করোনার বিধিনিষেধ কঠোরভাবে মানছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। গত মঙ্গলবার রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে গুলশানের বাসভবন ‘ফিরোজা’য় আসেন তিনি। এরপর গত ২৪ ঘণ্টায় ওই বাসায় বাইরের কেউ প্রবেশ করেননি। এমনকি তার আত্মীয়স্বজনদের কাউকেও এদিন দেখা যায়নি। শুধুমাত্র বিকেলে তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. মামুন শারীরিক খোঁজ নিতে ‘ফিরোজা’য় যান।
খালেদা জিয়ার বাসভবন সূত্র জানায়, অসুস্থ খালেদা জিয়ার চিকিৎসা বাসাতেই করা হচ্ছে। তার পরিচর্যার জন্য গৃহকর্মী ফাতেমা রয়েছেন। করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় তাকে হাসপাতাল থেকে বাসায় আনা হয়েছে। এমন অবস্থায় ফের করোনায় আক্রান্ত হলে তার জীবন সঙ্কট হতে পারে বলে মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকরা আগেই সতর্ক করেছেন। তাই চিকিৎসকদের পরামর্শে বাসায় আসা-যাওয়ার ক্ষেত্রে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। এর আগে দুইবার করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন খালেদা জিয়া।
সূত্র জানায়, খালেদা জিয়া হাসপাতাল থেকে বাসায় ফেরায় বুধবার বিকেলে অস্ট্রেলিয়া হাইকমিশন থেকে উপহারের বাক্স পাঠানো হয়। বিএনপির নেতাকর্মীসহ আরো অনেকে ব্যক্তি পর্যায়ে ফুল দিয়ে যাচ্ছেন বাসার মূল ফটকে। কিন্তু কাউকে বাসার ভেতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না।
৭৭ বছর বয়সী সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী অনেক বছর ধরে আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, চোখ ও হাটুর সমস্যাসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন। লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত খালেদা জিয়াকে গত ১৩ নভেম্বর তার বাসভবন ফিরোজায় রক্তবমির পরপরই এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তৃতীয় দফায় হাসপাতালে ভর্তির পর তার রক্ত বমিসহ রক্তক্ষরণ হতে থাকে। গুরুতর অসুস্থ খালেদা জিয়ার রক্তক্ষরণ আপাতত বন্ধ করতে সক্ষম হয়েছেন তার চিকিৎসকরা। তবে যে কোনো সময়ে এটা পুনরায় শুরু হতে পারে বলে আশঙ্কাও করেছেন তারা। গত ৯ জানুয়ারি তাকে সিসিইউ থেকে কেবিনে স্থানান্তর করা হয়। কিন্তু করোনার প্রকোপ বাড়ার কারণে হাসপাতাল থেকে বাসায় চিকিৎসার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয় তার মেডিকেল বোর্ড। এরপর মঙ্গলবার সন্ধ্যায় খালেদা জিয়াকে হাসপাতাল থেকে গুলশানের বাসায় নেওয়া হয়।