রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার তাহেরপুর পৌরসভার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে মোনাজাত করেন পৌর আওয়ামী লীগের ধর্মবিষয়ক সম্পাদক খন্দকার আবদুর রাজ্জাক। মোনাজাতে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের হত্যাকারীদের জান্নাত চাওয়ায় দল থেকে বহিষ্কার হয়েছেন।
শুক্রবার রাতে জরুরি সভা করে তাকে দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তাহেরপুর পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ইতোমধ্যে পৌর আওয়ামী লীগের মোনাজাতের ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ১৬ সেকেন্ডের ভাইরাল ভিডিওতে আওয়ামী লীগ নেতা আবদুর রাজ্জাক বলেন, ‘মাবুদ, জাতির জনক এবং তার পরিবারকে যারা হত্যা করেছেন, আল্লাহ তাদের সকলকে জান্নাত দান করে দিও আল্লাহ।’
এসময় পৌর মেয়র আবুল কালাম আজাদসহ উপস্থিত আওয়ামী লীগ নেতাদের ‘আমিন’ বলতে শোনা যায়।
তাহেরপুর পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ জানান, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু বাক্কার মৃধা মনসুর ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আমার স্বাক্ষরিত একটি পত্র জারির মাধ্যমে তাকে দল থেকে স্থায়ী বহিষ্কারের জন্য উপজেলা ও জেলা আওয়ামী লীগ বরাবর সুপারিশ পাঠানো হয়েছে।
তিনি বলেন, মহান বিজয় দিবস ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে ১৬ ডিসেম্বর ১২টা ০১ মিনিটে তাহেরপুর পৌর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে পৌরসভার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শহীদদের স্মরণে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, তার পরিবার, শহীদ জাতীয় চার নেতা এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।
মোনাজাত পরিচালনা করছিলেন পৌর আওয়ামী লীগের ধর্মবিষয়ক সম্পাদক খন্দকার আবদুর রাজ্জাক। মোনাজাতে তিনি ভুল করে বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের হত্যাকারীদের জান্নাত কামনা করেন, যা অনাকাঙ্ক্ষিত বলে উল্লেখ করেন পৌর আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক।
তিনি আরো জানান, ওই ঘটনার পরদিন পৌর আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে জরুরি সভা করে নির্বাহী কমিটি। সেখানে সর্বসম্মতিক্রমে খন্দকার আবদুর রাজ্জাককে দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। একইসাথে তাকে দল থেকে স্থায়ী বহিষ্কারের জন্য বাগমারা উপজেলা ও জেলা আওয়ামী লীগের কাছে সুপারিশ পাঠানো হয়েছে।
এ বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অনিল কুমার সরকার জানান, এ ঘটনাটি আমি লোকমুখে শুনেছি। তবে এখনো পুরো ঘটনা আমার জানা নেই। ওই নেতাকে বহিষ্কার করে একটি চিঠি আমাদের দেয়া হয়েছে। চিঠিটি দেখে আলোচনা সাপেক্ষে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।