হাসানুজ্জামান হাসান,লালমনিরহাটঃ দূর থেকে দেখলে মনে হবে বিশাল আকারের হলুদ গালিচা বিছিয়ে রাখা হয়েছে। কাছে গেলে চোখে পড়ে হাজার হাজার সূর্যমুখী ফুল। ফুলগুলো বাতাসে দোল খেয়ে যেন আমন্ত্রণ জানাচ্ছে সৌন্দর্য উপভোগ করার। তাই দিনভর সূর্যমুখী বাগানে ভিড় করছে হাজারো মানুষ। কেউ ছবি তুলছে, কেউবা পরিবার পরিজন নিয়ে বাগানে এসে সৌন্দর্য উপভোগ করছে। সূর্যমুখী ফুলের মনোমুগ্ধকর এই দৃশ্যটি দেখা মিলেছে লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার কাকিনায়।
চার বিঘার জমিতে সূর্যমুখী ফুলের বাগান। যে দৃশ্য প্রকৃতিপ্রেমীদের মন জয় না করার কোনো উপায় নেই। যা দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে প্রকৃতিপ্রেমীরা ছুটে আসছেন এখানে। দুপুরের পর থেকেই সূর্যমুখী বাগানে নানা বয়সী মানুসের মিলন মেলায় পরিণত হয়। সূর্যমুখী ফুলের এ বাগানটি এখন সৌন্দর্যপ্রেমীদের একমাত্র দর্শনীয় স্থানে পরিণত হয়েছে। বর্তমানে হাজারো মানুষের ভিড়ে বাগানটির রক্ষণাবেক্ষণ করতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে কর্তৃপক্ষের।
লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার কাকিনা গ্রামের মহিমারঞ্জন স্মৃতি উচ্চ বিদ্যালয়ের পশ্চিমে স্থানীয় কৃষক খোরশেদ আলমের (৩৪) সূর্যমুখী ফুল বাগান দেখতে আসা দর্শনার্থী প্রিয়াঙ্কা রায় বলেন, সূর্যমুখী ফুলের বাগানের কথা শুনেই সবাইকে নিয়ে ছুটে আছি। সূর্যমুখীর বাগান প্রথম দেখলাম।
রবিউল গাজী নামের একজন দর্শনার্থী জানান, এই সূর্যমুখী ফুল বাগানটি মানুষের নজরে আসছে। তাই আমরাও সৌন্দর্য উপভোগ করতে সবাই মিলে দেখতে এসেছি। খুব ভালো লাগলো। পরিবেশটা খুব সুন্দর।
সূর্যমুখী ফুল চাষী খোরশেদ আলম জানান, এই প্রথম ৪ বিঘা জমিতে সূর্যমুখী চাষ করে বিপদে আছি। দিন দিন দর্শনার্থীদের সংখ্যা বাড়ছে। সারা দিন এখানে পড়ে থাকতে হয়। মানুষ সামাল দেয়া আমার জন্য অনেক কষ্টসাধ্য হয়ে দাঁড়াচ্ছে। তিন আরও জানান, আমার জমিতে ভাল সূর্যমুখী চাষ হয়েছে ঝড় বৃষ্টি না হলে আমা করি ভালদাম পাব।
কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সৈয়দা সিফাত জাহান জানান, সূর্যমুখী চাষে কৃষকদের উৎসাহ দেয়া হচ্ছে। এলাকায় সূর্যমুখী চাষ কম হওয়ায় মানুষের আকর্ষণ বেশি। তিনি আরও বলেন, কৃষকের ক্ষতি না করে এবং বাগান নষ্ট না করতে দর্শনার্থীদের প্রতি অনুরোধ জানান।
লালমনিরহাট জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. শামীম আশরাফ বলেন, জেলার ৫টি উপজেলায় প্রায় ৮০ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখী চাষ হয়েছে। তিনি আরও জানান, সূর্যমুখী চাষের জন্য কৃষকদের উৎসাহ, পরামর্শ ও বিভিন্নভাবে প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। আশা করি আগামীতে লালমনিরহাট জেলায় দ্বিগুন সূর্যমুখী চাষ হবে।