অশালীন ও নারীর প্রতি চরম অবমাননাকর বক্তব্য দিয়ে তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রীর পদ হারানো ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ডা. মুরাদ হাসান রাতেই দেশ ছাড়ছেন।
কানাডা যাওয়ার উদ্দেশে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত আটটা ৫০ মিনিটে তিনি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ভিআইপি লাউঞ্জে প্রবেশ করেন বলে সূত্র নিশ্চিত করেছে।
সূত্র জানায়, রাত ১১টা ২০ মিনিটে এমিরেটস এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে তার দেশত্যাগের কথা রয়েছে। তিনি এখন বিমানবন্দরের ভিআইপি লাউঞ্জে অপেক্ষা করছেন।
এর আগে গতকাল (৮ ডিসেম্বর) ডা. মুরাদ কানাডা যাওয়ার উদ্দেশে একটি টিকিট কাটেন বলে সূত্রে জানা গেছে।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, প্রতিমন্ত্রী থাকা অবস্থায় মুরাদ হাসানের যে লাল পাসপোর্ট (বিশেষ পাসপোর্ট) ছিল, সেটি পদত্যাগের দিন (৭ ডিসেম্বর) নিজের হাতে নিয়ে গেছেন তিনি।
এদিকে ডা. মুরাদ হাসানের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।তার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে ইতোমধ্যে।এ ছাড়া তার বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিটও দায়ের হয়েছে।এমন পরিস্থিতির মুখে বিতর্কিত এই নেতা দেশত্যাগ করছেন।
প্রসঙ্গত, বিএনপির এক শীর্ষ নেতার মেয়েকে নিয়ে আপত্তিকর বক্তব্য দেওয়ার মধ্যেই ডা. মুরাদ হাসানের একটি অডিও রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়।
ঢাকাই সিনেমার নায়িকা মাহিয়া মাহির সঙ্গে ফোনালাপের ওই অডিওতে মুরাদ হাসানকে অশ্লীল কথাবার্তা ও নায়িকাকে ধর্ষণের হুমকি দিতে শোনা যায়। এ ঘটনায় দেশব্যাপী তোলপাড় সৃষ্টি হয়।
এতে বিব্রতকর অবস্থায় পড়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও সরকার। এরপর সোমবারই (৬ ডিসেম্বর) মুরাদকে পদত্যাগের নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মঙ্গলবার পদত্যাগপত্র জমা দেন মুরাদ। ওইদিন বিকালেই মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারির পর প্রকাশিত গেজেট বলা হয়েছে, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসানের পদত্যাগপত্র রাষ্ট্রপতি কর্তৃক গৃহীত হয়েছে।
মুরাদ হাসান জামালপুর-৪ (সরিষাবাড়ী উপজেলা) আসনের সংসদ সদস্য। তার বাবা প্রয়াত মতিউর রহমান তালুকদার জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন। বেশ কিছু দিন ধরে বিভিন্ন বিষয়ে বিতর্কিত বক্তব্য এবং কর্মকাণ্ডের কারণে মুরাদ সংবাদের শিরোনাম হয়েছেন। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রতিমন্ত্রীর কিছু অডিও-ভিডিও ছড়িয়ে পড়ায় দেশজুড়ে নিন্দা ও সমালোচনার ঝড় বইছে।
এদিকে জামালপুর আওয়ামী লীগ থেকে মুরাদ হাসানকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।চূড়ান্ত বহিষ্কারের জন্য কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের কাছে সুপারিশ করা হয়েছে।এ ছাড়া তার আওয়ামী লীগের প্রাথমিক সদস্যপদ বাতিলের বিষয়েও সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে দলের আগামী কার্যনির্বাহী সংসদীয় বৈঠকে।