প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ধাক্কায় নাজেহাল ভারত। প্রতিদিন নতুন রেকর্ড গড়ছে দেশের দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা। গত ৯ দিন পরপর দেশের দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ৩ লাখেরও বেশি! যা কিনা বিশ্বরেকর্ড।
কেন্দ্রের উপদেষ্টা কমিটি বলছে, এখানেই শেষ নয়। আগামী সপ্তাহে আরও ভয়াবহ হবে দেশের করোনা পরিস্থিতি। কমিটি মনে করছে, দেশের পরিস্থিতি সবচেয়ে ভয়াবহ হতে চলেছে আগামী সপ্তাহেই। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম সংবাদ প্রতিদিনের খবরে এ তথ্য জানা গেছে।
খবরে বলা হয়, দেশের করোনা পরিস্থিতির দিকে নজর রাখতে এবং সরকারকে পরামর্শ দেওয়ার জন্য বিশেষজ্ঞদের একটি কমিটি গড়ে দিয়েছে কেন্দ্র। সেই কমিটি জানিয়েছে, মে মাসের ৩ থেকে ৫ তারিখের মধ্যে দেশের করোনা পরিস্থিতি সবচেয়ে ভয়াবহ হবে।
কিছুদিন আগে ওই উপদেষ্টা কমিটিই জানিয়েছিল, আগামী ৫ থেকে ১০ মে’র মধ্যে সবচেয়ে খারাপ হবে দেশের পরিস্থিতি। কিন্তু কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা কমিটির বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, ভাইরাসটি তাদের প্রত্যাশার তুলনায় অনেক দ্রুত ছড়িয়েছে। ওই উপদেষ্টা কমিটির প্রধান এম বিদ্যাসাগর বলেন, ‘আমাদের বিশ্বাস আগামী সপ্তাহেই দেশজুড়ে সর্বোচ্চ হবে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা।’
তবে কেন্দ্রের উপদেষ্টা কমিটির বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, করোনার দ্বিতীয় এই ঢেউ বেশি দিন স্থায়ী হবে না। শিগগিরই তা কমতে শুরু করবে। যা ভারতের জন্য স্বস্তির খবর। এম বিদ্যাসাগর সরকারকে দেওয়া রিপোর্টে জানিয়েছেন, ‘জুলাই বা আগস্ট পর্যন্ত পরিকল্পনা করে কোনো স্বাস্থ্য পরিকাঠামো তৈরি করা অর্থহীন। কারণ, এতদিন পর্যন্ত হয়তো এই ঢেউ থাকবেই না।’
সরকারের উদ্দেশে ওই কমিটির পরামর্শ, আগামী ৪ থেকে ৬ সপ্তাহের মধ্যে অদৃশ্য এই শত্রুর বিরুদ্ধে লড়তে হবে। তাই দীর্ঘকালীন পরিকল্পনা করে সময় নষ্ট করবেন না। আপনাদের সমস্যা এখন, তাই এটাকে মেটাতে হবে এখনই। এম বিদ্যাসাগর স্বীকার করে নিয়েছেন, এই মুহূর্তে দেশের করোনা আক্রান্তের সংখ্যা প্রথম ঢেউয়ের যেটা সবচেয়ে খারাপ সময় ছিল, তারও তিন গুণ। তবে, আসল সংখ্যাটা হয়তো হিসেবের ৫০ গুণ।
উল্লেখ্য, ভারতে গত ২৪ ঘণ্টায় আগের সব রেকর্ড ভেঙে করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন ৪ লাখ ১ হাজার ৯৯৩ জন। এই প্রথম দেশটিতে দৈনিক সংক্রমণ ৪ লাখ ছাড়াল। এদিন করোনায় মারা গেছেন ৩ হাজার ৫২৩ জন। গতকাল শুক্রবার দেশটিতে ১৯ লাখ ৪৫ হাজার ২৯৯টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। আজ শনিবার ভারতের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত করোনাভাইরাস বিষয়ক নিয়মিত বুলেটিনে সংক্রমণ ও মৃত্যুর এসব তথ্য জানানো হয়।