ঢাকা: বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বিশাল এলাকাজুড়ে চলছে অমর একুশে বইমেলা। করোনার শঙ্কা পাশ কাটিয়ে মেলায় আসছেন বইপ্রেমীরা।
অন্যান্য বছর মেলা শুরুর সপ্তাহখানেক পর থেকে জমতে থাকে বইমেলা। তবে এবার শুরুর দিন থেকেই বইমেলা অনেকটা জমজমাট।
করোনার কারণে এবার দুই সপ্তাহ পিছিয়ে শুরু হয়েছে মেলা। করোনার কারণে বইমেলায় আগতদের মানতে বলা হয়েছে স্বাস্থ্যবিধি। মাস্ক ছাড়া মেলায় প্রবেশও করা যাচ্ছে না। এমন অবস্থাতেই করোনার শঙ্কা কাটিয়ে ভিড় বাড়ছে বইমেলায়।
বৃহস্পতিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বইমেলার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশের গ্লাস টাওয়ার লেকের পাড় দিয়ে ভিড়ে হাঁটাই মুশকিল হয়ে পড়ে। সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে লোকসমাগম বাড়তে থাকে। মেলায় প্রবেশের প্রতিটি গেটে ছিল উপচেপড়া ভিড়।
রাজধানীর গুলশান থেকে আসা শাওন ও নূপুর বলেন, আমাদের এবার মেলায় আসার পরিকল্পনা ছিল না। তবে শেষ পর্যন্ত চলে এলাম। করোনার কারণে প্রথমে মেলায় আসা নিয়ে একটু শঙ্কিত ছিলাম। তবে এসে দেখলাম এখানে পরিবেশ সুন্দর এবং স্বাস্থ্যবিধিও মানা হচ্ছে।
বইমেলা প্রসঙ্গে কথা প্রকাশের ব্যবস্থাপক ইউনুছ আলী বলেন, আমাদের ধারণা ছিল করোনাকাল থাকায় গতবারের মতো এবারের মেলা জমবে না। তবে আশার বিষয় হলো, প্রথম দিন থেকেই অনেকটা জমে উঠেছে এবারের মেলা। পাশাপাশি শুরুর দিন থেকেই বেশ ভালো বেচাকানা হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে আশা করি, আমরা গতবারের ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে পারবো।
করোনা সংক্রমণ ফের বাড়ার কারণে বেশকিছু বিধিনিষেধ আরোপ করেছে সরকার। মেলা ঘুরে দেখা গেছে স্বাস্থ্যবিধি পরিপালনের বিষয়ে বার বার সতর্ক করা হচ্ছে দর্শনার্থীদের। প্রবেশ পথেও হ্যান্ড স্যানিটাইজার দেওয়া হচ্ছে আগতদের। আর মাস্ক ছাড়া প্রবেশ করা সম্পূর্ণ নিষেধ।
সপ্তাহের শেষ কর্মদিবস থাকায় কর্মব্যস্ত মানুষেরা অফিসের কাজ শেষ করেই ছুটে এসেছেন বইমেলায়। এদের মধ্যে কেউ এসেছেন একা, কেউ পরিবার-পরিজন নিয়ে আর কেউ কেউ এসেছেন সবান্ধব। তারা প্রিয় লেখকের বইয়ের খোঁজে ঘুরছেন সুবিশাল মেলা প্রাঙ্গণে। তবে মেলার তৃতীয় দিনে এসেও অনেক স্টলের কাজ এখনো সম্পন্ন না হওয়ায় একটু মনঃক্ষুণ্ন হয়েছেন অনেকেই।
বৃহস্পতিবার মেলার তৃতীয় দিন নতুন বই এসেছে ৪১টি। এরমধ্যে বাংলা একাডেমি থেকে আনোয়ারা সৈয়দ হকের কিশোর জীবনীগ্রন্থ ‘ছোটদের বঙ্গমাতা’, জনপ্রিয় প্রকাশনী থেকে শ্যামসুন্দর শিকদারের কাব্যগ্রন্থ ‘যুদ্ধ আসে যুদ্ধ যায়’, আগামী প্রকাশনী থেকে হাসনাত আবদুল হাইয়ের শিল্পকলা বিষয়ক গ্রন্থ ‘সবার জন্য নন্দনতত্ত্ব’, আনোয়ারা সৈয়দ হকের গবেষণামূলক প্রবন্ধগ্রন্থ ‘বঙ্গমাতা ও দুই কন্যার কথা’, কিংবদন্তি পাবলিকেশন থেকে ড. জালাল ফিরোজের গবেষণাগ্রন্থ ‘পার্লামেন্ট কীভাবে কাজ করে: বাংলাদেশের অভিজ্ঞতা’, বেহুলা বাংলা থেকে সোহরাব পাশার কাব্যগ্রন্থ ‘নিদ্রিত পাখির গান’, সপ্তবর্ণ থেকে মোহাম্মদ আব্দুল হালিমের ভ্রমণবিষয়ক বই ‘সুদান মিশনে মুজিববর্ষ’ উল্লেখযোগ্য।