সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনির খুনিদের আগামী ১০ই মার্চের মধ্যে গ্রেপ্তারের আলটিমেটাম দিয়েছে সাংবাদিক সমাজ। গতকাল ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সামনে মানববন্ধন ও সমাবেশে এ আলটিমেটাম দেয়া হয়। সমাবেশে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন বাদশা বলেছেন, আগামী ১০ই মার্চের মধ্যে এ হত্যাকা-ের কূলকিনারা না করতে পারলে ১১ই মার্চ এ চত্বরে সব সাংবাদিক সংগঠন নিয়ে প্রতিবাদ সমাবেশ হবে। ওই দিন নতুন করে কর্মসূচি দেয়া হবে।
গত ২০১২ সালের ১১ই ফেব্রুয়ারি পশ্চিম রাজাবাজারের বাড়া বাসা থেকে মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর সরোয়ার ও এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মেহেরুন রুনির লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। রাতের কোন একসময়ে অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা তাদের ছুরিকাঘাতে হত্যা করে। হত্যাকা-ের তিন বছর পেরিয়ে গেলেও এর তদন্ত শেষ হয়নি। খুনিদের গ্রেপ্তার তো দূরের কথা চিহ্নিত বা হত্যাকা-ের মোটিভ জানতে পারেনি তদন্ত সংশ্লিষ্টরা। থানা পুলিশ ও ডিবি পুলিশের পর উচ্চ আদালতের নির্দেশে বর্তমানে মামলাটি তদন্ত করছে র্যাব। সাগর-রুনি হত্যাকা-ের তৃতীয় বর্ষ উপলক্ষে গতকাল ডিআরইউ চত্বরে মানববন্ধন ও সমাবেশের আয়োজন করা হয়। এতে সাংবাদিকদের সবগুলো সংগঠনের নেতাকর্মী ও নিহত সাংবাদিক দম্পতির একমাত্র পুত্রসন্তানও উপস্থিত ছিল।
সমাবেশে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের একাংশের সভাপতি মনজুরুল আহসান বুলবুল বলেন, ‘আমরা পেশাদারিত্ব ও সাংগঠনিকভাবে সফল নই, ব্যর্থ হয়েছি। আমরা ব্যর্থ। এ পর্যন্ত কোন সাংবাদিক হত্যারই বিচার হয়নি। শুধু গৌতম দাসের হত্যা মামলায় নিম্ন আদালতে রায় হয়েছে। উচ্চ আদালতে কি হবে, তা জানি না।’ তিনি আরও বলেন, ‘সাগর-রুনি হত্যা মামলার তদন্তে যে আন্তরিকতার অভাব ছিল তার প্রমাণ হলো এফআইআরে ভুল তথ্য থাকা। সেখানে বাসার নম্বরটি পর্যন্ত সঠিকভাবে উল্লেখ করা হয়নি। সরকার সমর্থক সাংবাদিক ইউনিয়নের এ নেতা বলেন, তদন্ত সংস্থাগুলো ব্যর্থ হলে প্রথম দায়িত্ব হলো ব্যর্থতার কারণে তাদের চাকরিচ্যুত করা। সেটির কোন চিত্র আমরা দেখি নি। এ হত্যার বিচারের কথা আমাদের বারবার বলতে হবে। আমরা চুপ হয়ে গেলে যারা এ বিচার চায় না তারা জায়গাটি দখল করে নেবে।’
সমাবেশে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমেদ বলেন, কারা হত্যা করেছে? কেন করেছে? হত্যাকা-ের তৃতীয় বছরেও আমরা এর মোটিভ জানতে পারিনি। র্যাব ৩২ বার সময় নিয়েছে। এখনও ঘটনার কোন কূলকিনারা করতে পারেনি। প্রধানমন্ত্রী ‘বেডরুম পাহারা দিতে পারবেন না’ বলে যে বক্তব্য দিয়েছেন, সেটির পর তদন্ত সংশ্লিষ্টরা নিরাশ হয়ে গেছেন। লেখক ও কলামনিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, ‘সাগর-রুনি হত্যার আন্দোলন পৃথিবীতে নজির স্থাপন করেছে। হত্যার বিচারের দাবিতে মানুষ এভাবে আন্দোলন করে না। এমনটা কোথাও নেই।’ তিনি বলেন, ‘এ হত্যাকা-টি রহস্যজনক, সরকারের ভূমিকা আরও রহস্যজনক। এটি খুবই ঘৃণ্য।’ ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিউজে) একাংশের সভাপতি আবদুল হাই শিকদার বলেন, ‘স্বাধীনতার পর ২৫ সাংবাদিক হত্যা মামলার একটিরও তদন্তে অগ্রগতি হয়নি। সব ভেদাভেদ ভুলে সাংবাদিকরা এক হয়ে আন্দোলন করলে এসব ঘটনার বিচার হবে।’ আরেক অংশের সভাপতি আলতাফ মাহমুদ বলেন, ‘এমন যদি হয় দেশের বিচারব্যবস্থার চেহারা, তাহলে মানুষ কোথায় যাবে? খুনিরা জালের মধ্যে চলে এসেছে বলা হয়েছে, তাহলে কিভাবে জাল ছিঁড়ে কোথায় পালালো তারা? প্রশাসনের তদন্ত সংশ্লিষ্টদের জিজ্ঞাসাবাদ করা উচিত, কেন তারা এসব কথা বলেছেন।’ ডিআরইউর সাবেক সভাপতি শাহেদ চৌধুরী বলেন, ‘সাগর-রুনির এতিম সন্তান মেঘের দায়িত্ব নেয়ার কথা বলেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কিন্তু এত দিনেও তিনি মেঘের দায়িত্ব নিয়েছেন, এমন খবর নেই। এ হত্যার বিচার না হলে, প্রধানমন্ত্রী সাংবাদিকদের জন্য অন্যান্য যা করেছেন সব অর্জন ধ্বংস হয়ে যাবে।’ ডিইউজের সাবেক সভাপতি ওমর ফারুক বলেন, ‘তদন্ত সংশ্লিষ্টদের কেউ হয়তো এ ঘটনায় জড়িত। এজন্য তাদের রক্ষা করতে এভাবে এ মামলার তদন্তে কালক্ষেপণ করা হচ্ছে। যত প্রভাবশালী ব্যক্তি এ হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকুক একদিন বের হবে। নিহত সাংবাদিক মেহেরুন রুনির ভাই ও মামলার বাদী নওশের রোমান বলেন, ‘বিচারের আশা আমরা ছেড়ে দিয়েছি। তবুও চেষ্টা করছি এখনও। আজও (বুধবার) মানবাধিকার কমিশনে মেঘকে নিয়ে স্মারকলিপি দিয়েছি।
এদিকে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) একাংশের সভাপতি শওকত মাহমুদ বলেছেন, যেসব মন্ত্রী ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা সাংবাদিক সাগর-রুনি হত্যাকারীদের ধরার বিষযে সময় বেঁধে দিয়েছিলেন, তাদের গ্রেপ্তার করলেই প্রকৃত খুনিরা ধরা পড়বে। গতকাল দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে অপর এক সাংবাদিক সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন। শওকত মাহমুদ আরও বলেন, ‘সাগর-রুনি হত্যার পর খুনিদের গ্রেপ্তারে বিভিন্ন মন্ত্রী ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা ৪৮ ঘণ্টা, সাত দিন, দশ দিন সময় বেঁধে দিয়েছিলেন। তারা হয়তো জানেন কারা খুন করেছে। এজন্য তাদের গ্রেপ্তার করলেই তারা কিসের ভিত্তিতে এসব কথা বলেছিলেন, কে বাধা দিয়েছিল তা জানা যাবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘সাগর-রুনি হয়তো এমন কোন রিপোর্ট তৈরি করছিলেন যাতে সরকারের স্বার্থ বিঘ্নিত হয়। এজন্যই তাদের সরকারের কোন লোক খুন করেছে। এ কারণে এ সরকার ক্ষমতায় থাকলে কখনও সাগর-রুনি হত্যার বিচার পাওয়া যাবে না। তাই বর্তমান সরকারের পতন ঘটিয়ে সাগর-রুনি হত্যাকা-ের বিচার কার্যকর করতে হবে।
সমাবেশে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের একাংশের সভাপতি মনজুরুল আহসান বুলবুল বলেন, ‘আমরা পেশাদারিত্ব ও সাংগঠনিকভাবে সফল নই, ব্যর্থ হয়েছি। আমরা ব্যর্থ। এ পর্যন্ত কোন সাংবাদিক হত্যারই বিচার হয়নি। শুধু গৌতম দাসের হত্যা মামলায় নিম্ন আদালতে রায় হয়েছে। উচ্চ আদালতে কি হবে, তা জানি না।’ তিনি আরও বলেন, ‘সাগর-রুনি হত্যা মামলার তদন্তে যে আন্তরিকতার অভাব ছিল তার প্রমাণ হলো এফআইআরে ভুল তথ্য থাকা। সেখানে বাসার নম্বরটি পর্যন্ত সঠিকভাবে উল্লেখ করা হয়নি। সরকার সমর্থক সাংবাদিক ইউনিয়নের এ নেতা বলেন, তদন্ত সংস্থাগুলো ব্যর্থ হলে প্রথম দায়িত্ব হলো ব্যর্থতার কারণে তাদের চাকরিচ্যুত করা। সেটির কোন চিত্র আমরা দেখি নি। এ হত্যার বিচারের কথা আমাদের বারবার বলতে হবে। আমরা চুপ হয়ে গেলে যারা এ বিচার চায় না তারা জায়গাটি দখল করে নেবে।’
সমাবেশে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমেদ বলেন, কারা হত্যা করেছে? কেন করেছে? হত্যাকা-ের তৃতীয় বছরেও আমরা এর মোটিভ জানতে পারিনি। র্যাব ৩২ বার সময় নিয়েছে। এখনও ঘটনার কোন কূলকিনারা করতে পারেনি। প্রধানমন্ত্রী ‘বেডরুম পাহারা দিতে পারবেন না’ বলে যে বক্তব্য দিয়েছেন, সেটির পর তদন্ত সংশ্লিষ্টরা নিরাশ হয়ে গেছেন। লেখক ও কলামনিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, ‘সাগর-রুনি হত্যার আন্দোলন পৃথিবীতে নজির স্থাপন করেছে। হত্যার বিচারের দাবিতে মানুষ এভাবে আন্দোলন করে না। এমনটা কোথাও নেই।’ তিনি বলেন, ‘এ হত্যাকা-টি রহস্যজনক, সরকারের ভূমিকা আরও রহস্যজনক। এটি খুবই ঘৃণ্য।’ ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিউজে) একাংশের সভাপতি আবদুল হাই শিকদার বলেন, ‘স্বাধীনতার পর ২৫ সাংবাদিক হত্যা মামলার একটিরও তদন্তে অগ্রগতি হয়নি। সব ভেদাভেদ ভুলে সাংবাদিকরা এক হয়ে আন্দোলন করলে এসব ঘটনার বিচার হবে।’ আরেক অংশের সভাপতি আলতাফ মাহমুদ বলেন, ‘এমন যদি হয় দেশের বিচারব্যবস্থার চেহারা, তাহলে মানুষ কোথায় যাবে? খুনিরা জালের মধ্যে চলে এসেছে বলা হয়েছে, তাহলে কিভাবে জাল ছিঁড়ে কোথায় পালালো তারা? প্রশাসনের তদন্ত সংশ্লিষ্টদের জিজ্ঞাসাবাদ করা উচিত, কেন তারা এসব কথা বলেছেন।’ ডিআরইউর সাবেক সভাপতি শাহেদ চৌধুরী বলেন, ‘সাগর-রুনির এতিম সন্তান মেঘের দায়িত্ব নেয়ার কথা বলেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কিন্তু এত দিনেও তিনি মেঘের দায়িত্ব নিয়েছেন, এমন খবর নেই। এ হত্যার বিচার না হলে, প্রধানমন্ত্রী সাংবাদিকদের জন্য অন্যান্য যা করেছেন সব অর্জন ধ্বংস হয়ে যাবে।’ ডিইউজের সাবেক সভাপতি ওমর ফারুক বলেন, ‘তদন্ত সংশ্লিষ্টদের কেউ হয়তো এ ঘটনায় জড়িত। এজন্য তাদের রক্ষা করতে এভাবে এ মামলার তদন্তে কালক্ষেপণ করা হচ্ছে। যত প্রভাবশালী ব্যক্তি এ হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকুক একদিন বের হবে। নিহত সাংবাদিক মেহেরুন রুনির ভাই ও মামলার বাদী নওশের রোমান বলেন, ‘বিচারের আশা আমরা ছেড়ে দিয়েছি। তবুও চেষ্টা করছি এখনও। আজও (বুধবার) মানবাধিকার কমিশনে মেঘকে নিয়ে স্মারকলিপি দিয়েছি।
এদিকে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) একাংশের সভাপতি শওকত মাহমুদ বলেছেন, যেসব মন্ত্রী ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা সাংবাদিক সাগর-রুনি হত্যাকারীদের ধরার বিষযে সময় বেঁধে দিয়েছিলেন, তাদের গ্রেপ্তার করলেই প্রকৃত খুনিরা ধরা পড়বে। গতকাল দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে অপর এক সাংবাদিক সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন। শওকত মাহমুদ আরও বলেন, ‘সাগর-রুনি হত্যার পর খুনিদের গ্রেপ্তারে বিভিন্ন মন্ত্রী ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা ৪৮ ঘণ্টা, সাত দিন, দশ দিন সময় বেঁধে দিয়েছিলেন। তারা হয়তো জানেন কারা খুন করেছে। এজন্য তাদের গ্রেপ্তার করলেই তারা কিসের ভিত্তিতে এসব কথা বলেছিলেন, কে বাধা দিয়েছিল তা জানা যাবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘সাগর-রুনি হয়তো এমন কোন রিপোর্ট তৈরি করছিলেন যাতে সরকারের স্বার্থ বিঘ্নিত হয়। এজন্যই তাদের সরকারের কোন লোক খুন করেছে। এ কারণে এ সরকার ক্ষমতায় থাকলে কখনও সাগর-রুনি হত্যার বিচার পাওয়া যাবে না। তাই বর্তমান সরকারের পতন ঘটিয়ে সাগর-রুনি হত্যাকা-ের বিচার কার্যকর করতে হবে।