আশঙ্কা ছিল আগেই। কিন্তু আঘাতটা এসেছে আচমকা। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের মধ্যেও দুনিয়ায় একধরনের স্বস্তি ছিল। কারণ কিছু দেশে ভ্যাকসিন দেয়া শুরু হয়ে গেছে। আশা করা হচ্ছিল, মাস কয়েকের মধ্যেই করোনা কিছুটা হলেও নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে। কিন্তু এরইমধ্যে নতুন বৈশিষ্ট্যের এক করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে বিলাতে। বিশ্বের আরো দু’ একটি জায়গাতেও দেখা মিলেছে তার। আগের তুলনায় অত্যন্ত দ্রুত গতিতে ছড়ায় এ ভাইরাস।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বিশ্বব্যাপী দেখা দিয়েছে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা। অন্তত ৪০টি দেশ বৃটেনের সঙ্গে বিমান যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছে। বাড়ির পাশের ভারতও একই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সৌদি আরবতো সব দেশের সঙ্গেই বিমান যোগাযোগ স্থগিত করেছে।
এই যখন অবস্থা বাংলাদেশ তখন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে। কোনো সিদ্ধান্ত এখনো আসেনি। আদৌ আসবে কি না বলা মুশকিল। তবে পর্যবেক্ষকরা বলছেন, সিদ্ধান্ত নেয়া প্রয়োজন দ্রুত। কারণ ভুল করলে কাফফারা দিতে হতে পারে বড়। অনেকেই স্মরণ করছেন, ইতালি থেকে কীভাবে বাংলাদেশে করোনা প্রবেশ করে। সেসময় সঠিক ব্যবস্থাপনা থাকলে পরিস্থিতি হয়তো আরো নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হতো। অফিসিয়ালি বিশ্বের অনেক দেশের তুলনাতেই বাংলাদেশের অবস্থা ভালো। আবার অনেক দেশ অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে করোনার মোকাবিলা করছে। সেইসব দেশ নিয়ে আমাদের এখানে অবশ্য তেমন কথা হয় না। এখানে সবচেয়ে বেশি শোনা যায়, ‘আমরা ভালো আছি’।
এরইমধ্যে সরকারি হিসাবে আক্রান্ত ছাড়িয়েছে পাঁচ লাখ। মারা গেছেন সাত হাজারের বেশি। কিছু জরিপ ইঙ্গিত দিয়েছে আক্রান্তের সংখ্যা আসলে বহুগুণ বেশি। করোনা অনেকের দেহেই স্থায়ী ক্ষতির চিহ্ন রেখে যাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে প্রয়োজন সতর্কতা, প্রয়োজন স্বাস্থ্যবিধির প্রতি নজর দেয়া। টিকার ব্যাপারে সরকারের পক্ষ থেকে এরইমধ্যে আশ্বস্ত করা হয়েছে। যদিও ঠিক কবে কখন ভ্যাকসিন আসবে, জনসংখ্যার অন্তত ৮০ ভাগ এই ভ্যাকসিন পাবে কি না তা হলফ করে বলা কঠিন। যেমন এটা নিশ্চয়তা দেয়া প্রয়োজন যেন ভ্যাকসিন বন্টনের ক্ষেত্রে ন্যায়নীতি অনুসরণ করা হয়।
করোনা নিয়ে সারা পৃথিবীই কঠিন পথ অতিক্রম করছে। এই চলার পথে ভুল করলে মাশুল দিতে হয় অনেক বড়। যুক্তরাষ্ট্র যেমনটা দিচ্ছে বলেই মনে করেন অনেকে। তাই প্রয়োজন সতর্কতা, প্রয়োজন সঠিক সিদ্ধান্ত।