজন ও পাঁচজনের নিয়মটি মেনে চলতেও তিনি অনুরোধ জানান।