যুক্তরাষ্ট্রের সেনাদের আফগানিস্তান ত্যাগ করাকে ‘অন্য আগ্রাসীদের জন্য শিক্ষা’ হিসেবে অভিহিত করেছে তালেবানরা। সোমবার দিবাগত মধ্যরাতের পর যুক্তরাষ্ট্রের সর্বশেষ সামরিক বিমান সেনা ও অন্যদের নিয়ে আফগানিস্তান ত্যাগ করে। এরপর আনন্দে মেতে ওঠে তালেবানরা। তারা একে পূর্ণাঙ্গ স্বাধীনতা হিসেবে উদযাপন করছে। এ বিজয়ে আফগানিস্তানের জনগণকে অভিনন্দন জানিয়েছে তারা। তালেবান মুখপাত্র জাবিহউল্লাহ মুজাহিদ বলেছেন, এই বিজয় আমাদের সবার। যুক্তরাষ্ট্রের সর্বশেষ সামরিক বিমান আফগানিস্তান ত্যাগ করার পর মঙ্গলবার নিজেদের বিজয়কে তারা ফাঁকা গুলি ছুড়ে উদযাপন করেছে। এর মধ্য দিয়ে দুই দশক পরে তারা আবার আফগানিস্তানের ক্ষমতায় ফিরে এলো।
রাতেই বিমানবন্দরে ছুটে যান তালেবান যোদ্ধারা। কাবুলের পুরো শহরে তারা আকাশে গুলি ছুড়ে বিজয় উদযাপন করেছেন। মঙ্গলবার বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেছেন জাবিহউল্লাহ মুজাহিদ। এ সময় তিনি আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষাকে অন্য আগ্রাসীদের জন্য শিক্ষণীয় বিষয় বলে মন্তব্য করেন। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি। এতে আরো বলা হয়েছে, আফগানিস্তান বিদেশি সেনামুক্ত হলেও নাগরিকরা তালেবানদের ভয়ে ভীত। কিন্তু বার বার তালেবানরা প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, তারা আগের তালেবান নেই। তারা হবে অধিক সহনশীল। সরকার হবে সবার অংশগ্রহণে। মুজাহিদ বলেন, আমরা যুক্তরাষ্ট্র এবং বিশ্বের সঙ্গে ভাল সম্পর্ক রাখতে চাই। তাদের সবার সঙ্গে আমরা সুস্থ কূটনৈতিক সম্পর্ককে স্বাগত জানাই। তিনি আরো প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন- তালেবান নিরাপত্তা রক্ষাকারীরা হবেন ভদ্র ও শান্ত।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ২০ বছরের যুদ্ধের ইতি টানার জন্য ৩১শে আগস্টকে সর্বশেষ সময়সীমা নির্ধারণ করে দিয়েছিলেন। এ সময়ের মধ্যে সব মার্কিন ও মিত্রবাহিনীকে প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত দেন তিনি। জি-৭সহ বিভিন্ন নেতারা এই সময়সীমা বৃদ্ধির আহ্বান জানালেও বাইডেন তাতে রাজি হননি। রাজি হয়নি তালেবানরাও। ওদিকে ২০ বছরের এই যুদ্ধে প্রাণ হারিয়েছেন কয়েক লাখ আফগান। মারা গেছে যুক্তরাষ্ট্রের কমপক্ষে ২৪০০ সদস্য। এমন প্রেক্ষাপটে ডেডলাইন শেষ হয়ে যাওয়ার আগেই যুক্তরাষ্ট্র তার সেনা প্রত্যাহার করে নিয়েছে। এর কারণও আছে। কাবুল বিমানবন্দরে তালেবানদের প্রতিপক্ষ ইসলামিক স্টেট (আইএস-কে) হামলা চালাতে পারে বলে হুমকি ছিল। তার প্রেক্ষিতেই আগেভাগে সেনাদের প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছে। এর আগে গত সপ্তাহে বৃহস্পতিবার বিমানবন্দরের বাইরে আইএস-কে’র আত্মঘাতী বোমা হামলায় ১৪ মার্কিন সেনা সহ কমপক্ষে ২০০ মানুষ নিহত হয়েছে।